সরকারের কাছে শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রী ইন্টারনেট ও ঋণ সুবিধা চায় ইউজিসি

সরকারের কাছে শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রী ইন্টারনেট ও ঋণ সুবিধা চায় ইউজিসি

টিসিটি ডেস্ক


অনলাইন শিক্ষাকে ফলপ্রসূ করতে ও অনলাইন শিক্ষায় বৈষম্য দূরীকরণের জন্য উচ্চশিক্ষা গ্রহণরত ২৮ লাখ ছাত্রছাত্রীর জন্য সরকারের কাছে ‘ফ্রি ইন্টারনেট’ ও ‘ব্যাংক ঋণ’ সুবিধা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

দেশের উচ্চশিক্ষার দেখভালকারী এ প্রতিষ্ঠান করোনাকালে উচ্চশিক্ষা গ্রহণরতদের অনলাইন পাঠ গ্রহণের সুবিধার জন্য এই সুবিধা চেয়েছে। অনলাইন সামগ্রী কিনতেই মূলত ঋণসুবিধা চাওয়া হয়।

তারা মনে করেন, দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীরা সুদমুক্ত অথবা স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ পেলে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়ে তাদের শিক্ষাজীবন নির্বিঘ্ন রাখতে পারবে।
ইউজিসি সূত্র জানায়, অনলাইনের বাইরে থাকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে টানতে ইউজিসি থেকে দুটি প্রস্তাব লিখিতভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এতে ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও স্মার্ট ফোনসহ অন্যান্য অনলাইন সামগ্রী কিনতে সহজ ঋণের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহে ইউজিসি থেকে এ প্রস্তাব পাঠানো হয়।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। শিক্ষা কার্যক্রমকে চালিয়ে নিতে আমরা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বারোপ করছি। ইতোমধ্যে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন শিক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষেই ইন্টারনেটের ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট প্রদান অথবা স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনাপরবর্তী সময়ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে। শিক্ষার্থীদের স্বল্প ব্যয় বা বিনামূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ সুবিধা দেওয়া যায় কিনা তা নিয়ে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। দ্রুত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জানা যায়, করোনাভাইরাসের প্রভাবের ফলে বর্তমানে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ২৮ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনার বাইরে। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে অনলাইনে ক্লাস শুরুই করতে পারেনি অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলো। গত ২৫ জুন ইউজিসির সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় ৪৬ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করতে সম্মতি জানিয়েছেন। তার ভিত্তিতে গত ৩০ জুন ইউজিসি থেকে দুটি প্রস্তাব উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে শিক্ষার্থীদের ফ্রি ইন্টারনেট প্রদান ও যাদের স্মার্ট ফোন নেই তাদের জন্য ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।

ইউজিসি সূত্র বলছে, অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেছেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। সেই প্রস্তাব আমলে নেয় ইউজিসি। এ ছাড়া অনলাইন ক্লাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সার্বিক পরিস্থিতি ও সক্ষমতাসহ বিভিন্ন বিষয় জানতে একটি জরিপ চালায় ইউজিসি। সেখানে ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ডিভাইস রয়েছে বলে জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে। ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর হাতে স্মার্ট ফোন বা অন্য কোনো ডিভাইস নেই। এ কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি ইন্টারনেট প্যাকেজ এবং স্মার্ট ফোন কিনতে সহজ শর্তে অর্থ ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে ইউজিসি।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, করোনার এই সময়ে শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা থাকলেও তা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। তবে এই করোনা পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে তা এখনও অনিশ্চিত।

সূত্র: সমকাল

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *