ড. জোহার মৃত্যুদিবসকে শিক্ষক দিবস ঘোষণার দাবি
![ড. জোহার মৃত্যুদিবসকে শিক্ষক দিবস ঘোষণার দাবি](https://thecampustoday.com/wp-content/uploads/2021/02/kkho_700x390.jpg?v=1613547631)
রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রক্টর ড. শহীদ শামসুজ্জোহার মৃত্যুদিবসকে (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনে রাবি সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) আয়োজনে ‘ড. জোহা : ছাত্র-শিক্ষক সম্প্রীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই দাবি জানানো হয়।
সভায় ড. জোহার অবদানকে স্বরণ করে তাঁর মৃত্যুদিবসকে শিক্ষক দিবস হিসেবে জাতীয়করণ করতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আলোচকরা।
অনুষ্ঠানে ১৯৬৯ সালের ছাত্র আন্দোলনের ততকালীন ছাত্রনেতা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন প্রামাণিক বলেন, ‘১৯৬৯ সালটি ছিল যুগান্তকারী একটি সময়। যখন ছাত্রদের দাবির স্বপক্ষে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে বন্দুকের নলের ডগায় দাড়িয়েছিলেন। ছাত্রদের দাবি অক্ষুণ্ণ রাখতে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি বলেন, ছাত্র-শিক্ষক পিতা পুত্রের ন্যায়। পিতা পুত্রের রক্ত যখন এক সঙ্গে বয় তখন সেখানে বিদ্রহ শুরু হয়। ঠিক এই কাণ্ডটাই সেদিন ঘটেছিল। পিতা-পুত্রেই সেই রক্তের ধারা গোটা পৃথিবীকে বিস্ফরিত করেছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আজ ড. জোহাকে আমরা তাঁর মর্জাদাটুকু দিতে পারি নি। আজও জোহার মৃত্যুদিবস শিক্ষক দিবস হিসেবে শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েই পালিত হয়। আমরা এই দিবসকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে জাতীয়করণ করার দাবি জানাই।
রাবিসাস’র সাবেক সভাপতি আহমদ সফি উদ্দিন বলেন, শিক্ষক যখন প্রশাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তখন ছাত্র-শিক্ষক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। যাঁরা এই দ্বন্দ্বকে অতিক্রম করতে পেরেছেন তাঁরাই শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। ড.জোহা ছিলেন তেমনই একজন। ড. জোহার মৃত্যু সারাদেশের মানুষের মধ্যে আন্দোলনের এক দাবানল সৃষ্টি করে যাকে আমরা উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান বলি। যে আন্দোলন স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করেছে। ড. জোহা ছাত্রদের জন্য যেমন আত্মোৎসর্গ করেছেন তেমনি ছাত্ররাও প্রিয় শিক্ষকের হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ছাত্র ও শিক্ষকের এই যে সম্প্রীতির বন্ধনের দৃষ্টান্ত, সে হিসেবে আমরা জোহা স্যারের মৃত্যুদিবসকে জাতীয় শিক্ষক দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছি তা আসলে হওয়া উচিত ‘ছাত্র-শিক্ষক সম্প্রীতি দিবস’। এই দৃষ্টান্তকে মনে-প্রাণে গ্রহণ করতে পারলে বর্তমান সময়ে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে যে প্রাচীর তা ভেঙ্গে ফেলা সম্ভব হবে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘জোহা স্যারের অবদানের কথা আমরা সবাই জানি। তারঁ মত দায়িত্ববান প্রক্টর ইতিহাসর আর আসবে কি জানি না। তিনি ছিলেন শিক্ষার্থীবান্ধব, শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে বদ্ধপরিকর। ছাত্রদের জীবন বাঁচাতে তিনি নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করতে দ্বিধা করেন নি। আমরা তার অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করি।’
রাবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খান এবং সদস্য রাজিয়া সুলতানা পারুলের যৌথ সঞ্চালায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম খান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুন আব্দুল কাইউম, রাজশাহী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি মুস্তাফিজ রনি, রাবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশুসহ রাবিসাসের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাবিসাসের সভাপতি শাহীন আলম। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ‘হ্যালো রাজশাহী ম্যাংগো’।