দ্যা ক্যাম্পাস টুডেঃ প্রায় এক বছরেরও অধিক সময় ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে ছাত্রীরা দেদারছে বাল্য বিয়ের শিকার হচ্ছে, অপরদিকে শিক্ষার্থীরা তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
পাশাপাশি শিক্ষকদের শ্রেণীকক্ষে পাঠদান না থাকায় তাদেরও বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতার ঘাটতি দেখা দিচ্ছে অনলাইন ক্লাসে। এ অবস্থায় অনলাইন ক্লাসে শতভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিতকরণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকসহ সচেতনমহল।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস জানায়, এ উপজেলায় শিক্ষা নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ থেকে ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকার কথা। সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় অপরিকল্পিতভাবে ৭২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫২টি মাদ্রাসা ও ১১টি কলেজ গড়ে উঠেছে।
ফলে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সঙ্কট রয়েছে। এরমধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৮ হাজার ২৮৮ জন, মাদ্রাসায় ৭ হাজার ৫৮৭ জন ও কলেজে ৪ হাজার ৭৪৪ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।
অনেক গরীব পরিবারের মেয়েরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্রীরা সপ্তম থেকে অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ হবার পর বাল্য বিয়ের শিকার হচ্ছে। আবার অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে সংসারের প্রয়োজনে অনেক শিক্ষার্থী শিশু শ্রমের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।
শিক্ষকদের ইউনিফরম ও বেতন ফ্রির ঘোষণার পরও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে মাদ্রাসাগুলোতে চরম শিক্ষার্থী সঙ্কট রয়েছে।
উপজেলার মধ্যকুল গ্রামের মুনছুর রহমান জানান, তার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় তার ছেলে বিপথগামী হয়ে যাচ্ছিলো। এখন তার ছেলে মৎস্য ঘেরে শ্রম দিচ্ছে। সে এখন প্রতিদিন দু’শ টাকা আয় করে থাকে।
কেশবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, আমার স্কুলের অনেক ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।
দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে বিদ্যালয়ে সঠিকভাবে অ্যাসাইনমেন্ট জমা হচ্ছে না। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় স্কুলসহ শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের কোন যোগাযোগ নেই। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করা কঠিন হয়ে পড়বে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ এক বছরের অধিক সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সপ্তাহে অন্তত একদিন শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
এতে শিক্ষার্থীসহ তাদের পরিবার স্বাস্থ্যবিধি মানতে অভ্যস্ত হবে। এছাড়া, শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতার ঘাটতি পূরণে প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখতে হবে।