নাস্তিক অপবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীকে সমাজচ্যুত ; শিবিরের মামলা দেওয়ার হুমকি

নাস্তিক অপবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীকে সমাজচ্যুত ; শিবিরের মামলা দেওয়ার হুমকি

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নটরডেম কলেজে লেখাপড়া করা জুয়েল খান নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীকে খ্রিস্টান/নাস্তিক অপবাদ দিয়ে তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের এই শিক্ষার্থী হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলে থাকতেন।

জানা যায়, ‘মাসুদ তাকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘তুই খ্রিস্টান কলেজে (ঢাকার নটরডেম কলেজ) লেখাপড়া করেছিস। এ ছাড়া তুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় লেখাপড়া করেছিস। নটরডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বাংলায় লেখাপড়া করে তারা নাস্তিক। তুইও নাস্তিক।’

চার মাস ধরে ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের কাউকে সমাজের কারও সাথে মিশতে দেওয়া হয় না। সমাজের সবাইকে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।এ ঘটনার তদন্তে গিয়ে সত্যতাও পেয়েছে পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তারফপুর ইউনিয়নের পাথালিয়াপাড়া গ্রামে। কারা এ ঘটনায় জড়িত এবং বর্তমান ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের কি অবস্থা এ সবের সকল সত্যতা এখন প্রকাশ্য গণমাধ্যমে।

ভুক্তভোগী জুয়েল খান জানান, বাড়ির সীমানা নিয়ে আমার পরিবারের সঙ্গে চাচা আবদুর রশিদ খানের ছেলে শরিফুল ইসলামের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের জের ধরে গত ১ মে শরিফুল ইসলামের লোকজন লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের মারপিট করে। শরিফুল ইসলাম প্রথমে লাঠি নিয়ে আমার উপর আঘাত করে।

আরও পড়ুন

প্রেম করে সম্মতিতে সহবাস করলে কী হবে?

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে স্থানীয় মসজিদের অনারারি মুয়াজ্জিন মাসুদ মিয়া শরিফকে সহযোগিতা করে। আমি সরে গেলে লাঠির আঘাত আমার নানির গায়ে পড়ে। উনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে তাকে স্থানীয় মেডিকেলে চিকিৎসা করানো হয়। মূলত এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে খ্রিস্টান/নাস্তিক অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তারফপুর ইউনিয়নের পাথালিয়াপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে তিনি। ৪০তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায়ও অংশ নিয়েছেন।

আরও পড়ুনদুই সেমিস্টার এক করে বছরে একটি পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে: ঢাবি উপ-উপাচার্য

রাজধানী ঢাকার খ্রিস্টান মিশনারী পরিচালিত ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন জুয়েল খান। স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন মাসুদ মিয়া প্রথমে তাকে নাস্তিক/খ্রিস্টান বলে অপবাদ দিয়েছে জানিয়ে জুয়েল খান বলেন, মাসুদ মিয়া প্রথমে আমাকে খ্রিস্টান/নাস্তিক বলে অভিযোগ করে।

এ সময় নাস্তিকের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুমকি দেন তিনি। এ ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন শরিফুল ইসলাম, আবদুল বাছেদ মিয়া, রমজান আলী, আবদুল লতিফ, তারিকুল ইসলাম ও লিটু আনাম। এ ঘটনায় শরীফুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের নামে মির্জাপুর থানায় মামলা করেছেন জুয়েল খান।

এ মামলায় তিনিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ১১ জন ব্যক্তি সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন। মামলাসহ ঘটনার সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা মঞ্চ নামে একটি সংগঠন এগিয়ে এসেছেন বলে জানা গেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *