সড়ক দুর্ঘটনায় শাবিপ্রবি ছাত্রের মৃত্যু

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকায় ট্রাকের চাপায় নিহত হয়েছেন।

নিহত ছাত্রের নাম মো. সাব্বির। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাড়ি নড়াইলে। বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের সুবিদবাজার এলাকার একটি মসজিদ থেকে নামাজ শেষে মোটরসাইকেলে করে আখালিয়া এলাকার নিজ মেসে ফিরছিলেন সাব্বির। এ সময় পাথরবোঝাই একটি ট্রাক পেছন দিক দিয়ে তাঁকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।

সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত যবিপ্রবির শিক্ষার্থী

 

যবিপ্রবি টুডে


সড়ক দুর্ঘটনায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের রোকাসানা জামান ঐশী নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন ।

জানা যায়,সোমবার (১৮ জানুয়ারি) ক্যাম্পাসের প্রধান গেটের সামনে বেলা দুইটার দিকে যশোরের চৌগাছা উপজেলাথেকে শহরের দিকে আগত একটি মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়েছেন যবিপ্রবির শিক্ষার্থী। আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলে থাকা এক নারীও।

এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শী থেকে জানা যায় , ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের স্যামনের সড়ক পার হয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকছিলেন।তখন একপাশে যশোর-চৌগাছা রুটের এটি বাস যাত্রী তুলছিলো ও শহর থেকে চৌগাছার দিকে একটি এম্বুলেন্স যাচ্ছিলো। এ সময় বিপরীত দিক থেকে যশোর শহরমুখী মোটারসাইকেলের চালক এম্বুলেন্স ও বাসকে সামলে ঘুরে বের হতে গিয়ে ব্রেকফেল করেন এবং গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান ও ঐশীর মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি ধাক্কায় দাঁতসহ মুখে প্রচন্ড আঘাত পান।চালকসহ মোটরসাইকেলে থাকা নারী পড়ে যাওয়ার সাথে সাথেই অজ্ঞান হয়ে যান।

দুর্ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই উপস্থিত ঐশীর সহপাঠীরা ও গেটের সামনে থাকা দোকানদারেরা তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এম আর খান মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান।

মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মন্ডল তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেন এবং তাদেরকে যশোর সদরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্সে তাদেরকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মন্ডল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ঐশী দাঁতে গুরুতর ব্যথা পেয়েছেন এবং চৌগাছার মেয়েটি মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তাদেরকে যশোর শহরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছি সুচিকিৎসার জন্য।”

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে কয়েকবার এরকম দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের জানুয়ারিতে এই রকমই একটা দুর্ঘটনা ঘটার পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
আন্দোলনে নামে। পরের দিনে যশোর শহরস্থ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে বিশাল মানববন্ধন এবং ক্যাম্পাসের সম্মুখের যশোর-চৌগাছা সড়কে গতিরোধক নির্মাণ,
কংক্রিটের ফুটপাত নির্মাণসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের চাপে পড়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর থেকে ক্যাম্পাসের
সম্মুখে গতিরোধক নির্মাণ করে দেয়।

কিন্তু কয়েকমাস পরে করোনাকালিন সময়ে সড়ক পুনর্নির্মাণের সময়ে সেই গতিরোধক তুলে ফেলা হয় । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি অতিসত্বর ক্যাম্পাসের সম্মুখে
গতিরোধক নির্মাণ সহ ফুটপাত এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

সড়ক দুর্ঘটনা: কারণ ও প্রতিকার

মোঃ রাশেদুল ইসলাম রাশেদ


বর্তমান সমাজে ঘর থেকে বের হলেই প্রত্যেক মানুষকে সড়ক দুর্ঘটনা নামক আতংক তাড়া করে বেড়ায়। প্রতিদিন দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেই থাকে।

যার ক্ষয়ক্ষতি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। জনসচেতনতা এবং প্রয়োজনীয় সরকারি বেসরকারি পদক্ষেপই এই মহামারীকে রুখে দিতে পারে।

বাংলাদেশের তিন ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান। (ক) সড়ক পথ, (খ) নৌপথ এবং (গ) আকাশপথ। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার পাকা রাস্তা আছে। এছাড়া রয়েছে রেলপথ। রেলপথে ব্রডগেজ, মিটারগেজ এবং ডাবলগেজ এ তিন ধরণের পথই আছে।

এছাড়া নৌপথ ও আকাশপথ দেশের অভ্যন্তরীণ ও বর্হিবিশ্বে যোগাযোাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে সার্বিক বিবেচনায় সড়কপথের যোগাযোগ সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তাই এই পথের গুরুত্ব অনেক বেশি।

প্রতিদিন সংবাদপত্রে যে খবরটি অনিবার্য তা হলো সড়ক দুর্ঘটনা। এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটে বিভিন্নভাবে যানবাহনগুলোর মুখোমুখি সংঘর্ষে। এছাড়া গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া, এমন কি পায়ে হেঁটে রাস্তা পার হওয়ার সময়ও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এসব দুর্ঘটনা দেখে মনে হয় মৃত্যু যেন ওঁত পেতে বসে আছে রাস্তার অলিতে-গলিতে।

নিম্নে সড়ক দুর্ঘটনার বিভিন্ন কারণ আলোচনা করা হলো-

অতিরিক্ত গতি ও ওভারটেকিং: সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে গাড়িগুলোর অতিরিক্ত গতি ও ওভারটেকিং কে দায়ী করা হয়। পুলিশ রিপোর্টেও বলা হয় অতিরিক্ত গতি ও চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। এছাড়া গাড়ি দ্রুতবেগে ব্রিজে ওঠার সময় দুর্ঘটনা ঘটার ইতিহাস অনেক রয়েছে।

অপ্রশস্ত রাস্তা: বাংলাদেশের অধিকাংশ রাস্তাই অপ্রশস্ত। যার ফলে দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। ঢাকা থেকে যাতায়াতের সবচেয়ে ব্যস্ত ঢাকা-আরিচা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে। এই রাস্তাগুলো প্রয়োজনের তুলনায় প্রশস্ত নয়। ফলে এ দুটি পথেই দুর্ঘটনা ও হতাহত বেশি হয়। তাছাড়া দেশের সর্বত্র অপ্রশস্ত রাস্তায় অতিরিক্ত গাড়ি চলাচলের জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

ওভার লোডিং: ওভার লোড মানে ধারণক্ষমতার বেশি মাল বহন করা। ফলে চালকরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটায়।

আইন অমান্য: সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ আইন অমান্য করা। এক জরিপে দেখা যায় ৯১ শতাংশ চালক জেব্রা ক্রসিংয়ে অবস্থানরত পথচারীদের আমলই নেয় না। পাশাপাশি ৮৫ ভাগ পথচারী নিয়ম ভেঙ্গে রাস্তা পার হয়। তাছাড়া এক সমীক্ষায় বলা হয় ঢাকা শহরের ৮৪ শতাংশ রিকশাচালক ট্রাফিক আইন ও নিয়ম সম্পর্কে অজ্ঞ। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।

জনসংখ্যার চাপ ও অপ্রতুল পরিবহন ব্যবস্থা: দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে যানবাহনের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। রাজধানী ঢাকায় বর্তমানে প্রতি কিলোমিটারে ২৪৭টির বেশি গাড়ি চলে। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আওতাধীন মোট ২২৩.৩০ কিলোমিটার রাস্তায় আনুমানিক গাড়ি চলে ৫ লাখ ৫০ হাজার। অন্যান্য বড় শহরেও অনেকটা একই চিত্র পরিলক্ষিত হয়। ফলে দুর্ঘটনার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা: বাংলাদেশে সড়ক পথের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ হাজার কিলোমিটার। এসব পথে প্রতিদিন অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু এই বিশাল যানবাহন সুশৃঙ্খল ব্যবস্থার মধ্যে আনার মতো ট্রাফিক ব্যবস্থা এদেশে আজও গড়ে ওঠেনি।

প্রযুক্তির ব্যবহার: আধুনিক যুগ সম্পূর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর। এই প্রযুক্তির ব্যবহার সঠিকভাবে না করলে অনেক সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যায়। গাড়ির চালকরা গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বলে, গান শোনে। ফলে অসতর্ক হয়ে পড়েন। এতে করে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

এছাড়া ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, অদক্ষ ও লাইসেন্স বিহীন চালক, সড়কের ওপর অবৈধ হাটবাজার, অবৈধ স্থাপনা, বিকল্প রাস্তার ব্যবহার না করে যখন-তখন রাস্তা খোঁড়াখুড়ি, যানবাহনে ব্যবহৃত তেলে ভেজাল এবং রাস্তার মধ্যে প্রয়োজনীয় ডিভাইডার না থাকা প্রভৃতির কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।

সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি অসীম। এর ফলে কেবল মানুষের মৃত্যু নয়, অপূরণীয় আরো হাজারো ক্ষতির বোঝা চাপিয়ে দেয় জনসাধারণের জীবনে। নিম্নে সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো- বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা World Health Organisation (WHO)-এর হিসাব মতে ২০১০ সালে সারা পৃথিবীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ১০ লাখ ১৮ হাজার মানুষ নিহত হয়। ২ কোটিরও বেশি মানুষ আহত হয় এবং প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে। যা খুবই মর্মান্তিক ও অপ্রত্যাশিত। যে হারে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২০ সাল নাগাদ সড়ক দুর্ঘটনা বর্তমানের তুলনায় ৬০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী ২০০৮ সালে সারা দেশে ৭০৪৮ জন সড়ক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয় যার মধ্যে ৩,৭৬৪ জন নিহত ও ৩,২৮৪ জন আহত হয়।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, দুর্ঘটনায় হতাহতের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ সেক্টর (এআরসি)-এর গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে বছরে গড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ১২০০০ এবং আহত হয় ৩৫,০০০ জন।

সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুদের ক্ষয়ক্ষতি: বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)- এর মতে, সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১ লাখ ৮০ হাজার শিশু মারা যায়। আর আহত হয় হাজার হাজার শিশু যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। ২০১০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯৬ শতাংশ শিশু অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের ।

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যে ক্ষতি হয় তার আর্থিক পরিমাণ দাঁড়ায় বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা যা জিডিপির দুই ভাগ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর হিসাব মতে আন্তর্জাতিকভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে প্রায় ৫২০ বিলিয়ন ডলার। উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশে এর পরিমাণ ৬৫ বিলিয়ন ডলার।

সড়ক দুর্ঘটনা পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। এর ফলে হঠাৎ করে বিপর্যয় নেমে আসে একটি পরিবারে। সেই শোক গোটা পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের বুকে শেলের মতো বিধে থাকে সারা জীবন। অনেক সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সমাজ ও দেশ হারায় তার কৃতি সন্তানদের। এ দুর্ঘটনা অনেককে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে দেয়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের উপায়: সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের দেশের স্বাভাবিক ঘটনা। আমাদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক বিশ্বের খুব কম দেশেই আছে। তাই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য করণীয়-

১) বেপরোয়া গতি ও ওভারটেকিং নিষিদ্ধকরণ। আর এ জন্য গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা বেঁধে দেয়া উচিত।

২) ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং আইন লঙ্ঘনকারীদের কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

৩) লাইসেন্স প্রদানে জালিয়াতি প্রতিরোধ করতে হবে।

৪) লাইসেন্স প্রদানের আগে চালকের দক্ষতা ও যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করতে হবে।

৫) ফিটনেস, সার্টিফিকেটবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামানো প্রতিরোধ করতে হবে।

৬) পথচারীকে সতর্কভাবে চলাফেরা করা।

৭) অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন বন্ধ করা।

৮) মহাসড়কের পাশে হাট-বাজার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা।

৯) সড়ক দুর্ঘটনার শাস্তি অর্থাৎ সিআরপিসির ৩০৪ বি ধারায় শাস্তির মেয়াদ ৩ বছর থেকে ১০ বছর করা।

১০) মোটরযান অধ্যাদেশের ১৪৩, ১৪৬ ও ১৪৯ ধারায় যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং শাস্তির বিধান উল্লেখ আছে তা বাড়ানো।

১১) সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আইনের ভূমিকা আরো বেশি সক্রিয় করা।

১২) প্রতিমাসে মহাসড়কে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে যানবাহনের ত্রুটি-বিচ্যুতি পরীক্ষা করা।

১৩) প্রতিটি গাড়ির চালককে স্মরণ রাখতে হবে সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।

সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি পরিবহন মালিক, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, গাড়ি চালক সমিতি এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সরকার সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান করে। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোট অথরিটি (বিআরটিএ) গঠন করা হয়। এর আগে সড়ক ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য ১৯৬১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি জারিকৃত এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) গঠিত হয়। এছাড়া গঠিত হয়েছে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় বোর্ড (ডিটিসিবি) এসব সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ গঠন করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কাজ করে চলেছে।

এছাড়া এর পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) দুর্ঘটনা রিসার্চ সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। দেশের সড়ক বা মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ২০০৫ সালের ১১ জুন দেশের হাইওয়ে সড়কগুলিতে হাইওয়ে পুলিশ নিযুক্ত করা রয়েছে। সরকার এবং এসব সংস্থা যদি সর্বদা সতর্ক থাকে তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশ অবশ্যই এগিয়ে যাবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০ বাসযাত্রী আহত

টিসিটি রিপোর্ট: গোপালগঞ্জে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০ জন বাসযাত্রী আহত হয়েছেন। আজ সোমবার (১ জুন) সকালে জেলার কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলায় পৃথক এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলাধীন শিবগাতি এলাকায় ঢাকাগামী সূর্যমুখী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে বাসের ১৮ জন যাত্রী আহত হয়। পরে গুরুতর আহতদের মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

একই মহাসড়কের মুকসুদপুর উপজেলাধীন গেড়াখোলা নামক এলাকায় ঢাকাগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে গেলে সেখানে ২২ যাত্রী আহত হয়।

পরে খবর পেয়ে মুকসুদপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে। একই সঙ্গে গুরুতর আহত ৪ জনকে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

কাশিয়ানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজিজুর রহমান ও মুকসুদপুর ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

খুঁটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পুলিশ সদস্যের মৃত্যু

সারাদেশ টুডেঃ সড়কের পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নৌ পুলিশের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।

আজ রবিবার সকালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আফরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মো. সোহেল রানা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার শীতলাই গ্রামের মো. আখের আলীর ছেলে।

এ ব্যাপারে রাজাবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে মোটরসাইকেলে নিজ কর্মস্থল রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় যাচ্ছিলেন সোহেল রানা। আফরা এলাকায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাজার শেষে মেয়েকে নিয়ে আর বাড়ি ফেরা হলো না বাবার

সারাদেশ টুডে


নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বালিবাহী ট্রাকচাপায় আবিদা সুলতানা ইশা নামে এক মাদরাসা ছাত্রী নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহত ইশা উপজেলার কৃষ্ণচর গ্রামের মাওলানা শরিফুল আলমের কন্যা।

আজ মঙ্গলবার (১৮ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে পৌর শহরের উৎরাই বাজারের দক্ষিণ পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, মোটরসাইকেলে করে বাবা ও মেয়ে উৎরাইল বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বালুবোঝাই একটি ট্রাক পিছন থেকে তাদের ধাক্কা দেয়। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শরিফুল আলম ও ইশা সড়কের ওপর পড়ে যান। বালিবাহী ট্রাকটি মেয়েকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ দুর্ঘটনার পরে দুর্গাপুর-শ্যামগঞ্জ সড়কে মালবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ আছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্গাপুর থানার ওসি(তদন্ত) মীর মাহাব্বুর রহমান। তিনি জানান, বালিবাহী ট্রাকটি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এছাড়াও চালককে আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গোপালগঞ্জে বাস-নসিমন সংঘর্ষে ৫ শ্রমিক নিহত

সারাদেশ টুডে


গোপালগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস-নসিমনের সংঘর্ষে পাঁচ শ্রমিক নিহত হয়েছেন।এছাড়া আহত হয়েছেন আরও সাত জন।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলার পোনা বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন, কাশিয়ানী উপজেলার পারুলিয়া এলাকার সিরাজুল মোল্লা (৪০), মিজান (৪৩), বদির (৩০), ও সুমন (২৮)। বাকি একজনের নাম জানা যায়নি।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ফালগুনী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছালে লিংক রোড থেকে হাইওয়েতে ওঠার সময় একটি শ্রমিকবাহী নসিমনের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে মিজান নামে এক শ্রমিক নিহত হন এবং ১১ জন শ্রমিক গুরুতর আহত হন। পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়রা গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে কাশিয়ানী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে বদি ও সুমন মারা যান। গুরুতর আহত ৯ জনকে কাশিয়ানী উপজেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান।

বাস দুর্ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ৪০ শিক্ষার্থী আহত

ইবি প্রতিনিধি


শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরের বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি)শিক্ষক, চালকসহ ৪০শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার বিত্তিপাড়ায় কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘঠে। আহতদের মধ্যে বাস চালকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাস চালককে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় অন্যান্য আহতদের কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, ১২ ফেব্রুয়ারি, বুধবার এগ্রি বিজনেস বিষয়ে ফিল্ড ওয়ার্কের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এমবিএ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মিক্ষার্থীরা নওগাঁ যান। ফিল্ড ওয়ার্ক শেষে নওগাঁ থেকে সন্ধ্যার দিকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে রওনা দেয়। বাসটি কুষ্টিয়ার বিত্তিপাড়া এলাকায় আসলে একটি ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে বিজিবি, পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহতদের উদ্ধার করে।

ইবির চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ড. মো. পারভেজ হাসান জানান, বিভাগের আহত শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গুরতর আহত ৩ জনকে কুষ্টিয়া স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্কুল থেকে বাড়ি ফেরা হলো না ‘অপুর’

ক্যাম্পাস টুডে


কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ফয়েজ অপু (১৬) নামের এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রামের পটিয়ায় উপজেলার আমজুরহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত স্কুল ছাত্র মোসাদ্দেক ইয়াকুবদণ্ডীর মো. মোরশেদ আলমের ছেলে। তিনি উপজেলার ইউনিয়ন কৃষি স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র বলে জানা গেছে।

স্থানীয় রবিউল হোসাইন নামে একজন জানান, “স্কুল শেষে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে চট্টগ্রামমুখী একটি কাভার্ডভ্যান ধাক্কা দেয় অপুকে। সাথে সাথে সে রাস্তায় ছিটকে পড়ে যায়।স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।”

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পটিয়া ক্রসিং থানার ওসি বোরহান উদ্দীন। তিনি জানান, “এই ঘটনায় জড়িত চালককে আটক করা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িও থানা হেফাজতে রয়েছে।”

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়: দুর্ঘটনায় ৭ শিক্ষার্থী আহত, ঢাকায় প্রেরণ ১

কুবি টুডে


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইজি বাইক উল্টে মার্কেটিং বিভাগের সাতজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে কোটবাড়ি-টমছম ব্রিজ সড়কের সাতরা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন- দিপ্ত চৌধুরী, নিগার সুলতানা বৃষ্টি, লিপি আক্তার মুক্তা, সুমাইয়া আক্তার, সায়রা কবির, সাইদুল ইসলাম, এবং শাহরিয়ার কবির আলভি। সকলেই ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

এর মধ্যেদিপ্ত চৌধুরী, নিগার সুলতানা বৃষ্টি এবং লিপি আক্তার মুক্তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। দিপ্তকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং বৃষ্টি ও লিপিকে কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী ফয়সাল ইসলাম বলেন, বিকাল তিনটার দিকে কোটবাড়ি থেকে ইজিবাইকে করে কান্দিরপাড় যাওয়ার পথে সাতরায় মোড় ঘুরানোর সময় ইজি বাইকের গতি না কমানোয় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। এসময় দিপ্ত ইজিবাইকের নিচে চাপা পড়ে। ফলে তার কোমরের হাঁড় ভেঙ্গে যায়।

এসময় ইজিবাইকে থাকা অন্যান্য যাত্রীরা ছিটকে পড়ে যায় এবং বৃষ্টির কাধের হাঁড় ভেঙ্গে যায়। পরে আহতাবস্থায় তাদেরকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে দিপ্ত’র অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে সে ধানমন্ডির গ্রিনলাইফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।