বশেমুরবিপ্রবি: পিছু ছাড়ছে না আন্দোলন, ফের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (বিজিই) বিভাগের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের এর পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৪ টা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে নিজ বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় তাদেরকে দাবি আদায়ের স্বপক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এসময় শিক্ষার্থীরা আবদুল্লাহ আল জোবায়ের এর বিরুদ্ধে অকারণে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান, শিক্ষার্থীদের বাক-স্বাধীনতা হরণ, মানসিকভাবে হয়রানি, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে পরীক্ষার ফলাফলের উপর প্রভাব, ল্যাব প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা, নৈতিক স্থলনসহ বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের করেন।

বিজিই ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সেলিম হোসেন নীল বলেন, “দায়িত্বহীনতা, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী মনোভাব ও স্বৈরাচারী আচরণের জন্য আমরা চেয়ারম্যান স্যারের উপর অনাস্থা জ্ঞাপন করছি। আমরা তার পদত্যাগের একদফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সকল ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে যাবো।”

এব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের বলেন, “আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আমরা শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো শুনতে গিয়েছিলাম কিন্তু তারা আমাদের সাথে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে। বেশ কয়েকবার তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা কোন ধরনের কথা বলতে রাজি হয়নি এবং তারা বলেছে তারা তাদের লিখিত অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করবে।”

তবে তাকে শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি অভিযোগের কথা স্মরণ করে দিলে তিনি বলেন, “কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের সমস্যা চিহ্নিত করে সে ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার।”

দীর্ঘ ৯ বছর পরে কংক্রিটের শহীদ মিনার পেলো বশেমুরবিপ্রবি

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) দীর্ঘ ৯ বছর প্রতীক্ষার পরে কংক্রিটের শহীদ মিনার নির্মাণ করলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে কাঠের একটি অস্থায়ী শহীদ মিনারেই জাতীয় শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাত বিশ্ববিদ্যালয়।

এদিকে এ বছরের ১১ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র আঘাতে অস্থায়ী কাঠের শহীদ মিনারটি ভেঙে লণ্ডভণ্ড হওয়ার পর ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ এবং ‘বিজয় দিবস’ উপলক্ষে এক সপ্তাহে শহীদ মিনারটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মূল ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের টেন্ডার প্রদানের ক্ষমতা না থাকায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে’ শহীদ মিনার’ জাতীয় চেতনার অংশ হওয়ায়ই স্বল্প সময়ে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোঃ শাহজাহান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার প্লানে যে শহীদ মিনারটির নকশা রয়েছে সেটির নির্মাণ কাজ আরো পরে শুরু হবে। আপাতত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে স্বল্প সময়ে এই শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়েছে।’

এদিকে দীর্ঘ ৯ বছর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কংক্রিটের শহীদ মিনার নির্মাণ হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গগত, এর আগে বশেমুরবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু না করেই ২০১৫ সাল থেকে শহীদ মিনারকে নির্মাণাধীন দেখানো হয়েছিল এবং টেন্ডার প্রদানের পূর্বেই ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ১কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছিলো। তবে তখনও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি কাঠের তৈরি ছিল।

বশেমুরবিপ্রবিতে কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ীকরণসহ ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধন

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ীকরণ, বকেয়া বেতন পরিশোধ ও স্থায়ী নীতিমালা প্রনয়ণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।

রবিবার (০৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে তারা উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

মানববন্ধনে মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, দৈনিক স্বল্প মজুরীর ভিত্তিতে আমাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। আমাদের বলা হয়েছিল চাকুরী স্থায়ী করা হবে। কিন্তু দীর্ঘ চার বছর পার হলেও আমাদের চাকুরী স্থায়ী করা হয়নি। এমনকি গত চার মাস ধরে আমাদের বেতনও বন্ধ রয়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের দাবি মেনে না নিলে আমরাসহ আমাদের পরিবারকে বিপদের মুখে পড়তে হবে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত একটি তথ্য উপাত্তে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইউজিসি কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৪ জন স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের জন্য ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বাজেট দেয়া হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীদের জন্য কোন বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ২০১৯ সালের ১২ মার্চে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়।এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীর সংখ্যা কমিয়ে আনার সুপারিশ করা হয় এবং আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে লোক নিয়োগের জন্য অনুরোধ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিট অফিসার ফয়সাল আহমেদ নিরীক্ষিত আরেকটি নথিতে মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীদের ২০১৯ সালের মার্চ মাসের বেতন-ভাতা বাবদ ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫০ টাকা প্রদান করা হয়েছিল। পরবর্তীতেও এই ধারা অব্যাহত ছিল। তবে আগস্ট মাস থেকে তাদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোঃ শাহজাহনের বক্তব্য নিতে গেলে তিনি মিটিংয়ের ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে যোগাযোগ করতে বলেন।

বশেমুরবিপ্রবিতে টানা ৪৮ দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ টানা ৪৮ দিন ধরে ক্লাস বর্জন এবং সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাতেও অংশগ্রহণ করেননি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ইলেকট্রনিকস এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এদিকে গত ২৭ নভেম্বর থেকে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিভাগটির প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের সকল শিক্ষার্থী পরীক্ষা বর্জন করেছেন।

গত ১৭ অক্টোবর থেকে ইটিই বিভাগকে ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিকস ইন্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সাথে একীভূতকরণের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ২৭ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত একাডেমিক ভবনে ইটিই বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘ইটিই’ বিষয়ে চাকরির ক্ষেত্র দিনদিন কমে যাচ্ছে। যেহেতু টেলিকমিউনিকেশন সংশ্লিষ্ট সকল চাকরির ক্ষেত্রেই ইইই কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে এবং ‘ইইই’ বিভাগের সাথে ‘ইটিই’ বিভাগের কোর্স কারিকুলামও প্রায় ৯০% মিলে যায়। তাই ‘ইটিই’ বিভাগের শিক্ষার্থীরা চান তাদেরকে ‘ইইই’ এর সাথে একীভূত করা হোক।

‘ইটিই’ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র কামরুল হাসান জানান, “বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোই তাদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলোতে শুধুমাত্র ‘সিএসই’ এবং ‘ইইই’ এর শিক্ষার্থীদের চায়, এমনকি বিটিসিএলে যেখানে কে প্রাধান্য দেয়ার কথা সেখানেও ‘ইটিই’কে রাখা হয় চতুর্থ পছন্দ হিসেবে। আমরা সর্বত্র অবহেলিত হচ্ছি। আমরা সার্টিফিকেট অর্জন করে বেকারত্বের বোঝা বইতে চাইনা তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহান জানান, “আমি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি এবং তাদের দাবি পূরণ আমার ক্ষমতার বাইরে। তাদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য নতুন উপাচার্য নিয়োগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমি ইতোমধ্যে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।”

প্রসঙ্গত, বর্তমানের ‘ইটিই’ বিভাগটি ২০১১ সালে এপ্লাইড ফিজিক্স এন্ড ইলেকট্রনিক্স (এপিই) হিসেবে যাত্রা শুরু করে, পরবর্তীতে ২০১৪ সালে বিভাগটিকে এপ্লাইড ফিজিক্স, ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইন্জিনিয়ারিং (এপিইসিই) বিভাগে পরিবর্তন করা হয় এবং ২০১৭ সালে ‘ইটিই’তে রূপান্তর করা হয়।

বশেমুরবিপ্রবির কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে নোমানের জানাযা

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি (বিএমবি) বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান এর জানাযার নামাজ বাদ আসর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে সোনাকুড়ে মেস থেকে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় তার মরদেহ ও সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ।


পড়ুনঃ বশেমুরবিপ্রবির ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট ছাত্রের আত্নহত্যা


তার রুম থেকে উদ্ধারকৃত সুইসাইড নোটটি প্রকাশ করা হয়নি। মরদেহ ও সুইসাইড নোট উদ্ধারের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা এবং অন্য শিক্ষকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, নোমানের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়। প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন তিনি।


পড়ুনঃ ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যু


নোমানের বন্ধুরা জানান, সে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কারণে হতাশায় ভুগছিল । তার বন্ধুরা ধারণা করছেন হয়তো হতাশার কারণেই নোমান আত্মহননের পথ বেছে নিতে পারে। তবে আজ তার আচরণ স্বাভাবিক ছিল। মেসের বাজার করেছে। নামাজ পড়েছে। হঠাৎ করে প্রিয় বন্ধুর আত্মহত্যাকে মেনে নিতে পারছেন না তারা।


বশেমুরবিপ্রবি: আত্নহত্যা পছন্দ না করা ছেলেটি নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে ওপারে চলে গেল


এ ব্যাপারে বিএমবি বিভাগের সভাপতি মোঃ লুৎফুল কবির বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনে হতবাক হয়েছি। খুবই মর্মাহত আমরা। ছেলেটি খুব নম্র-ভদ্র ছিলো। হঠাৎ করে এরকম করার কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। ঘটানাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যাদের এড়িয়ে চলবেন

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন মন ও স্বভাবের ব্যক্তির আনাগোনা। আমরা কারো না কারো সাথে, কোনো না কোনো সম্পর্কে জড়িত থাকি। সম্পর্ক হচ্ছে এমন এক মাধ্যম, যা জীবনকে সুখী ও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তবে কিছু কিছু ব্যক্তির সাথে শুধুই ঝগড়া-অশান্তি সৃষ্টি হয়। তাই এসব ব্যক্তির থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। কোন ধরনের মানুষদের এড়িয়ে চলবেন তা জানিয়েছে জীবনধারা বিষয়ক ব্লগ ‘বোল্ডস্কাই’। একনজরে আপনিও দেখে নিতে পারেন।


শুধু ভুল খোঁজে


এমন মানুষ রয়েছে যারা নিজের ছাড়া বাকি সবার ভুলত্রুটি খুঁজে বেড়ায়। এই ধরনের মানুষের সঙ্গে থাকলে শুধু হতাশাই মিলবে।


সব মানুষের প্রতি ঘৃণাভাব


কিছু মানুষ আছে যারা সবার প্রতি ঘৃণা পোষণ করে। সুযোগ পেলেই সমালোচনা করে। পৃথিবীর সব কিছু নিয়েই তাদের সমস্যা। এ ধরনের মানুষদের কাছ থেকে ইতিবাচক কিছু আশা করা বৃথা। তাই এদের এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।


কথা বলার সুযোগ না দেওয়া


কিছু মানুষ কারণে-অকারণে কথা বলতে ভালোবাসে কিন্তু অন্যের কথা শুনতে চায় না। এ ধরনের মানুষ কখনই আপনাকে বোঝার চেষ্টা করবে না। তাই এই প্রকৃতির মানুষদের এড়িয়ে চলুন।


ঋণের প্রবণতা বেশি


কিছু মানুষ অন্যের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়। নির্লজ্জের মতো কথায় কথায় অন্যের দ্বারস্থ হয়। সবশেষে সেই ঋণ শোধ করার কথা তারা বেমালুম ভুলে যায়। এই ধরনের মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা ছাড়া কিছুই পাবেন না। তাই দূরে থাকুন এমন মানুষের কাছ থেকে।


সুসময়ের বন্ধু


কিছু মানুষ শুধু তাদের দরকারে আপনাকে পাশে রাখবে কিন্তু আপনার প্রয়োজনে তাকে পাশে পাবেন না। বিপদে তাকে স্মরণ করলে আপনাকে পিঠ দেখিয়ে কেটে পড়বে এ ধরনের মানুষ।


তুলনা করে


যে মানুষ তার সাবেক সঙ্গীর সঙ্গে প্রতিনিয়ত আপনার তুলনা করে, এমন মানুষকে নিয়ে কখনো সুখী হবেন না। এ ধরনের মানুষ আপনার শান্তি ও আত্মসম্মান নষ্ট করবে।


পেছনে কথা বলা


কিছু মানুষ আছে যাদের মুখে মধু, কিন্তু অন্তরে বিষ। এ ধরনের মানুষ আপনার সামনে হাসিমুখে কথা বললেও আপনার অনুপস্থিতিতে নেতিবাচক কথা রটায়। এ ধরনের মানুষ যদি আপনার জীবনে থাকে তাহলে এখনই সাবধান হন। কেননা এই ধরনের মানুষ আপনার সুনাম ধূলিস্যাৎ করে দিতে পারে।


অন্যান্য বৈশিষ্ট্যর অধিকারী


নারী লোভী অথবা পুরুষ লোভীদের। যারা শুধু নিজের ভালোটাই বুঝে। কিছু হলেই যারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটাতে চায়।

বশেমুরবিপ্রবি: ‘হল প্রভোস্টের গায়ে হাত তোলার হুমকি’ প্রভোস্টের অভিযোগ

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বিজয় দিবস হলের প্রভোস্ট মো. শফিকুল ইসলাম সহ হল প্রশাসনের গায়ে হাত তোলার হুমকি প্রদান করেছে কয়েকজন ছাত্র এমন অভিযোগ করে রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছে বিজয় দিবস প্রশাসন।

গত ২৫ নভেম্বর (সোমবার) রেজিস্ট্রার বরাবর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে লিখিত দরখাস্তে বলা হয়, উক্ত দিন বিকেল সাড়ে ৪ টায় অনুষ্ঠিত এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিজয় দিবস হলে অবৈধভাবে দখলকৃত ১০২ নম্বর রুমটি দখলমুক্ত করার জন্য উক্ত রুমে যায় হল প্রশাসন। উক্ত রুমে থাকা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলার সময় স্বাধীনতা দিবস হলের ছাত্র রাসুল (বাংলা বিভাগ), মিনহাজুল ইসলাম আকাশ (সিএসই বিভাগ), তাহের (সাবেক ছাত্র, গনিত বিভাগ), তারেক (সাবেক ছাত্র, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ) আরও কিছু সংখ্যক ছাত্র নিয়ে উপস্থিত প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টগনের সাথে অশোভন আচরণ, হুমকি-ধমকি ও প্রশাসনিক কাজে বাধা প্রদান করে।

লিখিত অভিযোগপত্রে আরো বলা হয় মিনহাজুল ইসলাম আকাশ, তারেক, তাহের ও রসুলসহ কয়েকজন ছাত্র হল প্রশাসনকে হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয় এবং সকলকে জামাত শিবির বলে উচ্চবাচ্য করে।

ওই সময় গনিত বিভাগের সাবেক ছাত্র তাহের হল প্রভোস্ট মো. শফিকুল ইসলামকে বলেন “অনেক বাড়ছেন, আপনি হল থেকে বের হয়ে যান, না হলে কিন্ত আমরাই আপনাকে বের করে দেব। প্রভোস্টের কি দরকার আমরাই হল চালাব।”

অভিযোগপত্রে আরো বলা হয় সাবেক ছাত্র তারেক হল প্রভোস্ট কে বলেন, “হল থেকে বের হয়ে যান, নাহলে প্রয়োজনে গায়ে হাত তোলা হবে।” এর আগেও এই ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রসাশনিক কাজে বাঁধা প্রদানে অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি বলে অভিযোগ পত্রে জানানো হয়।

অভিযোগ দানকারী শিক্ষক ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ” গত ২৫ নভেম্বর, সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিজয় দিবস হলে অবস্থানরত অবৈধ ছাত্রদের পূর্বের জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি (২০/১১/১৯) অনুসারে হলের ১০২ নাম্বার কক্ষ দখলমুক্ত করতে গেলে কোন রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট পরিচয় বিহীন কয়েকজন ছাত্র প্রভোস্টের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। উক্ত কক্ষে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের দারিদ্র‍তা, একাডেমিক কার্যক্রম এবং পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে তাদেরকে গণরুমে স্থানান্তর করে আবাসিকতা প্রদানে আশ্বাস প্রদান করি। তারা তা উপেক্ষা করে প্রভোস্টের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং দৃঢ়ভাবে কক্ষে অবস্থান করে। কক্ষে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা প্রভোস্ট টিমের গায়ে হাত তোলা, এমনি হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়।”

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম আকাশ জানান, ” আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম এটা সত্য তবে, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট।”

অভিযুক্ত তারেক নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “বিজয় দিবস হল কর্তপক্ষ বিনা নোটিশে ১০২ নং কক্ষে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের কক্ষ থেকে নেমে যেতে বললে আমি কক্ষে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলি। তবে, হল কতৃপক্ষের সাথে কোন ধরণের অসৌজন্যমূলক আচরণ করি নি। আর আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বলেন, “আমরা একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছি, মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর আসলে তাকে অবহিত করব।”

৬ মাসেও জ্ঞান ফেরেনি, কেমন আছে মুন্নি?

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ গোপালগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা গেছে, মুন্নি বিছানায় শুয়ে আছেন। ওঠা-বাসা বা খাওয়ার শক্তি নেই। অজ্ঞান অবস্থায় থাকায় স্যালাইনের নলের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে তরল খাবার। শরীর হয়েছে পড়েছে কঙ্কালসার।

ভুল চিকিৎসায় জ্ঞান হারানোর পর ছয় মাস পার হয়েছে, এখনো জ্ঞান ফেরেনি মরিয়ম সুলতানা মুন্নির। বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করালেও কোনো উন্নতি না হওয়ায় তিন মাস আগে মুন্নিকে গোপালগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ভাড়া বাসায় নেয়া হয়। ওই বাড়িতে জীবন্মৃত হয়ে আছেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের মো. মোশারফ হোসেন বিশ্বাসের মেয়ে মরিয়ম সুলতানা মুন্নি।

মুন্নির বাবা মো. মোশারফ হোসেন বিশ্বাস বলেন, সদর হাসপাতালে ওই ঘটনার (ভুল ইনজেকশন পুশ) পর মুন্নিকে খুলনার আবু নাসের হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিক‌্যাল কলেজ ও শমরিতা হাসপাতালে তিন মাস ধরে চিকিৎসা দেয়া হয়। এতে কোনো উপকার হয়নি। ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। টাকার অভাবে ঢাকায় চিকিৎসা করাতে না পারায় তিন মাস আগে জেলা শহরের ভাড়া বাসায় নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে ডা. কাজী দীন মোহাম্মদের পরামর্শে কোনোরকমে চিকিৎসা চলছে মুন্নির।

তিনি বলেন, কবে আবার আমার মেয়েটা ভালো হবে, সে অপেক্ষাতে আছি। মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু ভুল চিকিৎসার কারণে সে স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।

মুন্নির মা হাজেরা বেগম বলেন, “এখন আর মেয়ের দিকে তাকাতে পারি না। কতদিন হল মা ডাক শুনতে পারিনি। যে মেয়ে সারা দিন বাড়ি মাতিয়ে রাখত, সেই মেয়েই এখন বিছানায় শুয়ে থাকে। যারা আমার মেয়ের ভুল চিকিৎসা করেছে, তাদের বিচার চাই।”

মুন্নিকে ভুল ইনজেকশন (চেতনানাশক) দিয়ে অজ্ঞান করার মামলায় তার চাচা জাকির হোসেন বিশ্বাস বাদী হয়ে ডা. তপন কুমার মন্ডল, নার্স শাহানাজ পরভীন ও কুহেলিকাকে অভিযুক্ত করে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বর্তমানে আসামিরা জামিনে আছেন।

এ মামলায় প্রধান আসামি ডা. তপন কুমার মন্ডলের নাম বাদ দিয়ে দুই নাসর্কে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। মুন্নির পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ কারো সঙ্গে কথা না বলে এ চার্জশিট দাখিল করে।

মামলা বিষয়ে মুন্নির বাবা বলেন, “আমার ছোট ভাই জাকির হোসেন বিশ্বাস ডাক্তারসহ তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ কারো সাথে কোনো কথা না বলে তদন্ত ছাড়াই ডা. তপন কুমার মন্ডলের নাম বাদ দিয়ে দুই নার্সকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এ নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বললে তিনি জানান, চাপে আছেন, সেজন্য তাড়াতাড়ি চার্জশিট দিয়েছেন। আমি নতুন করে তদন্ত শেষে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।”

মুন্নির চাচা ও মামলার বাদী জাকির হোসেন বিশ্বাস জানান, “এ ঘটনার পর ডা. তপন কুমার মন্ডল, নার্স শাহানাজ ও কুহেলিকাকে অভিযুক্ত করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। বর্তমানে আসামিরা জামিনে আছেন। আমরা সুষ্ঠু বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানাই।”

গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. অসিত কুমার মল্লিক বলেন, পুলিশের চার্জশিটে ডা. তপন কুমার মন্ডলকে বাদ দিলেও ওই দুই নার্সকে আসামি করা হয়েছে। বর্তমানে ওই দুই নার্স সাসপেন্ড আছে। ডা. তপন কুমার মন্ডলের সাসপেন্ড হবার কথা থাকলেও এখনো হননি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানার উপ-পরিদর্শক মুকুল হোসেন বলেন, তদন্তে এ ঘটনায় ডা. তপন কুমার মন্ডলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। দুই নার্স শাহানাজ ও কুহেলিকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদেরকে আসামি করে এবং ডা. তপন কুমার মন্ডলের নাম বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পিত্তথলির পাথর অপসারণে গত ২০ মে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মুন্নিকে। ২১ মে সকাল ১০টায় মুন্নির অস্ত্রোপচারের সময় নির্ধারণ করা হয়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নার্স ভুল করে অজ্ঞান করার ইনজেকশন দেন। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মুন্নি। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে খুলনা আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

ঘটনার পরপরই গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২৬ মে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত দুই নার্সকে সাময়িকভাবে চাকরিচ্যুত করে। তবে তদন্ত কমিটি ভুল চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডা. তপন কুমার মন্ডলের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি।

উল্লেখ্য, সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্রী মুন্নি। পড়াশোনা নিয়ে যার ব‌্যস্ত থাকার কথা ছিল, তিনি আজ বিছানাবন্দি। চঞ্চল যে তরুণী বাড়ি মাতিয়ে রাখতেন, আজ তার ওঠা-বসার শক্তিও নেই। ভুল চিকিৎসায় তার বেঁচে থাকা নিয়েই সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষকের শাস্তি চেয়ে মানববন্ধন, বিচার না হলে আন্দোলনের হুশিয়ারি

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক বিদেশি ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. হুমায়ুন কবিরের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে কৃষিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বিভিন্ন প্রতিবাদী প্লাকার্ড হাতে নিয়ে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত হুমায়ুন কবিরের শাস্তি চেয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

এ সময় কৃষিবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইয়ামিন হোসেন বলেন,।”আমরা সুমি সিং কতৃক কল রেকর্ডিংসহ বেশকিছু প্রমাণ পেয়েছেি যা হুমায়ুন কবির স্যারের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ করে। যার কারণে আমরা চাই এ ঘটনায় হুমায়ুন কবির স্যার তার জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রসাশনের নিকট একটু লিখিত জবাব প্রদান করুন এবং তিনি যদি জড়িত হন তবে তার শাস্তির দাবি জানাই।

তিনি আরও জানান, আগামী ২৫ নভেম্বরের মধ্যে যদি আমরা উক্ত ঘটনার বিচারের কোন অগ্রগতি না পাই তাহলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।”

মানববন্ধনে কৃষিবিজ্ঞান বিভাগের নেপালি শিক্ষার্থী পুনম যাদব জানান, “সুমি সিং এর সাথে যে অস্বস্তিকর ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষ বিচার করতে হবে এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বিপক্ষে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পরবর্তীতে কোন বিদেশি শিক্ষার্থী এবং কোন শিক্ষার্থীদের যেন এহেন যৌন হয়রানির শিকার না হতে হয় সেজন্য প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি আরো বলেন শিক্ষক সমাজ জাতির পথপ্রদর্শক তাদের উচিত দেশ কালের সীমা ছাড়িয়ে শিক্ষাকতার মহত্ত্বকে উজ্জীবিত করা। এহেন ঘটনায় আমরা অনিরাপত্তায় ভুগছি এবং আমাদের অভিভাবকরা ও দুঃচিন্তা করছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, “আগামীকাল নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের একটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। অপরাধীর কোন পরিচয় নেই সে যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে এবং উপযুক্ত বিচার করা হবে। এক্ষেত্রে কোন কম্প্রোমাইজ করা হবে না।”

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

বশেমুরবিপ্রবি: পরীক্ষা দিচ্ছেন না দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ আগামী ২৭ নভেম্বর তাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। আর গত ১৪ নভেম্বর ছিল ফরম পূরণের শেষ দিন। কিন্তু এ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ইলেকট্রনিক অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের কোন শিক্ষার্থীই ফরম পূরণ করেননি।

এদিকে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণ না করে বিভাগ পরিবর্তনের এক দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষতির মুখে পড়বেন জেনেও তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত ইটিই বিভাগের ১৫৮ জন শিক্ষার্থী।

গত ২৭ অক্টোবর থেকে শ্রেণিকক্ষের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন ইটিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে ইটিই বিভাগের চাকরির বাজারে বর্তমান অবস্থান এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইটিইর বিলুপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বিভাগ পরিবর্তন করে এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তারা। কিন্তু টানা ২৪ দিন পার হয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

কেন ইটিই বিভাগের রূপান্তর চান? এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা জানান, ইইই বিভাগের সিলেবাসের সঙ্গে ইটিই বিভাগের সিলেবাসে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মিল রয়েছে। তা সত্ত্বেও চাকরিক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে ইটিই বিভাগের শিক্ষার্থীদের। পিএসসি’র নেয়া বিসিএস পরীক্ষায় ইটিই বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র কোনো সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়নি। সেজন্য ইইই বিভাগের প্রণীত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়।

এ ব্যাপারে ইটিই বিভাগের চেয়ারম্যান ও উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, “ইটিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে। আমি তাদেরকে ক্লাসে ফেরাতে চেষ্টা করেছি। সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ইটিই বিভাগ চলমান রয়েছে। ওই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি পাস করে চাকরি পায় তাহলে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাবে না কেন।”

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।