সুস্থ হয়ে ক্যাম্পাসে ফেরা হল না ঢাবি শিক্ষার্থী আরিফের

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ( ঢাবি) আবু তালহা আরিফ নামে এক শিক্ষার্থী লিউকেমিয়ার (এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার) সঙ্গে যুদ্ধ করে অবশেষে হার মানলেন।

বুধবার (৩ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)।

আরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (২০১৭-১৮ বর্ষ) শিক্ষার্থী এবং ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।

রাতুল চৌধুরী নামে আরিফের এক সহপাঠী জানান, রক্তের সমস্যাজনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভূতত্ত্ব বিভাগের ৫০তম ব্যাচের বন্ধু আরিফ আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন। বেঁচে থাকাটায় যেন আশ্চর্যের এই পৃথিবীতে!

ক্যাম্পাসে ফেরা হলো না সোহরাওয়ার্দীর

আবু জাফর


আসা আর যাওয়ার নামই দুনিয়া! কতজন আসে আর কত জন যায়! কিন্তু কিছু কিছু যাওয়া সবার মনে দাগ কেটে যায়!

বলছিলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহরাওয়ার্দী ভূঁইয়ার কথা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আজ সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা যান। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)

সোহরাওয়ার্দী ভূঁইয়া কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার রসূলপুর ইউনিয়নের গোলাপনগর গ্রামের কৃতি সন্তান! এসেছিলেন বুক ভরা আশা নিয়ে কুমিল্লার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠে ! পাদচারণা করেছেন তিন তিনটি বছর! কিন্তু শেষ করতে পারলেন না। গ্রাজুয়েটের কালো কোর্তা পড়ার আগেই পড়তে হলো কাফনের সাদা কাপড়!

বাড়িতে বিদ্যুতের কাজ করতে ছিলেন, তবে মেইন সুইচ বন্ধ করতে ভুলে যান তিনি। তখনি হঠাৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন । বাড়ির সবাই মাথায় পানি দিলে কিছুটা সুস্থবোধ করেন। কিছুক্ষণ পর আবার অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালেই তার শেষ নিষ্পাপ মুখের শেষ নিশ্বাস ছাড়েন।

মরহুম সোহরাওয়ার্দী ভাইয়ের সাথে একি হলে থাকার সুবাদে প্রায় দেখা হত। কখন ডাইনিং কখন সিঁড়ির গোড়ায় তার মায়া ভরা চেহারাটা দেখে মনটা ভরে যেত! তার সহপাঠীদের কিছু স্মৃতিচারণ তুলে ধরছি-

আবির হাসান প্রান্ত (বাংলা বিভাগ) ২০১৬-১৭ বর্ষ তিনি বলেন..প্রথম তার সাথে ভাইবা দেওয়ার সময় দেখা হয়। আমার পিছনে দাড়িয়ে ছিল। পরে আমার আব্বুকে দেখে সালাম দিলো,বলল স্যার আপনি এখানে! শিক্ষকের প্রতি এমন ভক্তি দেখে আমি অভিভূত হয়েছিলাম সেদিন!পরে মাঝেমধ্যে দেখা হইলে আব্বুর কথা জিজ্ঞাস করত!

তাছাড়া প্রায় ও ভিক্টোরিয়া কলেজে আসতো ওর ফ্রেন্ড এর সাথে,দেখা হইতো আড্ডা দিতাম। আসলে ও অনেক ভালো একটা ছেলে ছিল, হাসিখুশি ছিল, জীবনে কিছু করার একটা অদম্য মনোবল ওর ছিল!

তার তিন বছরের ক্লাস মেট এবিএস ফরহাদ (নৃবিজ্ঞান বিভাগ) ২০১৬-১৭ বর্ষ তিনি বলেন: ক্লাসের অমায়িক এক বন্ধু ছিলো সোহাওয়ার্দী। শুধু বন্ধু হিসাবে নয় একজন ভাল মনের মানুষ হিসাবে তার প্রশংসা না করে পারছিনা। করোনা’র মাঝে অনেকের মত তার সাথে আমার কথা হয়। সর্বশেষ সে বলেছিল বন্ধু ভাল থাকিস আর সাবধানে থাকিস।

বন্ধু আমাকে সাবধানে থাকতে বলে তুই কেন অসাবধানতাবশত চলে গেলি? বন্ধু তুই কি আর নেতা বলে ডাক দিবি না? সাংবাদিক বলে ডাকবি না? আমার জানালার পাশে দাড়িয়ে শিট চাইবি না? বন্ধু আমার সব শিট তুই নিয়ে নেয়! তোর রুমে আমি প্রতিদিন যাব, তারপরও ফিরে আয় আমাদের কাছে।

সোহাওয়ার্দী প্রতিদিন বলত একই হলে থাকি আমরা তোরা আমার রুমে যাস না কেন? বন্ধু এখন থেকে প্রতিদিন যাব। কিন্তু বন্ধু তুই তো আর ফিরে আসবি না। প্রচন্ড রকমের ভাল মানুষ আজ হারিয়েছি। বন্ধু রক্তক্ষরণ কাকে বলে আজ প্রচন্ড রকমের ফিল হচ্ছে। ওপারে ভাল থাকিস বন্ধু। প্রতিনিয়ত মিস করবো তোকে!

করোনার কালীন পর খুব শীঘ্রই হয়তো খুলবে ক্যাম্পাস! সবাই বসবে ক্লাসে! কিন্তু নৃবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ৪৬ সদস্যের পরিবারটা থাকবে মলিন! তার রোল টা আসলেই থমকে যাবে ক্লাস! স্তব্ধ হবে বাতাস! ক্যাম্পাসে না ফেরা হলেও ওপারে ভালো থাকবে সোহরাওয়ার্দী এই কামনা সবার!


লেখকঃ শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

করোনা ভাইরাস কেড়ে নিল ঢাবি অধ্যাপকের প্রাণ

ঢাবি টুডেঃ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এবার মারা গেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. শাকিল উদ্দিন আহমেদ। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন।

রবিবার (৩১ মে) রাতে সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর গ্রীন লাইফ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী।

অধ্যাপক ড.শাকিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম জানান, অধ্যাপক ড. শাকিল উদ্দিন করোনা ভাইরাসে এআক্রান্ত হয়ে রাজধানীর গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আইসিইউ, ভেন্টিলেশন আর সকল ধরনের চিকিৎসা সুবিধার সাথে তাঁকে তিনদিন পূর্বে প্লাজমা থেরাপিও দেয়া হয়। কিন্তু তাতেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু

লালমনিরহাট টুডেঃ লালমনিরহাটে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবু সাঈদ নামে (২২) এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৬ মে) সকালে সদর উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী চর গোকুন্ডা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আবু সাঈদ ঢাকার একটি কলেজের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি ওই গ্রামের দিনমজুর দুলু মিয়ার ছেলে।

ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, নিজ বসতঘর সরানোর কাজ করছিলেন আবু সাঈদ। এ সময় বাড়ির বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে শরীরে জড়িয়ে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

খুঁটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পুলিশ সদস্যের মৃত্যু

সারাদেশ টুডেঃ সড়কের পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নৌ পুলিশের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।

আজ রবিবার সকালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আফরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মো. সোহেল রানা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার শীতলাই গ্রামের মো. আখের আলীর ছেলে।

এ ব্যাপারে রাজাবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে মোটরসাইকেলে নিজ কর্মস্থল রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় যাচ্ছিলেন সোহেল রানা। আফরা এলাকায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

করোনা উপসর্গ নিয়ে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীর বাবার মৃত্যু

মাইনুদ্দিন পাঠান, নোবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ করোনা ভাইরাস উপসর্গ নিয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীর বাবামারা গেছেন (ইন্না-লিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

ওই শিক্ষার্থীর বাবা এলজিইডি মিনিস্ট্রির একাউন্টেন্ট ছিলেন। শিক্ষার্থীর বাড়ি কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলায়। তিনি নোবিপ্রবির শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী।

ওই শিক্ষার্থীর বন্ধু মামুনুর রশীদ হিমেল জানান, তার বাবা বেশ কিছুদিন যাবৎ অসুস্থ ছিলেন। মাঝে একটু সুস্থ হয়েছিলেন শেষের দিকে এসে গত সোম-মঙ্গলবারের দিকে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। গতকাল কাশি এবং শ্বাসকষ্ট অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায় বিকালে হাসপাতালে নেয়ার জন্য এম্বুলেন্স কল করা হয়। হাসপাতালে নেয়ার পথে এম্বুলেন্সেই মৃত্যু বরণ করেন।

গোপালগঞ্জে এই প্রথম করোনায় একজনের মৃত্যু

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ গোপালগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম একজনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ শনিবার (১৬ মে) রাত সাড়ে ৮ টায় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন বেডে লিটন সরদার লিটু একজনের মৃত্যুহয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা: মো নিজাম মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, তিনি বেসরকারি ক্লিনিকে মেডিকেয়ারের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি জেলার সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের লুথু সরদারের ছেলে।

বাংলার আকাশে নক্ষত্রের পতন

আবু জাফর সালেহ


মাত্র সতেরো দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারাল তার পরম দুই রত্ন কে। জাতীয় অধ্যপক ড. জামিলুর রেজার পর বিদায় নিলো ড. আনিসুজ্জামান। স্বাধীনতা বাংলার সমস্ত বড় ভৌত কাঠামোর মধ্যে যেমন অমর রবেন জামিলুর রেজা স্যার তেমনি আনিসুজ্জামান স্যারও বাঙ্গালীর অভ্যান্তরীণ সাহিত্যআত্মায় বেঁচে রবেন চিরকাল।

জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। পিতা এ টি এম মোয়াজ্জেম ছিলেন একজন হোমিও চিকিৎসক। লেখালেখির হাত ছিল মা সৈয়দা খাতুনের পরবর্তী জীবনে আনিসুজ্জামানের উপর এর প্রভাব পরে।

স্ত্রী সিদ্দিকা জামান, মেয়ে রুচিতা জামান ও শুচিতা জামান এবং ছেলে আনন্দ জামান নিয়েই ছিল তার স্বর্গ।

“রাষ্ট্র ভাষা কি ও কেন” লিখলেন ভাষা আন্দোলনের সময়ে। করলেন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান অংশগ্রহণ , ১৯৭১ সালে করলেন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনোত্তর বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের বক্তৃতা গুলো অনেকটি হাত হাতেই লিখা। চষে বেড়িয়েছেন কলকাতা থেকে শিকাগো পর্যন্ত নিজের জ্ঞানের ঝুড়ি সমৃদ্ধ করতে।

কলকাতার পার্ক সার্কাসে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। ৪৭ দেশভাগের পর তিনি খুলনা জিলা স্কুলে ও ঢাকায় প্রিয়নাথ হাইস্কুলে পড়েন।১৯৫১ সালে মাধ্যমিক ও ১৯৫৩ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৫৬ সালে স্নাতকে ও ১৯৫৭ সালে স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। পিএইচডি ডিগ্রি করেন ‘ইংরেজ আমলে বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা’ নিয়ে। ১৯৫৬ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন।

ছাত্র জীবনের মত তার পেশাগত জীবনেও তিনি সাফল্য। মাত্র ২২ বছর বয়সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে শুরু। এরপর ১৯৬৯ জুনিয়র রিডার হিসেবে যোগ দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭১ সালে ভারতে শরণার্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৭২ সালে ড. কুদরাত-এ-খুদাকে শিক্ষা কমিশনের সদস্য পদে কাজ করেন। কমনওয়েলথ একাডেমি স্টাফ ফেলো হিসেবে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে গবেষণা করেন ৭৪ সালে।

১৯৮৫- ২০০৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত শিক্ষক হিসেবে অধ্যাপনা করেন। এরপর সংখ্যাতিরিক্ত শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হন। ২০১৮ সালের ১৯ জুন সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন।

তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে স্বরূপের সন্ধানে, পুরোনো বাংলা গদ্য, মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য, আঠারো শতকের বাংলা চিঠি, ইত্যাদি।

তিনি ১৯৮৫ সালে ‘একুশে পদক’, ২০১৫ সালে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ এবং ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মভূষণ’ পদকে ভূষিত করে। এ ছাড়া তিনি দুবার আনন্দবাজার পত্রিকার ‘আনন্দ পুরস্কার’, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডি-লিট’, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘জগত্তারিণী’ পদক পান।

৮৩ বছরের বর্ণিল জীবনের ইতি টানে ১৪ মে বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

তিনি যেমন শহীদুল্লাহ্, মুনীরের মত শিক্ষাগুরু পেয়েছিলেন তেমনি রেখেও গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ শত যোগ্য শিক্ষার্থীদের। দেশ-বিদেশে তার এই গুণগ্রাহীরাই তাকে বাঁচিয়ে রাখবে যুগের পর যুগ।


লেখকঃ শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান মারা গেছেন বলে তার সন্তান আনন্দ জামান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে তিনি জানান, অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নেয়াসহ অন্যান কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান আনিসুজ্জামান।

ছেলে আনন্দ জামান আরো জানান, সিএমইএইচের চিকিৎসকরা রাতে বাবার শরীর থেকে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করেন।এতে বাবার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। রাতে লাশ মর্গে থাকবে, সকালে আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

প্রাথমিকভাবে রাজধানীর আজিমপুরে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বাবার কবরের পাশে তাকে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে তা পরিবর্তীত হতে পারে বলে জানান আনন্দ জামান।

তিনি বলেন, শুক্রবারের সব কর্মসূচী বাতিল করা হয়েছে। শুক্রবার এ বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত হবে। আমাদের ইচ্ছা থাকবে দাদার কবরের পাশে তাকে দাফন করার। তবে সরকারের স্বাস্থ্যবিধি অনুয়ায়ী যে সিদ্ধান্ত হবে সে অনুয়ায়ী দাফন হবে।

পরিবার জানায়, এর আগে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মরদেহ বাংলা একাডেমি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিলো।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু

ওয়াশিম আকরাম, যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ আক্রান্ত হয়ে দুরারোগ্য কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাফায়েত হোসেন রক্তিম নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

আজ বুধবার (১৩ মে) বেলা আড়াইটার দিকে ফরিদপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাফায়াতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

সাফায়েত যবিপ্রবির শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের স্নাতকোত্তরে (শিক্ষাবর্ষ :২০১৮-১৯) শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন।

সাফায়াতের সহপাঠীদের সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে ফরিদপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাফায়াতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দুরারোগ্য কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন।

ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সাফায়াতের দুটি কিডনির কার্যকারিতায় প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সাফায়েত শুধু মেধাবীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্রিকেট দলের নিয়মিত খেলোয়াড়। সাফায়াতের মৃত্যুতে যবিপ্রবিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সাফায়েতের অকাল প্রয়াণে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন।

মেধাবী শিক্ষার্থী সাফায়েতের অকাল প্রয়াণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি , কর্মচারী সমিতি, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, সাংবাদিক সমিতি সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও তার অকাল প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।