এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার বিকল্প পদ্ধতির ঘোষণা শিগগিরই আসছে

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এবারের সিদ্ধান্ত ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ৬০ দিন ক্লাস করিয়ে এসএসসি এবং ৮৪ দিন ক্লাস করিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় সংক্ষিপ্ত সিলেবাস। এবার এসএসসি ও এইচএসসিতে পরীক্ষার্থী প্রায় ৩৭ লাখ। মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে জুন মাসে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকার ফলে দুইবার তারিখ দিয়েও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হয়নি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া এ বছর যে সম্ভব হবে না তা মোটামুটি নিশ্চিত বলা যায়।

ফরম ফিলাপের ফি নিয়ে বিপাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা

চলতি জুলাই মাসে করোনা পরিস্থিতি উন্নতি না হলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঈদের পর পর এ ঘোষণা দেবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসএসসি ৬০ দিন ও এইচএসসি ৮৪ দিন সরাসরি ক্লাস করিয়ে পরীক্ষা নিতে হলে কমপক্ষে আগস্টে মাসের শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে। কারণ ৬০ দিন ক্লাস করোনার পর পরীক্ষার আগে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় দিতে হবে প্রস্তুতির জন্য। আবার পরীক্ষা নিতে কমপক্ষে ২৫ দিন সময় লাগবে। অন্যদিকে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ২০ থেকে ২৫ দিন বিরতি দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু করতে হবে।

সে হিসাব করে দেখলে জুলাই মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে না পারলে কোনো অবস্থাতেই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে চলতি বছর পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে জুলাই মাস পুরোটাই ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের নীতি নির্ধারকরা বলেছেন, সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে না নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো ঝুঁকিতে তারা যাবে না।

এ অবস্থায় চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসির পরীক্ষা স্বাভাবিক এবং সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়া সম্ভব নয়। তবে এবার এই দুটি পাবলিক পরীক্ষার না নিতে পারলেও বিকল্প পদ্ধতিতে গ্রেড দেওয়া হবে। গত বছরের মতো অটো পাস দেওয়া হবে না।

পরীক্ষা নিতে না পারলে অনেক বিকল্প চিন্তার করছে এ সংক্রান্ত গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি। কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের (বেডু) বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, যেহেতু আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাচ্ছে না, তাই যত বিকল্প পদ্ধতি আছে সেগুলোর প্রস্তুতি শেষ করে রাখছি। যখন যেটা প্রয়োগ করা যায়, সেটাই বাস্তবায়ন করা হবে।

বিকল্প কী কী প্রস্তুতি নিচ্ছেন? এ নিয়ে তিনি আরও জানিয়েছেন, এজন্য শিক্ষাবোর্ড ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তারাই পরীক্ষার বিকল্প মতামত দেবেন। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, মূল্যায়ন করেই শিক্ষার্থীদের গ্রেড দেওয়া হবে। সেজন্য যত রকম বিকল্প আছে সবগুলো নিয়েই বিশ্লেষণ চলছে।

জানা গেছে, কমিটির একাধিক প্রস্তাব আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, রচনামূলক বা সৃজনশীল প্রশ্ন (সিকিউ) বাদ দিয়ে কেবল বহু নির্বাচনী প্রশ্নে (এমসিকিউ) পরীক্ষা নেওয়া। বিষয় ও পূর্ণমান (পরীক্ষার মোট নম্বর) কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের দুই পত্র একটিতে একীভূত করা।

পাশাপাশি ২০০ নম্বরের স্থলে ১০০ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু এই উভয় ক্ষেত্রেই করোনা পরিস্থিতির উন্নতি জরুরি। অর্থাৎ সংক্রমণ ১০ শতাংশের নিচে নেমে এলে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে কেন্দ্রের সংখ্যা বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ করে এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে আরও একটি দিক ছড়িয়ে পড়েছে। সেটি হচ্ছে, আগের ফল এবং অ্যাসাইনমেন্টের মূল্যায়নের ওপর এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের গ্রেড দেওয়া।

এর মধ্যে এসএসসির সম্পর্কে বলা হচ্ছে, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফলের ৫০ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্টের ৫০ শতাংশ ফলাফল নিয়ে ফল প্রস্তুত করা হতে পারে। আর এইচএসসির ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীর এসএসসির ফলের ৫০ শতাংশ, জেএসসির ২৫ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্টের ফলের ২৫ শতাংশ সমন্বয় করে ফল প্রস্তুত করা হতে পারে।

প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা হয়ে থাকে। কিন্তু গতবছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। প্রায় ৩ কোটি ছাত্রছাত্রীর মতোই এ দুই পরীক্ষার শিক্ষার্থীরা গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সরাসরি ক্লাসরুমে বসতে পারেনি। এদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা নবম শ্রেণিতে স্বাভাবিক লেখাপড়া করলেও দশম শ্রেণিতে আড়াই মাস স্কুলে যেতে পেড়েছে।

এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পর ৭-৮ মাস ক্লাস করতে পেরেছে। দ্বাদশ শ্রেণিতে উঠেছে অটোপাস নিয়ে। এই শ্রেণিতে একটি দিনও ক্লাস করতে পারেনি।

‘ছাত্র-ছাত্রীদের টিকা দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী’

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক: ‘শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর খুবই খুশির খবর এই যে, দ্বিতীয় ধাপের টিকাদানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা প্রসঙ্গে আজ মঙ্গলবার বিবিসি বাংলার ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে আজ একটি বৈঠকে ছিলাম। সেখানে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়েই যেন রিওপেনিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এটি একটি বড় ঘটনা। আমরা আশা করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছেলেমেয়েদের টিকা কার্যক্রমের আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারব।

মহামারিতে স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত না নেয়ার আহ্বান ঢাবি উপাচার্যের

তিনি এসময় আরও বলেন, শিক্ষক-কর্মীসহ সব শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার নির্দেশনা এসেছে। সামনে যে পাঁচ-ছয় লক্ষ টিকা আসবে সেখান থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে সংখ্যা তাতে পর্যাপ্ত হবে। সেখান থেকে আমাদের টিকা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এটা খুবই খুশির খবর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারেরই একজন সদস্য। তিনি যখন এই নির্দেশনাটি দিলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই গর্বের বিষয়। অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।’

ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘যেটা বলা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস পরীক্ষা নেওয়া সেটা মন্দের ভাল। কিন্তু আমরা একবারে ভালটাই করতে পারব।’

মি. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আরও একটি সুখবর আছে, সেটি হলো- জুন মাসের মাঝামাঝি স্কুলগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালুর ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

বিবিসির লাইভে তিনি আরও জানান, দেশে দ্বিতীয় ধাপে টিকাদান শুরু হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন। এ লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে একটি ডিও লেটার পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উপস্থাপক আফরোজা নিলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির উদ্দেশে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনেকেই বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষাগুলো নিয়ে নেওয়া যায়, আবার অকেকে বলছেন অনলাইনে ধাপে ধাপে পরীক্ষাগুলো নিয়ে নেওয়া সম্ভব।’
জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘খুবই অবাস্তব এবং অমূলকভাবে এই প্রস্তাব আসছে। কারণ, এই দুটো অপশনই আমাদের পরিকল্পনায় ছিল। কিন্তু সঙ্গতকারণেই তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।’

বিবিসি বাংলার লাইভ অনুষ্ঠান চলাকালেই অন্তত তিনবার ঢাবি উপাচার্যের এবং বেশকয়েকবার অন্যদের লাইভ অডিও বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে অধ্যাপক আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘এই যে একারণেই অনলাইনে ক্লাস পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয় না। এখানেই তার প্রমাণ মিলছে।’

এসময় ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘সমস্যাটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সারাবিশ্বেই অবস্থা একই। মহামারিতে স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকা যায় না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ইউরোপ ও ভারত রিওপেনিংয়ে গিয়েছিল, পরে তারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে তার মাশুল দিতে হয়েছে তাদের।’

 

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

দ্যা ক্যাম্পাস টুডেঃ আগামী ২৯ মে পর্যন্ত দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বন্ধ ঘোষণা দেওয়া থাকলেও চলমান সরকারি বিধি-নিষেধের (লকডাউন) সময়সীমা ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে ৩০ মে পর্যন্তই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে।এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও কিছুদিন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকরা। জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। তবে তার আগেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে আগামী জুনের মাঝামাঝি সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে সরকারের।

এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে পারে এসএসসি ও এইচএসসি ব্যাচ। তথ্য মতে, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বছর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় তা বাড়িয়ে আগামী ২৯ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে শিক্ষাবিদ ও শিক্ষকরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিগগির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

তারা বলছেন, বৈশ্বিক এই মহামারিটি শিগগির যাবে না। এটিকে নিয়েই সবার চলতে হবে। তাই শিক্ষার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে সরকারকে এ বিষয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। এদিকে, দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সোমবার (২৪ মে) বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

শিক্ষার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মুসলেম উদ্দিন মুন্না বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সময় কখনো আসবে না।

যেহেতু এটি একটি বৈশ্বিক মহামারি তাই এটি আজ-কালের মধ্যে চলে যাবে ব্যপারটি এমন না। এটিকে নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। এমন চিন্তায় যদি আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারি তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন নয়?

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলেও সুরক্ষা ব্যপারটা তো আর থাকছে না। যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে না তারা কি আর বের হচ্ছেনা? স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে এবং আমরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাপন করছি।

একইভাবে স্বাস্থ্যবিধি যেন সবাই মানে সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা উচিত। আমি মনে করি, এ প্রজন্মকে ধরে রাখতে হলে ও শিক্ষার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে সরকারকে গভীরভাবে ভাবতে হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, সভ্য দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। সরকার চাইলে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে পারতেন। সরকার সেটি করেননি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়াছে কিনা, এ প্রসেঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এই মুহূর্তে ছুটি অল্প কিছু বাড়াতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি কয়দিন বাড়ছে, এখন সুনির্দিষ্ট করা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা এখনও দেওয়া যায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন ৬ লাখ টিকা আসছে, শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দিয়ে দিতে। সেটা দিতে কিছু সময় লাগবে। আমরা কী কী করছি বুধবার (২৯ মে) বলতে পারবো।

 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে জানা যাবে কাল

দ্যা ক্যাম্পাস টুডেঃ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সরকার সনদ সর্বস্ব, পরীক্ষা নির্ভর ও নিরানন্দ শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনে কাজ করছে। মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়ে ভাবছে। জিপিএ-৫ পাওয়া, মেধা যাচাইয়ের একমাত্র পদ্ধতি হতে পারে না। তাই মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তন জরুরি।

সোমবার (২৪ মে) জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড কমিটি ও দৈনিক সমকাল আয়োজিত জাতীয় জীববিজ্ঞান উৎসব ২০২১ এর জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ীদের মাঝে, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন ডা. দীপু মনি ।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা অতীতের শিল্পবিপ্লবগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য সুবিধা নিতে পারেনি তাই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আমরা সফল অংশীদার হতে চাই। পাশাপাশি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের যথাযথ সুফল আমরা নিতে পারিনি। তাই আগামী ১০ বছরে আমাদের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল নিতে হবে।

ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সফল অংশীদার হতে হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। তাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন জরুরি। এ লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড এর সভাপতি ড. মোহম্মদ শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া ও দৈনিক সমকালের সম্পাদক মুস্তাফিজ শফিসহ অনেকে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে চায় মন্ত্রণালয়

দ্যা ক্যাম্পাস টুডেঃ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, যদি করোনা পরিস্থিতির আরো কিছুটা উন্নতি হয় তাহলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চায় মন্ত্রণালয়। এজন্য করোনাকালীন পড়ালেখা অব্যাহত রাখতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।গত (১৮) মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ ইছমত উল্লাহ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠিতে এই তথ্য চাওয়া হয়।

চিঠিতে বৈশ্বিক মহামারি চলাকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রহণ করা সকল কার্যক্রমের সর্বশেষ অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমন্বয় শাখায় মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত মেইলে এ তথ্য পাঠানোর নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।

মাউশির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনাকালীন আমরা অনলাইন লেখাপড়ায় সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছি। অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনায় শিক্ষকরা কী কী সমস্যায় রয়েছেন তা জানতে আমরা মাঠপর্যায়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেও আমরা এসব ব্যাপারে নিয়মিত অবহিত করছি। তবে কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নিবেন।

যখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা আসবে তখন থেকেই সরাসরি শ্রেণী কার্যক্রম শুরুর জন্য স্কুল-কলেজগুলোকে প্রস্তুত রাখা রয়েছে।গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে মহামারী করোনার কারনে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন

শাবলু শাহাবউদ্দিন,পাবনা প্রতিনিধি:স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছে পাবনার স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৪ মে) সকাল ১০টায় পাবনা শহরের প্রাণকেন্দ্র প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে মানববন্ধন শুরু করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

‘আর একদিনও দেরী নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা চাই’, ‘হাট বাজারে মানুষের ঢল, বন্ধ কেনো পরীক্ষার হল’,‘অনলাইন শিক্ষা মানি না, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ মানি না’,‘অনিশ্চিত জীবন থেকে মুক্তি দিন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানব বন্ধন করেন তারা।

আন্দোলনরত একজন শিক্ষার্থী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “প্রাইমারী স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত হাজার হাজার শিক্ষার্থী ঝরে যাচ্ছে। যেখানে অফিসার-কর্মচারী সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস করছে, তাহলে শিক্ষার্থীরা কেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস করতে পারবে না। তাই আমি বলবো, অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন।”

প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে গেলো বছরের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। সেই বন্ধ দফায় দফায় বাড়িয়ে আগামী ২৯ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।

মানব বন্ধনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সপক্ষে বক্তব্য প্রেস করেন রিপন, আলামিন, এসএম হাবিবুল্লাহ, তারেক, জয়, রুপম সহ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,পাবনা কলেজ, ইসলামিয়া কলেজ সহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন থেকে সরকার এর প্রতি ছয়টি দাবি পেশ করা হয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাল্য বিবাহের শিকার শিক্ষার্থীরা!

দ্যা ক্যাম্পাস টুডেঃ প্রায় এক বছরেরও অধিক সময় ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে ছাত্রীরা দেদারছে বাল্য বিয়ের শিকার হচ্ছে, অপরদিকে শিক্ষার্থীরা তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।

পাশাপাশি শিক্ষকদের শ্রেণীকক্ষে পাঠদান না থাকায় তাদেরও বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতার ঘাটতি দেখা দিচ্ছে অনলাইন ক্লাসে। এ অবস্থায় অনলাইন ক্লাসে শতভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিতকরণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকসহ সচেতনমহল।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস জানায়, এ উপজেলায় শিক্ষা নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ থেকে ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকার কথা। সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় অপরিকল্পিতভাবে ৭২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫২টি মাদ্রাসা ও ১১টি কলেজ গড়ে উঠেছে।

ফলে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সঙ্কট রয়েছে। এরমধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৮ হাজার ২৮৮ জন, মাদ্রাসায় ৭ হাজার ৫৮৭ জন ও কলেজে ৪ হাজার ৭৪৪ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।

অনেক গরীব পরিবারের মেয়েরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্রীরা সপ্তম থেকে অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ হবার পর বাল্য বিয়ের শিকার হচ্ছে। আবার অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে সংসারের প্রয়োজনে অনেক শিক্ষার্থী শিশু শ্রমের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।

শিক্ষকদের ইউনিফরম ও বেতন ফ্রির ঘোষণার পরও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে মাদ্রাসাগুলোতে চরম শিক্ষার্থী সঙ্কট রয়েছে।

উপজেলার মধ্যকুল গ্রামের মুনছুর রহমান জানান, তার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় তার ছেলে বিপথগামী হয়ে যাচ্ছিলো। এখন তার ছেলে মৎস্য ঘেরে শ্রম দিচ্ছে। সে এখন প্রতিদিন দু’শ টাকা আয় করে থাকে।

কেশবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, আমার স্কুলের অনেক ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে বিদ্যালয়ে সঠিকভাবে অ্যাসাইনমেন্ট জমা হচ্ছে না। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় স্কুলসহ শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের কোন যোগাযোগ নেই। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করা কঠিন হয়ে পড়বে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ এক বছরের অধিক সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সপ্তাহে অন্তত একদিন শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

এতে শিক্ষার্থীসহ তাদের পরিবার স্বাস্থ্যবিধি মানতে অভ্যস্ত হবে। এছাড়া, শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতার ঘাটতি পূরণে প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখতে হবে।

আবারও পিছিয়ে যেতে পারে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা

দ্যা ক্যাম্পাস টুডেঃ চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কীভাবে হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।গত বছরের মতো এবার ও পরীক্ষার্থীরা অটোপাসের দাবি তুলেছেন। তবে এবার অটোপাস দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জুন-জুলাইয়ে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও করোনার প্রকোপে তা এক-দুমাস পিছিয়ে যেতে পারে। কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে সে বিষয়ে কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ আছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর পার হয়েছে প্রায় ১৪ মাস। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অটোপাস দেওয়া হয়। তবে চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ প্রসঙ্গে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এসএসসি-এইচএসসির জন্য সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে দিয়েছি আমরা। জুন-জুলাইয়ে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। তবে সেটি হয়তো দু-এক মাস পিছিয়ে যেতে পারে। কিন্তু পরীক্ষা হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতবার এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যেভাবে পাস করানো হয়েছে, তাকে অটোপাস বলা অন্যায়। কারণ তারা পরীক্ষার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছিল। তবে এবারের এসএসসি কিংবা এইচএসসির বিষয়টি ভিন্ন। তারা ক্লাসে যেতে পারেনি। এজন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস হলেও এবার তাদের পরীক্ষায় বসতেই হবে।’

এর আগে ৬০ দিন ক্লাস শেষে এসএসসি এবং ৮০ দিন ক্লাস করিয়ে এইচএসসি নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু করোনার কারণে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয় নি। এ পরিস্থিতিতে এসএসএসি পরীক্ষার্থীদের একাংশ অটোপাসের দাবি তুলেছেন। তারা যুক্তি দেখিয়েছে করোনার কারণে ১৪ মাস স্কুল বন্ধ থাকায় তারা পড়ালেখা করতে পারেনি। তাই সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করলেও শেষ করা যাবে না।

তবে সরকারের দায়িত্বশীলরা বলছেন, যারা অটোপাস পেয়েছে, তারা প্রস্তুতি নিতে পেরেছিল। সব ক্লাস করেছিল। টেস্ট পরীক্ষাও দিতে পেরেছিল তারা। কিন্তু এ বছর পরীক্ষার্থীরা কোনো ক্লাস করতে পারেনি। সে জন্য অটোপাস তাদেরই ক্ষতির কারণ হবে। তাই শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই চলতি বছর অটোপাস দেওয়া হবে না।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘পরীক্ষা নেওয়া না নেওয়া করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। তবে এ বছর অটোপাস দেওয়া হবে না। শিক্ষার্থীরা কোনো ক্লাস করতে পারেনি। এবার পরীক্ষা তাদের দিতেই হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে অনিশ্চিত, এইচএসসি পরীক্ষার সিদ্ধান্তও আজ নয়

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তাও অনিশ্চিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, করোনা পরিস্থিতি এখনও অনুকূলে নয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শীতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। এদিকে শিক্ষাবোর্ড বলছে. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব নয়। ফলে শিগগিরই এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বসছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটি। তবে বৈঠক থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে না বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। একাধিক বোর্ড চেয়ারম্যানও সেদিকেেই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তারা বলছেন, সবাই এখন করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে। এরমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুব সহজে খুলছে না। ফলে পরীক্ষা নিতে আরও দেরি হতে পারে। কবে এ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে সে বিষয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তারা। তবে পরীক্ষা নেওয়ার সব প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে তারা বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অন্তত ১৫ দিন পর এ পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক মু. জিয়াউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে এইচএসসি পরীক্ষা হবে না, তা চূড়ান্ত। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতিও এখনও তৈরি হয়নি।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের (আজ) বৈঠকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিষয়ে আলোচনা হবে না। এটি বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিয়মিত বৈঠকের অংশ। পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয়নি। করোনার কারণে যে সংকট, তার মধ্যে আমরাও আছি। এখন পরীক্ষা কীভাবে হবে? এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।

জিয়াউল হক বলেন, সময়সূচি প্রকাশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকেও এ বিষয় চূড়ান্ত করার জন্য নয়। পরীক্ষার বিষয়ে এ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত একটাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা হচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে পরীক্ষা হবে না বলে তিনি জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ থাকায় এখনই এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’

এর আগে গত সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রসঙ্গক্রমে তিনি একথা বলেন। এসময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে দলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তবে তার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ২৬ সেপ্টেম্বর!

শাফিউল কায়েস


করোনা ভাইরাসের জন্য বিশ্ব এখনও থমকে আছে। সেই সাথে জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিথর হয়ে আছে। অদম্য প্রাণচাঞ্চল্য থাকা স্থাপনাগুলো হয়ে পড়েছে প্রাণহীন। শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখর থাকা ক্লাস রুম, করিডোরগুলোও আজ নিস্তব্ধ। চলমান এ পরিস্থিতিতে শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা। করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে নানা ধরণের ঘোষণা আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন ক্লাস নেয়া ছাড়া এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট আর কোন নির্দেশনা নেই।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো সীদ্ধান্ত এই মাসের শেষে। করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে বলে জানা গেছে।

দেশে অন্যান্য যে সেক্টর চালু কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধ থাকার কারণ জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের দ্য ক্যাম্পাস টুডেকে বলেন, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান খোলা না হলে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখার সম্ভাবনা আছে। অন্যান্য সকল সেক্টর খুললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হচ্ছে না কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন। শিশুরা স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন নয়। ফলে তাদের মাধ্যমে বাসায় বাবা-মা, বৃদ্ধা দাদা-দাদী আক্রান্ত হতে পারে। । তখন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এই বিবেচনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো সীদ্ধান্ত এখনো হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এর মধ্যে আমরা দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবো এবং সেই অনুযায়ী তার এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের ২৬ তারিখের দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।

এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন কেন্দ্রীয়ভাবে নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো নেবে । তিনি বলেন, ‘তারা আলাদা চিন্তা-ভাবনা (শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে) করছে, কীভাবে করা যায়। কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে অনলাইনে পাঠদান চলছে