‘এরা শুধু শিক্ষক সমাজকে নয়, সমস্ত জাতিকে কলঙ্কিত করেছে’: হুমায়ুন কবির

‘এরা শুধু শিক্ষক সমাজকে নয়, সমস্ত জাতিকে কলঙ্কিত করেছে’: হুমায়ুন কবির

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ অফিস আদেশ উপেক্ষা করে ভ্রমণে ব্যস্ত থাকাসহ বিভাগের শিক্ষার্থীদের নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠা বাংলা বিভাগের প্রভাষক জয়নাব বিনতে হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয় কলঙ্কমুক্ত করার আহবান করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সহকারী প্রক্টর ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. হুমায়ুন কবির।

তিনি আরও বলেন, “এরা শুধু শিক্ষক সমাজকে নয়, সমস্ত জাতিকে কলঙ্কিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যে পরিণত করেছে।”

বুধবার সমকাল পত্রিকার অনলাইনে ‘শিক্ষার্থীদের নাম্বারপত্র হারিয়ে ফেলেছেন শিক্ষক!’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে হুমায়ুন কবির একটি ফেসবুক গ্রুপে তার মন্তব্যসহ সংবাদের লিংকটি শেয়ার করেন।

প্রকাশিত সংবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, “শিক্ষক জয়নাব বিনতে হোসেন চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার বিষয়ে ছুটি নিয়েছিলেন। অফিস আদেশে বলা হয়েছিলো চিকিৎসা শেষে পুনরায় কর্মস্থলে যোগদানের কথা। কিন্তু নিধার্রিত ছুটি শেষ হলেও তিনি কর্মস্থলে যোগদান না করায় সাবেক ভিসির পরামর্শক্রমে ওই শিক্ষককে অবৈতনিক ‘অসাধারণ ছুটি’ -তে পাঠানো হয়।”

এদিকে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ২য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের মৌখিক পরীক্ষার নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

বাংলা বিভাগের ওই বর্ষের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা পরীক্ষা যথাযথ সময়ে দিয়েছি। এতদিন পরে এসে জানতে পারলাম শিক্ষক জয়নাব বিনতে আমাদের নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলেছেন। এখন আমরা ফলাফল নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগটির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, জয়নাব বিনতে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার বিষয়ে ছুটি নিয়ে পাহাড়-পর্বতে আরোহণসহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে ব্যস্ত রয়েছেন। এছাড়া তিনি বিভাগে থাকাকালীন সময়ে ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়ে উদাসীন ছিলেন। ক্লাস না নিয়েই তিনি দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতেই পছন্দ করেন। পরীক্ষার নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলা তার পক্ষে অসম্ভব কিছু না।

নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম গোলাম হায়দার বলেন, “বিষয়টি একজন শিক্ষকের কাছ থেকে মোটেও কাম্য নয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিবো।”

এদিকে চিকিৎসার কথা বলে ভ্রমণের বিষয়টি অস্বীকার করে শিক্ষক জয়নাব বিনতে হোসেন বলেন, “আমি পাহাড়-পর্বতসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈতনিক ছুটি নিয়ে ঘুরেছি। এছাড়া গবেষণার জন্য আমাকে শিক্ষা ছুটি না দেয়ায় বাধ্য হয়ে অবৈতনিক ছুটি নিয়েছি। তবে গবেষণার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। অপরদিকে নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলার বিষয়ে তিনি বলেন, “বিভাগের সাবেক সভাপতি সবকিছুর দায়িত্বে ছিলেন। তিনিই এই বিষয়ে জানেন। আমি কিছু বলতে পারব না।”

এ দিকে বিভাগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, “আমি ব্যস্ত থাকায় শিক্ষক জয়নাব বিনতে হোসেনকে মৌখিক পরীক্ষার দায়িত্ব দিয়েছিলাম কিন্তু তিনি পরীক্ষা শেষে আমার কাছে বা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে নম্বরপত্র প্রদান করেননি। পরবর্তীতে তিনি মৌখিকভাবে জানান নম্বরপত্র হারিয়ে গিয়েছে।”

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *