বাংলাদেশ ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বের কাছে ৪টি নতুন উদ্ভিদ প্রজাতি উন্মোচন করেছে

বাসস : বাংলাদেশ জাতীয় হার্বেরিয়াম ২০০৯ সাল থেকে ফ্লোরিস্টিক গবেষণার মাধ্যমে চারটি নতুন উদ্ভিদ প্রজাতি এবং উদ্ভিদের চারটি নতুন জাত আবিষ্কার করেছে, যেগুলো দেশের উদ্ভিদ গবেষণায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

বাসস-প্রাপ্ত একটি সরকারি নথি অনুযায়ী, নতুন আবিষ্কৃত উদ্ভিদের প্রজাতিগুলো হলো: কলোকেসিয়া হাসানি, অ্যালোকেসিয়া হারারগানজেনসিস, টাইফোনিয়াম ইলাটাম ও অ্যালোকেসিয়া সালারখানি। আর চারটি নতুন জাত হলো: র‌্যাপিডোফোরা ক্যালোফিলাম ভ্যারাইটি: ভাইওলেসিয়াস, কলোকেসিয়া ওরেসবিয়া, ভ্যারাইটি: স্টোলোনিফেরা, টাইফোনিয়াম ট্রিলোবেটাম, ভ্যারাইটি: ফালভাস ও কলোকেসিয়া ফ্যালাক্স, ভ্যারাইটি: পারপুরিয়া।

উদ্ভিদ শ্রেণিবিন্যাস গবেষণার জাতীয় গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম (বিএনএইচ), এবং শুষ্ক উদ্ভিদের নমুনা জাদুঘর দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঠ গবেষণা পরিচালনা করে উদ্ভিদের এ প্রজাতিগুলো আবিষ্কার করেছে।

গবেষণা সংস্থাটি ২০০৯ সাল থেকে ফ্লোরিস্টিক গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য ৩৪৬টি উদ্ভিদ প্রজাতি রেকর্ড এবং ৬৭টি উদ্ভিদ প্রজাতি পুনঃআবিষ্কার করেছে, যা দেশের উদ্ভিদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।

২০১৫-১৮ সময়কালে ‘সার্ভে অফ ভাস্কুলার ফ্লোরা অফ চিটাগাং অ্যান্ড দ্য চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস (এসভিএফসি)’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অধীনে জাতীয় হার্বেরিয়াম দেশের সবচেয়ে জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ অঞ্চল চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটিতে উদ্ভিদ জরিপ ও তথ্য সংগ্রহ পরিচালনা করে।

প্রকল্পের অধীনে ৪৫,১৪৬টি উদ্ভিদ নমুনা (ডুপ্লিকেটসহ ১,৫০,০০০ নমুনা) সংগ্রহ, সনাক্ত ও প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে এবং হার্বেরিয়াম শীট প্রস্তুত করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। অন্যদিকে এ সংগৃহীত উদ্ভিদ নমুনার উদ্ভিদ শ্রেণিবিন্যাস গবেষণার মাধ্যমে সনাক্তকরণের সময় বাংলাদেশে নতুন ৯২টি উদ্ভিদ প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে।

মাঠ জরিপের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে ৩৪৪টি উদ্ভিদ প্রজাতিকে বিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

প্রকল্পের অধীনে ২,৯১৬ টি ভাস্কুলার উদ্ভিদের সচিত্র বর্ণনা সম্বলিত তিনটি খ-ে প্রকাশিত ‘ভাস্কুলার ফ্লোরা অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড দ্য চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস’ শীর্ষক বইটি এদেশের উদ্ভিদবিদ্যার ইতিহাসে একটি মাইলফলক।

ছবিসহ সমস্ত উদ্ভিদ প্রজাতির তথ্যের একটি ই-ডাটাবেসও প্রস্তুত করা হয়েছে।

২০২০-২০২৩ সময়কালে বন বিভাগের অধীনে টেকসই বনায়ন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্প ‘উদ্ভিদের বাংলাদেশ জাতীয় লাল তালিকা এবং নির্বাচিত সংরক্ষিত এলাকায় উদ্ভিদের আক্রমণাত্মক এলিয়েন প্রজাতির (আইএএস) উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা কৌশল’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
আইইউসিএন বাংলাদেশের কারিগরি সহায়তায় প্রকল্পের আওতায় দেশের বন বাস্তুতন্ত্রের ১ হাজার ভাস্কুলার উদ্ভিদ প্রজাতির লাল তালিকা মূল্যায়ন এবং পাঁচটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এলিয়েন আক্রমণকারী উদ্ভিদ নিয়ন্ত্রণের কৌশল তৈরি করা হয়েছে।

মূল্যায়নের সময় আইইউসিএন রেড লিস্টের মানদ- অনুসারে আটটি উদ্ভিদ প্রজাতিকে বিলুপ্ত, পাঁচটি গুরুতরভাবে বিপন্ন, ১২৭টি বিপন্ন, ২৬২টি গুরুতরভাবে বিপন্ন, ৬৯টি হুমকির সম্মুখীন এবং ২৭১টি সর্বনি¤œ উদ্বেগের হিসাবে ঘোষণা করা হয়।

এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট ক্লাসিফিকেশন ফর এলিয়েন ট্যাক্সা (ইআইসিএটি) সূচকের মানদ- ব্যবহার করে সাতটি প্রধান আক্রমণাত্মক উদ্ভিদ প্রজাতিসহ মোট ১৪টি উদ্ভিদ প্রজাতিকে আক্রমণাত্মক উদ্ভিদ প্রজাতি হিসাবে চিহ্নিত করা হয় এবং তাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা তৈরি করা হয়।

জাতীয় হার্বেরিয়াম এই কর্মসূচির অধীনে ‘জাতীয় উদ্ভিদের লাল তালিকা’ (https://iucnredlist-bd.org/) নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে।

বর্তমানে, উদ্ভিদ গবেষণা সংস্থা ২০২১-২০২৪ সময়ের জন্য বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ভাস্কুলার প্ল্যান্ট স্পিশিজ সার্ভে (এসভিএফবিএস) শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার ব্যয় ১৬.১০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ- ১০টি জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

বাংলাদেশে সেরা ১০টি আইটি ট্রেনিং সেন্টার

বাংলাদেশ একটি ক্রমবর্ধমান তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) শিল্পের দেশ। এই শিল্পে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই চাহিদা পূরণের জন্য দেশে অনেক আইটি ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। এই সেন্টারগুলো বিভিন্ন ধরনের আইটি কোর্স প্রদান করে, যার মধ্যে রয়েছে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, ডেটা সায়েন্স, ইত্যাদি। বাংলাদেশের সেরা ১০টি আইটি ট্রেনিং সেন্টার হলো:

১. অর্ডিনারি আইটি
২. ক্রিয়েটিভ আইটি
৩. সফটটেক আইটি
৪. রেপটো
৫. MSB একাডেমি
৬. খালিদ ফারহান
৭. নিউ হরিজন
৮. CSLiT
৯. প্রযুক্তি টিম
১০. ডিভাইন আইটি

এই সেন্টারগুলোকে তাদের কোর্সের মান, অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক, এবং শিক্ষার্থীদের সাফল্যের হারের ভিত্তিতে শীর্ষস্থানীয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশে সেরা ১০টি আইটি ট্রেনিং সেন্টার

অর্ডিনারি আইটি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় আইটি ট্রেনিং সেন্টার। এটি বিভিন্ন ধরনের আইটি কোর্স প্রদান করে, যার মধ্যে রয়েছে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, ডেটা সায়েন্স, ইত্যাদি। অর্ডিনারি আইটি-এর কোর্সগুলো অত্যন্ত মানসম্পন্ন এবং অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হয়। অর্ডিনারি আইটি-এর শিক্ষার্থীরা দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি পেয়ে থাকে।

ক্রিয়েটিভ আইটি বাংলাদেশের আরেকটি জনপ্রিয় আইটি ট্রেনিং সেন্টার। এটি ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, এবং অন্যান্য ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স প্রদান করে। ক্রিয়েটিভ আইটি-এর কোর্সগুলো অত্যন্ত বাস্তবমুখী এবং শিক্ষার্থীদের চাকরির জন্য প্রস্তুত করে। ক্রিয়েটিভ আইটি-এর শিক্ষার্থীরা দেশ এবং বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি পেয়ে থাকে।

সফটটেক আইটি বাংলাদেশের অন্যতম পুরনো আইটি ট্রেনিং সেন্টার। এটি ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, এবং অন্যান্য আইটি কোর্স প্রদান করে। সফটটেক আইটি-এর কোর্সগুলো অত্যন্ত মানসম্পন্ন এবং অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হয়। সফটটেক আইটি-এর শিক্ষার্থীরা দেশ এবং বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি পেয়ে থাকে।

বাংলাদেশে আইটি ট্রেনিং নিতে চাইলে এই সেরা ১০টি আইটি ট্রেনিং সেন্টারগুলোর মধ্যে একটি বেছে নেওয়া যেতে পারে। এই সেন্টারগুলো শিক্ষার্থীদের আইটি ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনে এবং চাকরির জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশে সেরা ১০টি আইটি ট্রেনিং সেন্টার

এইচএসসি ২০২০ এর ফল প্রকাশ

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ চলমান বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব না হওয়া গত বছরের অর্থাৎ ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল প্রস্তুত, প্রকাশ ও সনদ বিতরণের ক্ষমতা শিক্ষা বোর্ডগুলোকে দিয়েছে সরকার।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে জারি করা তিনটি গেজেটের মাধ্যমে নয়টি সাধারণ বোর্ডের সঙ্গে মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়।

SSC New Short Syllabus 2021 PDF (Download Now)

গেজেটে বলা হয়েছে, চলমান বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব না হওয়ায় এ সংক্রান্ত আইনগুলো সংশোধন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল, এটা স্বপ্ন নয় বাস্তব: বশেফমুবিপ্রবি উপাচার্য

 

মঞ্জুরুল ইসলাম আকন্দ
বশেফমুবিপ্রবি প্রতিনিধি

জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( বশেফমুবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন,বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল, এটা স্বপ্ন নয় বাস্তব। দেশের মানুষ কীভাবে এর সুফল পাচ্ছে তা আমরা বৈশ্বিক সঙ্কট এই করোনাকালে বেশ ভালোভাবেই উপলব্দি করছি।
রোবটিক্স ক্লাব, বশেফমুবিপ্রবির উদ্যোগে রবিবার (০৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আয়োজিত এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যসেবা থেকে কোরবানির গরু কেনাসহ নানা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্লাটফর্মের ব্যবহার হচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়তই এর গুরুত্ব বেড়ে চলেছে। ওয়েবিনারে উপাচার্য বলেন, তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের মানুষের অধিক হারে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কাজ করছে। এর পেছনে অর্থাৎ স্থপতি হিসেবে রয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়।

‘তিনি দেশে একটি শক্তিশালী আইটি ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলা, ই-গভর্ন্যান্স প্রবর্তন ও বৃহৎ পরিসরে আইটি শিক্ষা চালুর মাধ্যমে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে একটি বিশদ ধারণাপত্র ও কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। যা বাস্তবায়ন হলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে বাংলাদেশও নেতৃত্ব পর্যায়ে থাকতে সক্ষম হবে।’

দেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, মর্ডান এজ তথা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে রোবটিক্স অ্যান্ড অ্যাডভান্স টেকনোলজিস যেমন- ইন্টারনেট অব থিংস, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এক্ষেত্রে নতুন ওই প্রযুক্তিতে খাপখাওয়াতে হলে শুধু টেকনিক্যাল নয়, নন-টেকনিক্যাল যারা রয়েছেন তাদেরও এ বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করা প্রয়োজন।

রোবটিক্স ক্লাব, বশেফমুবিপ্রবি এর সভাপতি ও সিএসই বিভাগের প্রভাষক জনাব মো. হুমায়ন কবির এর পরিচালনায় ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বশেফমুবিপ্রবি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার ভট্টাচার্য, রেজিস্ট্রার জনাব হামিদুর রহমান।

‘রোবটিক্স অ্যান্ড অ্যাডভান্সড টেকনোলজিস ইন মর্ডান এজ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তা ছিলেন জাপান- বাংলাদেশ রোবটিক্স অ্যান্ড অ্যাডভান্সড টেকনোলজি রিসার্চ সেন্টার এর প্রতিষ্ঠাতানও চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ফারহান ফেরদৌস।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান ও রোবটিক্স ক্লাবের উপদেষ্টা ড. মাহমুদুল আলম, সিএসই বিভাগের প্রভাষক জনাব সুজিত রায়, ইইই বিভাগের প্রভাষক মো. সিজার রহমান।

এতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ওয়েবিনার শেষে অংশগ্রহণকারীদের ই-সনদ প্রদান করা হয়।

জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ

মো. মজনুর রশিদ


আজ (২৪ অক্টোবর) জাতিসংঘ দিবস। ১৯৪৫ সালের এই দিনে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ ধ্বংস স্তূপের বিপরীতে শান্তি ও নিরাপত্তার মূল বার্তা নিয়ে গঠিত হয় জাতিসংঘ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯২০ সালে গঠিত লীগ অব নেশনস মূলত ১৯৩৯ সালে বিশ্ব শান্তি রক্ষার্থে ব্যর্থ হয়। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নামে পৃথিবী পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে।

যুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫ সালে। এই যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ দেখে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ হতবাক হয়ে পড়েন এবং বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার নতুন ভাবনায় তৎকালীন বিশ্ব নেতাদেরকে ভাবিয়ে তোলে।

সে ভাবনা সৃষ্টি করে ধ্বংসের পাথরের উপর দাঁড়িয়ে পৃথিবীর বুকে শান্তি, নিরাপত্তা, সৌহার্দ, স্বাধীনতা ও প্রগতির অঙ্গীকার নিয়ে আজকের জাতিসংঘ। জাতিসংঘ গঠনের সময় জাতিসংঘ সনদে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র ছিলো ৫১টি। বর্তমানে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ১৯৩টি। স্বাধীন জাতিসমূহের সর্ববৃহৎ সংগঠন হলও জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট জাতিসংঘের নামকরণের প্রস্তাব করেন। ২৪ অক্টোবর ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ সনদ কার্যকর হয়। সেই থেকে প্রতি বছর বিশ্বের জাতি রাষ্ট্রসমূহ ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস পালন করে থাকে।

জাতিসংঘ প্রধান ৬টি অঙ্গসংগঠনের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং এর ১৬টি বিশেষায়িত সংস্থা রয়েছে। জাতিসংঘের অফিসিয়াল বা দাপ্তরিক ভাষা ৬টি। বর্তমানে বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো কর্তৃক ১৯৯৯ সালে বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।

জাতিসংঘের প্রধান অঙ্গসংগঠনগুলো হলো-
১. সাধারণ পরিষদ
২. নিরাপত্তা পরিষদ
৩. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ
৪. অছি পরিষদ
৫. আন্তর্জাতিক আদালত
৬. সচিবালয়।

জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত সকল দেশ সাধারণ পরিষদের সদস্য। সাধারণ পরিষদে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর একটি করে ভোটের ক্ষমতা রয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদ জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্র ১৫টি। যার মধ্যে স্থায়ী সদস্য ৫টি রাষ্ট্র (যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন)। এদের সাংবিধানিক অধিকার ভেটো প্রদানের ক্ষমতা রয়েছে। ঠবঃড় অর্থ- ‘আমি মানি না’ এবং অস্থায়ী ১০টি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘে কোনো প্রস্তাব পাশ বা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থায়ী ৫ টি দেশ এবং অস্থায়ী ৪ দেশসহ মোট ৯টি দেশের সমর্থনের প্রয়োজন পড়ে। তবে স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের কেউ ভেটো দিলে সেই প্রস্তাব পাস বা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। অছি পরিষদের- মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে নাউরু, নিউগিনি, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, ক্যামেরুন, পালাউ, অছি পরিষদভুক্ত একমাত্র অঞ্চল আইসল্যান্ড।

১৯৯৪ সালের পর থেকে সংস্থাটি স্থগিত রয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালত ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধ অপরাধী ও মানবতা বিরোধী অপরাধের শাস্তি এই আদালতের মাধ্যমেই সম্পন্ন করা হয়েছে। এই আদালতের বিচারের মাধ্যমে অনেক যুদ্ধ অপরাধীর বিচার শেষে ফাঁসিও কার্যকর করা হয়েছে। জাতিসংঘ সচিবালয় হলো জাতিসংঘের সকল কর্মকাণ্ডের মূল। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এর সদর দপ্তর অবস্থিত। ইউরোপীয় সচিবালয় অবস্থিত জেনেভায়। জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব ট্রিগভেলী, নরওয়ে এবং বর্তমান মহাসচিব হলেন আন্তোনিও গুতেরেস, পর্তুগাল। জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র দুইটি – ফিলিস্তিন এবং ভ্যাটিকান সিটি।

জাতিসংঘের অন্য অঙ্গসংগঠনগুলো সদস্য রাষ্ট্র ছাড়াও অন্যান্য দেশে নিজেদের সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নানারকম সমস্যার সমাধান, সুবিধা বৃদ্ধি, উন্নত জীবনমান গঠন এবং নিরাপত্তা দানে এ প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে থাকে। ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘ মানব কল্যাণমূলক কর্মসূচি- ডব্লিউএফপি (প্রধান কার্যালয়- রোম, ইতালি) এ বছর (২০২০ সাল) শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করে। যুদ্ধবিগ্রহ, সংঘাত, খরা, ও অনাহারে থাকা মানুষদের জন্য খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির স্বীকৃতি স্বরূপ বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মানের নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করে এই সংস্থাটি। এছাড়াও ইউএনএইচসিআর- ১৯৫৪ ও ১৯৮১ সালে, ইউনেস্কো- ১৯৬৫ সালে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী- ১৯৮৮ সালে, মহাসচিব কফি আনান (ঘানা) ও জাতিসংঘ ২০০১ সালে ও আপিসিসি- ২০০৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করে।

জাতিসংঘের সাথে বাংলাদেশের একটা গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। ১৯৭৪ সালে ১৩৬তম রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে বাংলাদেশ। যদিও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ প্রথম সদস্য পদ লাভ করে ১৯৭২ সালে কমনওয়েলথ-এর। জাতিসংঘের মাধ্যমে মায়ানমারের সাথে বঙ্গোপসাগর বিজয় ছিল বাংলাদেশের বড় অর্জন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা অর্জনের পূর্ব থেকেই জাতিসংঘের সাথে বাংলাদেশের স্বাধিকার আদায়ের সম্পর্ক তৈরি হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে জাতিসংঘের ভূমিকা ছিলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের শক্তিশালী ভিত্তিমূল। মেহেরপুর জেলায় গঠিত স্বাধীন দেশের প্রথম সরকার মুজিবনগর সরকারের (শপথ গ্রহণ, ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ সাল) প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের পক্ষে জাতিসংঘে শক্তিশালী অবস্থান সৃষ্টি করে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ভারতসহ আরও কিছু বন্ধু রাষ্ট্র।

২০ অক্টোবর ১৯৭১ সালে জাতিসংঘের মহাসচিব পূর্ব পাকিস্তান সম্পর্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে পত্র লিখে বলেন, ‘আপনারা যদি বিশ্বাস করেন যে, আমার দফতর আপনাদের উপকারে আসবে তাহলে আমি আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবো।থ এই যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় অনিবার্য ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিভক্তি ঠেকানো অসম্ভব, এই দুর্ভাবনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারের মস্ত শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে ওঠে।

১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান ভারত আক্রমণ করে এবং ৪ ডিসেম্বর ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করে। উভয় দেশ জাতিসংঘের মহাসচিবের নিকট আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ এনে পত্র পাঠান। মহাসচিব ৪ ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদে প্রতিবেদন পেশ করেন। নিরাপত্তা পরিষদের ৯ সদস্য রাষ্ট্রের অনুরোধে ৪ ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদে জরুরী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

সোভিয়েত রাশিয়া ও পোল্যান্ড দাবি জানায় যে, বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে তাদের দেশের বক্তব্য প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে হবে। আমেরিকা ও চীন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। ফলে প্রস্তাব ভোটে দেওয়া হয় এবং যেকোনো উপায়ে যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ১১ ভোট এবং ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য ভোটদানে বিরত থাকে। রাশিয়া ও পোল্যান্ড বিপক্ষে ভোট দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেটো প্রয়োগ করায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রক্ষা পায়। মুক্তিকামী জাতির নিকট এমন পরম বন্ধু আর কে হতে পারে। জাতিসংঘের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নের ˜ব্যর্থহীন সমর্থন মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক বিজয় অর্জন করা সম্ভবপর হয়। জাতিসংঘের তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের স্থায়ী প্রতিনিধি ইয়াকফ মালিক ও সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিযুদ্ধকে জাতীয় মুক্তি আন্দোলন হিসেবে অবহিত করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের মধ্য দিয়ে ইয়াকফ মালিক ও সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন অকৃত্রিম বন্ধু। বর্তমান রাশিয়া বাংলাদেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। বন্ধুত্বের এমন বন্ধন চিরকালের। জাতিসংঘ সে বন্ধনের আতুর ঘর।

বিশ্ব শান্তি ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে জাতিসংঘের ইতিবাচক ভূমিকার পাশাপাশি বহু নেতিবাচক ভূমিকাও রয়েছে। অধিকিন্তু জাতিসংঘ বর্তমানে অনেকটা পুতুল সংগঠনে পরিণত হয়েছে। কয়েকটি দেশের ইচ্ছা আর অনিচ্ছার সংগঠনে পরিণত হয়েছে বিশ্ব সংগঠনটি। এছাড়াও বহু দেশের স্বাধীনতা ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের ভূমিকা অত্যন্ত দুঃখজনক। সাম্প্রতিক বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সমস্যার ইতিবাচক কোনো সমাধান আনতে জাতিসংঘ পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এছাড়াও, বহু বছর ধরে ফিলিস্তিনদের ওপর ইযরাইল রাষ্ট্রের নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, বাড়ি দখল, জমি দখল, গুম, অত্যাচার প্রভৃতি বন্ধে জাতিসংঘ পুরোপুরিই ব্যর্থ ও ক্ষমতা রাষ্ট্রের নিকট কুক্ষিগত।

মধ্য প্রাচ্যের অস্থিরতা এবং সংঘাত প্রশোমনে জাতি রাষ্ট্রসমূহের ভূমিকা বিতর্কিত ও হিংসাক্তক। ইউক্রেন, সিরিয়া, মিশর, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, কাশ্মীর, লাদাখ, ফকল্যান্ড দ্বীপ, লেবানন, উপজাতি ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর সুরক্ষা, আর্মেনিয়া- আজারবাইজান সমস্যা, আফ্রিকার ক্ষুধা নিবারণ, জঙ্গি তৎপরতা, উগ্রবাদের উত্থান, মেক্সিকো, কিউবা, তিব্বত, পরিবেশ বিপর্যয়, কোরিয়া ও ইরান সমস্যা, পারমানবিক হুমকি, রাশিয়া- আমেরিকার মৌন সংঘাত প্রভৃতি বিষয় সমূহে জাতিসংঘের ভূমিকা অকার্যকর হিসেবে প্রমাণ মিলেছে বাস্তবে। এসব বিষয়ের যৌক্তিক সমাধান ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ক্ষেত্রসমূহে জাতিসংঘের ভূমিকা বিশ্ববাসী প্রত্যাশা করে।

মো. মজনুর রশিদ
চেয়ারম্যান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সম্পাদক, বাংলাদেশ স্কাউটস গোপালগঞ্জ জেলা রোভার।

শিক্ষার্থীরা সরকারবিরোধী পোস্ট দিতে পারবে না, তাহলে ছাত্র রাজনীতি কেন?

কামরুল হাসান মামুন


ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জোরালো হচ্ছে। কিন্তু এই প্রতিবাদীদের মাঝেও আমি দুটো পক্ষ দেখছি। এর একটি পক্ষ ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে কিন্তু তাদের প্রতিবাদ যেন কেবল দুজন (আসলে একজন) মানুষের বিরুদ্ধে।

এই পক্ষটি আবার একই সাথে অন্য প্রতিবাদী অংশটিকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে যাদের সাথে আবার আমাদের পুলিশ বাহিনীও আছে। কয়েকদিন আগে আমরা দেখেছি কয়েকজন ছাত্র যখন ধর্ষণের বিরুদ্ধে গ্রাফিতি লিখছিল তখন পুলিশ তাদের ভ্যানে থানায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেছে। বড় আজব দেশ বাংলাদেশ।

গতকাল আবার একটি প্রজ্ঞাপন দেখলাম যে সরকারবিরোধী বা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে এমন পোস্ট লাইক বা শেয়ার দিতে বারণ করা হয়েছে কলেজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তাহলে ছাত্র রাজনীতি কেন? ছাত্র রাজনীতি কি কেবল কেবল সরকারকে প্রটেকশন দেওয়ার জন্য লাঠিয়াল হিসাবে কাজ করা?

কেবল সরকারের গুণগান জন্য? ঠিক যেমন উপরের তথাকথিত ধর্ষণবিরোধী যে অংশটি সীমিত পরিসরে লোক দেখানো প্রতিবাদ করে আর আসলে ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদকে থামিয়ে দেয় সেইরকম কাজের জন্য ছাত্র রাজনীতি?

কোথাও কেউ অন্যায় করলে বা সরকারও যদি অন্যায় করে কেন লিখবেনা? কেন প্রতিবাদ করবে না? ঐতিহাসিকভাবেই সমাজ বা দেশের সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করা ছাত্র শিক্ষকদের নৈতিক দায়িত্ব। সেই প্রতিবাদ দলান্ধ হয়ে নয়। শিক্ষকরা হলো মানুষ ও জাতি গড়ার কারিগর যারা সমাজের গতি প্রকৃতি অন্য যেকোন প্রফেশনের মানুষের চেয়ে বেশি বুঝে বা বোঝা উচিত। বুঝে বলেই প্রতিবাদ করা তাদের নৈতিক দায়িত্ব।

এইজন্যই সত্যজিৎ রায় তার হীরক রাজার দেশেতে একজন শিক্ষককে সমাজ বিশুদ্ধিকরণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সত্যজিৎ রায়ের এই ছবিটির একটি বিশেষ দিক হচ্ছে কেবল একটি চরিত্র ছাড়া মূল শিল্পীদের সকল সংলাপ ছড়ার আকারে করা হয়েছে। যেই একটি চরিত্র ছড়ার ভাষায় কথা বলেননি তিনি হলেন শিক্ষক। এ দ্বারা বোঝানো হয়েছে একমাত্র শিক্ষক মুক্ত চিন্তার অধিকারী, বাদবাকি সবার চিন্তাই নির্দিষ্ট পরিসরে আবদ্ধ।

আর শিক্ষকরা যখন সত্যিকার অর্থেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে তখন কি তাদের ছাত্ররা বসে থাকবে? তাহলে কেন ছাত্র-শিক্ষক লিখবেনা? কেন অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে না? বস্তুনিষ্ঠ যে কোনকিছু নিয়ে এরা দেয়ালে লিখবে, গ্রাফিতি লিখবে, প্ল্যাকার্ড লিখবে, পোস্টারে লিখবে, পত্রিকায় লিখবে, কার্টুন আঁকবে, রম্য গল্প লিখবে ফেসবুবে লিখবে, টুইটারে লিখবে, বই লিখবে।

১৯৫২ সালের ছাত্র শিক্ষকদের যদি প্রতিবাদ করতে না দিত? ১৯৭১ সালে এ পুলিশ-সিপাহিরা যদি সরকারী কর্মচারী বিধি মেনে চলতো? ছাত্র-জনতা যদি সুবোধ বালকের মতো আচরন করত এবং রুখে না দাড়াতো তাইলে কি আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ হতোনা। এই সরকার যখন বিএনপি জামাত সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছিল তখন কি ছাত্র শিক্ষক প্রতিবাদ করেনি? এমন কি সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারাও সরকারি চাকুরীবিধি ভঙ্গ করে জনতার মঞ্চে গিয়েছিল।

একইভাবে বঙ্গবন্ধু যদি তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের অন্যায় নির্দেশনা ও প্রজ্ঞাপনগুলো নিরীহ মানুষ হিসেবে মেনে চলতেন তাহলেও এই বাংলার জন্ম হতোনা । আমার সত্যিই অবাক লাগে এই ভেবে যে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও এইরকম বাক স্বাধীনতা হরণকারী প্রজ্ঞাপন বা নির্দেশনা কেমন করে পয়দা হয়? সরকার কি চাচ্ছে যে দেশে একটি ক্যাস্ট্রেটেড বলদ প্রজন্ম তৈরী হোক যাদের একমাত্র কাজ হবে সরকারের গুণগান করা আর তাদের প্রটেকশন দেওয়া?

এই সরকার নাকি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তেছে! What a joke!

ফেসবুক থেকে…


লেখক
কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ।

ভুলে গেলে চলবে না আমরাই বাংলাদেশ

মোঃ জাকারিয়া আল রাব্বি


কিছু কথা না বললেই নয় ধর্ষকের কোন দল নেই, কোন ধর্ম নেই, কোন আদর্শও নেই, ধর্ষক শুধু মাত্রই ধর্ষক। কারন তারা যদি কোন দল, ধর্ম কিংবা আদর্শ ধারণ করতো তাহলে তারা ধর্ষক হতো না।

কোন দল, ধর্ম বা আদর্শেই ধর্ষণে উদ্বুদ্ধ করা হয়নি। তাই এই বিষয়টি নিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করুন, আসুন আমরা নিজেরা নিজেদের জায়গা থেকে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই, দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলি।

কবি নজরুলের সেই কবিতাটি হয়তো সবারই মনে আছে–
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?
তোমার ছেলে উঠলে গো মা রাত পোহাবে তবে!’

ঠিক তেমনি আমরা যদি নিজেদের অবস্থান থেকে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হই, তাহলে কখনোই এই সমাজ থেকে ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব না। সেই সাথে ধর্ষক ও নারী নির্যাতনের সাথে জড়িতদের কঠিন শাস্তির বিধান রাখতে হবে। তারা যেন আইনের ফাঁক-ফোকর ব্যবহার করে শাস্তি এড়িয়ে যেতে না পারে সে বিষয়টিও মনে রাখা জরুরি। তবেই আমাদের মাতৃভূমি মা বোনদের জন্য নিরাপদ হবে।

মনে রাখতে হবে ৭১ এ আমাদের পূর্ব পুরুষরাই অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলো দেশকে শত্রু মুক্ত করার জন্য, আজ স্বাধীন দেশে দেলোয়ার বাহিনীদের বিরুদ্ধে আমাদেরই রুখে দাঁড়াতে হবে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে, নিজেদের অবস্থান থেকে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে সহায়তা করতে হবে।

ভুলে গেলে চলবে না আমরাই বাংলাদেশ।

লেখকঃ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক
৭১’র চেতনা, সরকারি বাঙলা কলেজ শাখা
কার্যনির্বাহী সদস্য, বাঙলা কলেজ সাংবাদিক সমিতি।

বাংলাদেশ: বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে পাওয়ারফুল ভিসি

 

কামরুল হাসান মামুন

বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে পাওয়ারফুল ভিসি। এ যেন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রেরই প্রতিফলন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এহেন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নেই যেইটা তার অঙ্গুলি নির্দেশ ব্যতীত করা সম্ভব। তাছাড়া যেই পদে এত ক্ষমতা থাকবে সেই পদ পাওয়ার জন্য মানুষ মরিয়া হয়ে উঠবেই।

সরকারও চায় সকল ক্ষমতা একজনের কাছেই থাকুক তাতে একজনকে বসে আনতে পারলেই কেল্লা ফতেহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্বৈরাচার হওয়ার জন্য এত ক্ষমতাই যথেষ্ট। তাই বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি কেবলই একটি প্রশাসনিক পদ না বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণভ্রমরা এখানেই লুক্কায়িত।

সামাজিক বিজ্ঞানের কেউ ভিসি হলে সে যদি ইঞ্জিনারিং বা বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক নিয়োগ বা প্রমোশনে বসেন তাহলে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? একইভাবে ইঞ্জিনারিং বা বিজ্ঞান অনুষদের কেউ ভিসি হলে সে যদি সামাজিক বিজ্ঞান বা ফাইন আর্টস অনুষদের শিক্ষক নিয়োগ বা প্রমোশনে বসেন তাহলে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

শিক্ষক নিয়োগ ও প্রমোশন একটি একাডেমিক কাজ অথচ এটিকেও আমরা একটি প্রশাসনিক কাজের অংশ বানিয়ে ফেলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যত বিভাগ আছে সবগুলোর নিয়োগ ও প্রমোশন বোর্ডের সভাপতি ভিসি বা প্রো-ভিসি।

কি অদ্ভুত না? অর্থাৎ শিক্ষক নিয়োগ ও প্রমোশন থেকে শুরু করে এমন কোন কাজ নেই যা ভিসি ছাড়া করা সম্ভব। পৃথিবীর অনেক বড় ভিসিদের নাম ছাত্রছাত্রীরা জানেও না। এমনকি শিক্ষকদের মধ্যেও অনেকে নাও জানতে পারে।

লেখক
কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নদী বাঁচলেই বাঁচবে বাংলাদেশ

মোজাহেদুর ইসলাম ইমন


নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। নদী ও বাংলাদেশ একই সূতোয় গাঁথা দুটি নাম। এ দেশের মাটি ও মানুষের সাথে নদী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ দেশে সর্বত্র জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নদীগুলো। বাংলাদেশকে বলা হয় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ব-দ্বীপ,যার সৃষ্টি নদীবাহিত পলি জমাট বেঁধে। পদ্মা,মেঘনা,যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদী। ছোট বড় অনেক উপনদী এসে এসব নদীতে মিশেছে। এসব নদ-নদী বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বৈচিত্র্য দান করেছে। বলতে গেলে এ নদীই বাংলাদেশের প্রাণ। সে জন্যই নদীর সাথে বাঙালির রয়েছে নাড়ীর টান।

সহস্র সহস্র বছর ধরে বাঙালির জীবন-সমাজ-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য ও অর্থনীতিতে নদীই প্রধান ভূমিকা পালন করে গেছে। বাঙালির জীবন কেটেছে নদীর জলে স্নান করে-সাঁতার কেটে,বাঙালির গ্রাম-গঞ্জগুলো গড়ে উঠেছে নদীর পাড়ে পাড়ে। বাঙালির ব্যবসা-বাণিজ্য চলেছে নদীকে নির্ভর করে। তাই বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্য নদী।

পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে পানিই সবচেয়ে আদি ও অফুরান। কারণ প্রতি বছর প্রাকৃতিক চক্রে পানি সাগর থেকে বাষ্পীভূত হয়ে বৃষ্টির আকারে ভূমিতে পতিত হয় এবং নদীতে প্রবাহিত হয়ে আবার সাগরে যায়। ক্রমবর্ধমান মানুষের সংখ্যা পৃথিবীর জীব ভারসাম্যকে নষ্ট করে দিয়েছে। একসময় আমাদের ছিলো প্রায় দেড় হাজার নদী। নদীগুলো ছিলো প্রশস্ত,গভীর ও পানিতে টইটম্বুর,বর্ষাকালে প্রমত্তা। আজ মোট নদী সংখ্যা সর্ব সাকুল্যে ২৩০।

আমাদের দেশে সীমান্ত অতিক্রান্ত নদী সংখ্যা ৫৭টি, যার ৫৪টি ভারত এবং ৩টি মায়ানমারের সাথে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিগত একদশক থেকে বর্তমান নদী সমূহের মধ্যে ১৭টি নদী একেবারই নদীর চরিত্র হারিয়ে,শুকিয়ে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। আরো ৮টি নদী বিপর্যস্ত ও মৃত্যুমুখী। এর মধ্যে যদি ভারতীয় আন্তঃ নদী সংযোগ প্রকল্প চালু হয় তবে আমাদের নদীগুলোতে প্রায় ৪০% ভাগ পানি প্রবাহ হ্রাস পাবে। আর ১৫-২০% হ্রাস পেলেই আরো ১০০ টি নদীর সাংবৎসরিক নব্যতা বিনষ্ট হয়ে যাবে।

সুপেয় পানি মানুষের মৌলিক অধিকার,বেঁচে থাকার জন্য জন্মগত অধিকার। আমাদের নদীগুলো হাজার হাজার বছর ধরে প্রবাহিত হচ্ছে। এই প্রবাহের ওপর আমাদের জনবসতি,কৃষি,অর্থনীতি এবং যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। তাই নদীতে পানির প্রবাহ থাকাটা আমাদের ঐতিহাসিক অধিকার। কিন্তু এই অধিকার প্রতিনিয়ত আমাদের কাছ থেকে হরণ করা হচ্ছে।

প্রথমত, উজানে অবস্থিত ভারত আন্তর্জাতিক নদীগুলোর ওপর ব্যারেজ নির্মাণ করে পানি সরিয়ে নিয়ে তাদের সেচ প্রকল্পে এবং নৌপথ সচল রাখার কাজে ব্যবহার করছে। দ্বিতীয়ত, খরার সময় অভ্যন্তরীণ নদীগুলোর প্রবাহের ওপর মাটির বাঁধ দিয়ে পানি তুলে নিয়ে সেচকাজে লাগানো হচ্ছে। তৃতীয়ত, নদীর হাঁটুজল প্রবাহের উৎস বিল ও জলাশয়গুলোকে অতি নিষ্কাশন করে চাষের আওতায় আনা হয়েছে। চতুর্থত, সারা দেশে অগভীর নলকূপ বসিয়ে সেচের জন্য পানি অতি উত্তোলন করে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নামিয়ে ফেলা হয়েছে। পঞ্চমত, নদীগুলোর পাড়ের খাসজমি দখল করে ভরাট করে বাড়িঘর এবং অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। ষষ্ঠত, পরিবেশ বির্পযয়ের নদীগুলো বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সপ্তমত,নদী-খাল ও জলাভূমিতে শিল্পবর্জ্য,পলিথিন,প্লাস্টিকের মতো কঠিন বর্জ্য ফেলে ভরাট করাও চরমভাবে দূষিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশে নদী ব্যবস্থাপনা বা সংরক্ষণ বিষয়ে কারোই কোনো মাথাব্যথা আছে বলে প্রতীয়মান হয় না। ভূমি মন্ত্রণালয় যেহেতু জমিজমার রেকর্ড রাখে ও খাসজমি বিলিবণ্টনের দায়িত্বপ্রাপ্ত,সেহেতু এই মন্ত্রণালয়ের প্রতিভূ হিসেবে ডেপুটি কমিশনাররা বিনা দ্বিধায় নদী-নালা ও জলাভূমি লিজ দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীভাঙন প্রতিরোধ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নদী দখল রোধ এবং বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণের জন্যেও দায়বদ্ধ হতে হবে। নদীতে অবাধে পয়ঃ ও শিল্পবর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এ কারণে প্রতিটি শহর ও বন্দরের আশপাশের নদী চরমভাবে দূষিত হচ্ছে।

দূষণমুক্ত,পানি বিশুদ্ধ আর পাড় দখলমুক্ত।এমন নদী এখন বাংলাদেশে বিরল। অস্তিত্বহীনতায় ভুগছে বেশির ভাগ নদ-নদী। নদী রক্ষায় নামা বিভিন্ন আন্দোলনও মুখথুবড়ে পড়ছে। ‘নদীর পাড় নদীকে ফিরিয়ে দাও’ এই শ্লোগান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো আন্দোলন করলেও কিছু হচ্ছে না। প্রভাবশালীরা নদীগুলোর টুঁটি চেপে ধরে আছে। বাংলাদেশে নদীর ওপর অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ করার বিষয়ে অনেক আইন থাকলেও প্রয়োগের বেলায় জনপ্রতিনিধিদের রয়েছে অনীহা এবং আইনের সীমাবদ্ধতা,দুর্বলতা ও ফাঁকফোকরগুলো জনসেবকদের দায়িত্ব পালনে বাঁধাও হয়ে রয়েছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া কিছুই করা সম্ভব নয়।

নদী বাঁচাতে আমরা যতই বুলি দেই, এর প্রতিকার করতে হবে রাজনীতিবিদদের ‼

লেখকঃ সাধারণ সম্পাদক,গ্রীন ভয়েস
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

বাংলাদেশের ২ জেলা নিজেদের দাবি করে নেপালের নতুন মানচিত্র

ডেস্ক রিপোর্ট


নেপাল ভারতের একের পর এক জায়গা নিজেদের দাবি করে বিশ্ব মিডিয়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তবে এবার বাংলাদেশকেও ছাড়েনি গ্রেটার নেপাল। বাংলাদেশের দুইটি জেলা নিজেদের দেখিয়ে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে নেপালের জাতীয়তাবাদী সে সংগঠন।

গ্রেটার নেপাল নামে সেই ম্যাপে বাংলাদেশের দিনাজপুর ও রংপুরকেও সেই ম্যাপে পাকিস্তান অধিকৃত নেপালের অংশ বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারতের সিকিম, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, দিনাজপুর ছাড়াও পাটনা, কাটিহার, পূর্ণিয়া সহ বিহারের প্রায় গোটা অংশ, সিমলা, উত্তর কাশী, দেরাদুনকেও নেপালের এলাকা হিসাবে দেখানো হয়েছে।

ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম দাবি করে, সেদেশের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে গত এক বছরে চারবার চীনে গিয়ে বৈঠক করে এসেছেন জিএনএনএফ-এর চেয়ারম্যান ফণীন্দ্র নেপাল। এমনকি চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে তার। ফলে গ্রেটার নেপালের নামে ম্যাপ প্রকাশের পিছনে চীনের মদত রয়েছে বলেই মনে করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যেই বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কেও জানানো হয়েছে বলে খবরে বলা হয়।

সংগঠনটি নেপালে এনজিও হিসাবে নথিভুক্ত আছে। ভারতের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবকে চিঠি লিখে সংগঠনটি প্রচারের আলোয় আসে। ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল নেপালের সব থেকে বড় মিডিয়া গ্রুপ কান্তিপুরের একটি সাপ্তাহিক প্রকাশনায় ‘গ্রেটার নেপাল নিয়ে সবুজ সংকেত দিল চীন’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সীতারাম বড়াল নামে এক সাংবাদিক সেই প্রতিবেদনে ফণীন্দ্রর চীন যাওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনেন। সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বেইজিংয়ে আমন্ত্রণেই ফণীন্দ্র সেদেশে গিয়েছিলেন। চীনের শীর্ষস্তরের কমপক্ষে ৫০ জন কর্মকর্তার সঙ্গে গত এক বছরে ফণীন্দ্র বৈঠকে বসেছিলেন বলে দাবি করা হয় প্রতিবেদনে। চীনে গিয়ে গ্রেটার নেপালের ম্যাপও বিভিন্ন দপ্তরে দিয়ে এসেছেন জিএনএনএফ চেয়ারম্যান।