এইচএসসি অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র এসাইনমেন্ট ২০২২

এইচএসসি অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র এসাইনমেন্ট ২০২২

এইচএসসি অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র এসাইনমেন্ট ২০২২, ২য় সপ্তাহের প্রশ্ন সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাওশি) অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.dshe.gov.bd -এ প্রকাশিত হয়েছে যা শুধু মাত্র ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য । HSC Economics 2nd Paper Assignment 2nd Week Answer 2022. একটি টেকসই পরিবেশ বান্ধব কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের রূপরেখা প্রস্তুতকরণ

এইচএসসি অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র এসাইনমেন্ট ২০২২ / HSC Economics 2nd Paper Assignment

একটি টেকসই পরিবেশ বান্ধব কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের রূপরেখা প্রস্তুতকরণ

শিখনফল/বিষয়বস্তুঃ
বাস্তবচিত্র, ঘটনা ও তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশের কৃষিখাতে শস্য উৎপাদন, মৎস চাষ, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি প্রতিপালন, চিংড়ি ও মাশরুম চাষ, বন ও নার্সারি স্থাপনের পরিবর্তনের ধারা ব্যাখ্যা করতে পারবে।

বাংলাদেশের কৃষিতে পরিবেশ দূষণ, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব চিহ্নিত করে বিদ্যমান সংকট উত্তরণ এবং অভিযোজনের উপায় অনুসন্ধাণ করতে পারবে।

বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে পারমানবিক শক্তি, বায়োটেকনোলজি পদ্ধতি এবং আইসিটি ব্যবহারের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে পারবে। কৃষি উন্নয়নে গৃহীত নীতি ও কর্মসূচির প্রতি সমর্থন দানে উদ্বুদ্ধ হবে।

নির্দেশনা/সংকেতঃ
বাংলাদেশের কৃষিরপরিবর্তনের ধারা।
• জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট উত্তরণে অভিযোজনের উপায় অনুসন্ধান
• কৃষিতে পারমানবিক শক্তি, জৈব প্রযুক্তি, আইসিটি এর ব্যবহারের সুফল
• কৃষি উন্নয়নে কৃষি প্রযুক্তি, সরকারের গৃহীত নীতি ও কর্মসূচির সাফল্য মূল্যায়ন।

এইচএসসি অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র এসাইনমেন্ট ২০২২ নমুনা উত্তর / HSC Economics 2nd Paper Assignment Answer

একটি টেকসই পরিবেশ বান্ধব কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের রূপরেখা প্রস্তুতকরণ

বাংলাদেশ কৃষি পরিবর্তনের ধারাঃ

বাংলাদেশ কৃষি খাতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। স্বাধীনতার পর কৃষি উৎপাদন যোগ্য ভূমির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় নি অথচ প্রতিমুহূর্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে খাদ্য গ্রহণকারীর সংখ্যা। বিদ্যমান কৃষিজমিতে বসতবাড়ি নির্মাণ এবং নগরায়নের ফলে কৃষি উৎপাদন যোগ্য ভূমির পরিমাণ ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও কৃষি উৎপাদনে বাংলাদেশের সফলতা ঈর্ষণীয়।

শস্য উৎপাদনঃ বাংলাদেশে উৎপন্ন শস্য সমূহকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- ১।খাদ্যশস্য এবং ২।অর্থকরী শস্য। খাদ্যশস্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো -ধান, গম, ভুট্টা, আলু, ডাল, তৈলবীজ, মসলা, ফলমূল-শাকসবজি ইত্যাদি। পক্ষান্তরে অর্থকরী শস্য হল -পাট, তুলা, রাবার, চা, তামাক, রেশম প্রভৃতি।

একটি টেকসই পরিবেশ বান্ধব কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের রূপরেখা প্রস্তুতকরণ

সনাতনী বীজ, সার, সেচ ও চাষাবাদের পরিবর্তে বর্তমানে উদ্ভাবিত নতুন নতুন জাতের ও উফশী বীজের ব্যাপক ব্যবহার, পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর বাহিত লাঙ্গল, শস্য মাড়াই যন্ত্র, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক, যন্ত্রনির্ভর পানি সেচ ব্যবস্থা, শস্য বহুমুখীকরণ, নিবিড় চাষাবাদের মাত্রা ও আওতা বৃদ্ধি, পতিত জমিতে সবজি চাষ ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির হারের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। গত এক দশকে এ দেশে কৃষি জমির পরিমাণ না বাড়ালেও সবজি আবাদি জমির পরিমাণ বেড়েছে পাচঁ শতাংশ হারে। এ হার বিশ্বের সর্বোচ্চ (FAO)।গত এক যুগে দেশে মাথাপিছু সবজির ভোগ বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ।

বর্তমানে এদেশে ১ কোটি ৬২ লাখ কৃষক পরিবার রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সারাদেশে ২৪ টি দানা শস্য বীজ উৎপাদন খামার, ২ টি পাট বীজ উৎপাদন খামার, ২ টিআলু বীজ উৎপাদন খামার, ৪টি ডাল ও তৈল বীজ উৎপাদন খামার, ২ টি সবজি বীজ উৎপাদন খামার ও ১১১ টি চুক্তিবদ্ধ চাষি জোনের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সারাদেশে ৭৫ টি চুক্তিবদ্ধ চাষি জোনের আওতায় চাষী সংখ্যা ৯১,৪৮৭ থেকে বৃদ্ধি করে ৩,৯৮,৩২৭ জনে উন্নতি করা হয়েছে।

এইচএসসি অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র এসাইনমেন্ট ২০২২

মৎস্য চাষঃ নদীমাতৃক বাংলাদেশে। ধান ও মাছের প্রাচুর্য ছিল বলেই একসময় আমাদেরকে বলা হতো মাছে ভাতে বাঙালি। বিভিন্ন সময়ে ধানের উচ্চ ফলনশীল বীজ আবিষ্কার হলেও মাছের ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। তাছাড়া জনাধিক্যের কারণে বাংলাদেশের মানুষ পাচ্ছেনা সঠিক মাত্রায় খাদ্য ও পুষ্টি। মাছ পুষ্টিকর আমিষ জাতীয় খাদ্য। বাংলাদেশের মানুষের প্রতিদিন গড়ে প্রোটিনের পরিমাণ ৬২.৫২ গ্রাম।

আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৫৮ শতাংশ আসে মৎস্য হতে। মাছের এই বিপুল চাহিদা পূরণ করতে হলে প্রয়োজন সঠিক পদ্ধতিতে মাছের চাষ। পারিবারিক এবং বাইরে চাহিদা মেটানোর জন্য ঘরের কাছের খালি জায়গাটুকুতে অনায়াসে মৎস্য খামার গড়ে তোলা যায়,।এর ফলে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর করা সম্ভব হবে অন্যদিকে নিজের সহ পারিবারিক অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জনে সহায়ক হবে। প্রত্যেকের বাড়ির আশেপাশের ডোবা পুকুর এবং গ্রাম পর্যায়ের জলাশয়গুলো মাছ চাষের আওতায় আনা সম্ভব হলে দেশ হবে উপকৃত এবং দূর হবে বেকারত্ব।

গবাদিপশু প্রতিপালনঃ বাংলাদেশের গবাদি পশু হলো গৃহপালিত পশু। যেসব পশুকে অল্প খরচে গৃহে পালন করে প্রয়োজনীয় উপকার করা যায়, সেসব পশুকে গৃহপালিত পশু বলা হয়।সাধারণভাবে গৃহপালিত পশুর মধ্যে গরু, ছাগল, ভেড়া এবং মহিষের নাম গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া রয়েছে উন্নত জাতের কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি।

ধনী দেশে মানুষ গৃহে হরিণ পর্যন্ত পর্যন্ত থাকেন।সাধারণভাবে গরু ছাগল ভেড়া এবং মহিষ লালন পালন করে আমাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ অনেক অনেক উপকার পাচ্ছেন। কারণ সস্তা এবং সহজে দুধ ও মাংস পাবার অন্যতম উপায় হলো এসব গবাদিপশুর লালন-পালন করা। আমাদের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গবাদিপশুর গুরুত্ব অপরিসীম।

হাঁস মুরগির প্রতিপালন: ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে আমিষ জাতীয় খাদ্য ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পুষ্টির অভাবে মানসিক বিকাশ বিঘ্নিত হচ্ছে দেশের অগণিত শিশুর। আমিষের এ অভাব মেটাতে হাঁস-মুরগি পালনের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রধান বিশেষ জরুরী। এছাড়া বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

একটি টেকসই পরিবেশ বান্ধব কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের রূপরেখা প্রস্তুতকরণ

আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে কাজে লাগিয়ে সঠিক পরিকল্পনায় হাঁস-মুরগী খামার স্থাপনের মাধ্যমে হাঁস-মুরগী পালন লাভজনক করে তোলা যায়। তাই বাংলাদেশে উন্নত জাতের হাঁস মুরগি পালনে জনগণের উৎসাহ দিন দিন বেড়ে চলেছে।

হাঁস-মুরগি পালনের জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া বেশ উপযোগী। সরকার ও জনগণকে উন্নত জাতের হাঁস মুরগি পালনের সার্বিক সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। পারিবারিকভাবে হাঁস-মুরগি পালনের ফলে পরিবারের অল্প বয়সী ছেলে-মেয়ে, যুবক-যুবতী, এমনকি বুড়ো-বুড়িরা ও তাদের অবসর সময় কিছু না কিছু কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারে। এছাড়া হাঁস মুরগির সাথে কবুতর, কোয়েল, ময়ূর, উট পাখি পালনও বেশ লাভজনক।

চিংড়ি চাষঃ চিংড়ি বাংলাদেশ একটি অর্থকরী সম্পদ। প্রতি বছর বিদেশে চিংড়ি রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করা হয়। চিংড়ির বাজার বললে আন্তর্জাতিক বাজার বুঝায়। পৃথিবীর প্রায় ৬০ টি দেশে বাংলাদেশের চিংড়ি রপ্তানি হয়ে থাকে। আমাদের দেশে সাধারণ মাছের তুলনায় রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি মাছের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বিভিন্ন পদ্ধতিতে চিংড়ি মাছ কে বিশ্ববাজারে পাঠানো হয়ে থাকে যেমনঃ ১.ঠান্ডা জমানো চিংড়ি, ২.শুকনো চিংড়ি, ৩.টিনের প্যাকিং করা চিংড়ি এবং ৪.গুঁড়ো করা চিংড়ি।

এইচএসসি অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র এসাইনমেন্ট ২০২২

দেশে প্রচলিত চিংড়ি চাষ পদ্ধতি চার প্রকার যেমনঃ সনাতন পদ্ধতি, উন্নত হালকা পদ্ধতি, আধা-নিবিড় এবং নিবিড় পদ্ধতি। সনাতন পদ্ধতিতে পুঁজি বিনিয়োগ কম প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ১২০-১৫০ কেজি।নিবিড় পদ্ধতিতে পুঁজি ও ঝুঁকি অধিক উৎপাদনও প্রতি হেক্টরে ৫-১০ টন।

মাশরুম চাষঃ মাশরুম হলো একপ্রকার ভক্ষণযোগ্য মৃতজীবী ছত্রাকের ফলন্ত অঙ্গ। বিশ্বের প্রায় ৩ লক্ষ প্রজাতির ছত্রাক চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু যেসব ছত্রাক সম্পূর্ণ খাওয়ার উপযোগী, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু শুধুমাত্র সে গুলোকে মাশরুম হিসেবে ছত্রাকবিদরা শনাক্ত করেছেন। তবে বনেজঙ্গলে অনেক ধরনের ছাতা আকৃতির ছত্রাক জন্ম নেয়, যা খাওয়ার অনুপযোগী এবং বিষাক্ত। চাষ করা মাশরুম কখনো বিষাক্ত হয় না। এটি সম্পূর্ণ হালাল সবজি। মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ঔষধি গুণসম্পন্ন সবজি। মাশরুমে আছে (শুকনা ওজনেঃ ১.আমিষ ২৫-৩০%, ২.ভিটামিন মিনারেল ও আশঁ ৫৭-৬০%, ৩. চর্বি ৫-৬% , ৪.শর্করা ৪-৬%

বিশ্বের সেরা মাশরুমের জাতসমূহ সংগ্রহ করে আমাদের দেশজপযোগী উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, সস্তা ও সহজলভ্য টেকসই মাশরুম বীজ উৎপাদন পদ্ধতি এবং সংরক্ষণ প্রযুক্তির উন্নয়ন করা হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬ টি মাশরুম বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। এগুলো হলোঃ ১.ওয়েস্টার, ২.ঋষি, ৩.মিল্কী, ৪.শিতাকে , ৫.বাটন, ৬.স্ট্র সবজি হিসাবে কাঁচা মাশরুম প্রতি কেজি ১২০-২০০ টাকা দরে এবং ড্রাই মাশরুম প্রতি কেজি ১০০০-১২০০ টাকা হিসেবে বিক্রি করা যায় যা অতি লাভজনক। দেশীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও এর চাহিদা ব্যাপক। বাংলাদেশের স্বল্প শিক্ষিত শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের জন্য এটি এক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট উত্তরণে অভিযোজনের উপায় অনুসন্ধান :

ডিসেম্বর ২০০৯ ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনে ১৯৪ টি দেশ,অসংখ্য পরিবেশবাদী সংগঠন এবং বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করে ‘কোপেনহেগেন সমঝোতা’ নামে এক চুক্তি স্বাক্ষর করে।

এ সম্মেলনে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার 2 ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামিয়ে আনা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রয়োজন মেটাতে ২০২০ সাল পর্যন্ত উন্নত দেশগুলো যৌথভাবে প্রতিবছর ১ হাজার কোটি ডলার দেয়ার সুপারিশ করে।

একটি টেকসই পরিবেশ বান্ধব কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের রূপরেখা প্রস্তুতকরণ

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব রোধে কার্যক্রম গ্রহণের বিষয়ে ডিসেম্বর ২০১০ এ কানকুনে অনুষ্ঠিত conference of the parties 16( COP-16) কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ

1. অভিযোজন কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন এর জন্য Adaptation committee গঠন,
2. এসকল দেশে 10 টির কম Clean Development Mechanism (CDM) প্রকল্প আছে এরূপ দেশগুলোকে সহায়তা এবং ঋণ প্রদানের মাধ্যমে দেশের পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের জৈব আবর্জনা দূষণ রোধ করতে হবে।

3. কানকুন সম্মেলনের অন্যতম সাফল্য হচ্ছে Green Climate Found প্রতিষ্ঠা। কারণ জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি মোকাবেলা ও অভিযোজন কর্মসূচি ত্বরান্বিত করার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ দরকার।

4. COP-16 এর Annex I ভুক্ত উন্নত দেশসমূহ ২০১০-১১ মেয়াদে প্রতিশ্রুতি ৩০ অর্থ উন্নয়নশীল দেশ সমূহকে অভিযোজন এবং প্রশমন খাতে প্রদান, উন্নত দেশ কতৃক দীর্ঘমেয়াদে ২০২০ সাল হতে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সরবরাহ করা।

5. বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য কোন ভাবে দায়ী নয়। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের এক নির্দোষ শিকার। সে কারণে উন্নত দেশগুলোর নিকট হতে ন্যায্য হিস্যা বা পাওনা আদায়ের লক্ষে ক্লাইমেট চেঞ্জ নেগোশিয়েশন টিম গঠন করা হয়েছে এবং নেগোশিয়েশনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মাত্রা প্রকৃতি কিরূপ তা নির্ণয়ের জন্য পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

1. পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের আওতায় বিভাগ/ জেলা পর্যায়ে ক্ষমতা অর্পণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন কে আরো যুগোপযোগী, কার্যকর ও জনমুখী করার প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে।

2. প্রতিবছর জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস পালন, ওজোন স্তর রক্ষায় বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

3. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, ঘূর্ণিঝড়ে প্রকোপ কমানো এবং সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম একটি উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম যা গ্রামীণ জনপদে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

4. জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণ মুকাবেলায় শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের যথেষ্ট নয়, পাশাপাশি স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলোর অভিযোজন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ জরুরি।

5. বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগ প্রবণ দেশ। প্রতিবছর কোন না কোন দুর্যোগে এদেশের মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। ১৯৭০,১৯৯১- এর ঘূর্ণিঝড়, ২০০৭ এর সিডর,২০০৯ এর আইলা,২০১৯ এর ফনী এবং ১৯৮৮,১৯৯৮,২০০৪ ও ২০০৭ এর ভয়াবহ বন্যা উল্লেখযোগ্য। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সার্বিক সক্ষমতা শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে জনগণ বিশেষ করে দরিদ্র দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি হ্রাস এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষম একটি জরুরী সাড়া প্রদান পদ্ধতি, আইন, নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।

6. ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে দুর্যোগ বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাঠ্যপুস্তকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সংযুক্ত করা হয়েছে।

7. দুর্যোগ পরবর্তী সতর্কীকরণ সংকেত এবং জরুরি সেবা প্রদান কার্যক্রম যেমন -মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দুর্যোগ বার্তা, sms,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র ইত্যাদির মাধ্যমে ক্ষতি হ্রাস করা যায়।

কৃষিতে পারমাণবিক শক্তি, জৈব প্রযুক্তি, আইসিটি ব্যবহারের সুফলঃ-

পারমাণবিক কৃষি প্রযুক্তিঃ FAO এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বীকৃত খাদ্য ও কৃষি খাতে যেমন-প্রকৃতি, মাটি, শাকসবজি, বৃক্ষ, প্রাণী, বায়ু এমনকি খাদ্যসামগ্রীতে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ (radio isotopes) ব্যবহারের মাধ্যমে পরিমাণগত গুণগত বা রুপগত পরিবর্তন সাধন কে পারমাণবিক কৃষি প্রযুক্তি বলে। গত তিন দশকে বাংলাদেশে কৃষি খাতে পারমাণবিক কৃষি প্রযুক্তি উন্নত দেশের মতো ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পারমাণবিক কৃষি প্রযুক্তির গুরুত্ব বা উল্লেখযোগ্য ব্যবহারসমূহ হলঃ

1. gamma radiation উদ্ভিদ ও প্রাণীর রোগজীবাণু নিরাময়ে ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রাণী ও রোগের জন্য বিভিন্ন শ্রেণীর নিউক্লিয়ার মেডিসিন রয়েছে।

2. রেডিও আইসোটোপ এর সাহায্যে উন্নত মানের শস্য বীজ সংরক্ষণ করা যায় এবং শস্য বীজের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা যায়। সাধারণত শস্যবীজ এর গুণগত মান একবছর সঠিক থাকলেও রেডিও আইসোটোপ এর সাহায্যে এর স্থায়িত্ব পাঁচ বছর বা দশ বছর অর্থাৎ দীর্ঘস্থায়ী করা যায়।

বায়োটেকনোলজি পদ্ধতিঃ বায়োটেকনোলজি বা জৈব প্রযুক্তি হল এরূপ একটি বিষয় যা কোন ব্যবহারের উদ্দেশ্যে জীব কোষের কোন উপাদান, কাঠামোকে পরিমিত পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি নতুন সৃষ্টিকে নির্দেশ করে। Bios শব্দের অর্থ জীবন এবং Technology শব্দের অর্থ প্রযুক্তি।কোন জীবকে মানবকল্যাণে প্রয়োগের যেকোনো প্রযুক্তিকে বলা হয় বায়োটেকনোলজি বা জৈব প্রযুক্তি।

জৈব প্রযুক্তির গুরুত্বঃ সম্পদ সীমিত কিন্তু বিপুল জনসংখ্যার ভারে আক্রান্ত দেশ সমূহে প্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম। যেমনঃ

1.বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সমূহের নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত। ঘূর্ণিঝড় বন্যা দুর্ভিক্ষ মহামারী কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন উষ্ণতা বৃদ্ধি প্রভৃতি ফলে উক্ত দেশসমূহের যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়, এ কারনেই সৃষ্টি হয় খাদ্যসঙ্কট। বন্যা, খরা প্রভৃতি প্রতিকূল আবহাওয়া প্রতিরোধী শস্য উৎপাদন, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য জৈব প্রযুক্তির গুরুত্ব রয়েছে।

2. উচ্চ ফলনশীল বীজ উদ্ভাবনে এর গুরুত্ব যথেষ্ট। প্রতিটি চাষের মাধ্যমে 30 – 40 শতাংশ ফলন অধিক বাড়ানো যায়। Hira, Aloron, jagoron, sonar Bangla, ময়না প্রভৃতি উচ্চ ফলনশীল ধানের উদাহরণ।

3. অণুজীব বিজ্ঞানীরা মানুষের স্বাস্থ্য সেবা, কৃষি-শিল্প পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে, মাছের পোনার কৃত্রিম প্রজননে,অধিক ও দ্রুত উৎপাদনের লক্ষ্যে জিন প্রতিস্থাপনে,পানিকে আর্সেনিকমুক্ত করনে জৈব শক্তি ব্যবহার করছেন।

আইসিটিঃ বাংলাদেশ বিপুল জনসংখ্যার ভারে আক্রান্ত একটি কৃষি প্রধান দেশ হলেও এখনও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিবছরই আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ক্রমাগত কমেই যাচ্ছে।এ প্রেক্ষিতে কৃষি বিভিন্ন উপখাত বা খাতের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কৃষির বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক ভূমিকা পালন করেছে, ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি। তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমানে স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প ও সেবা প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃষিতে –

1. সাধারণ কৃষি সমস্যা সমাধান, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যার সমাধান, ফসলের রোগের আক্রমণ, কীটনাশক প্রয়োগ, পরিবেশবান্ধব কীটনাশক প্রকৃতি সম্বন্ধে ধারণা লাভ।

2. উদ্ভাবনী কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার যেমন- নতুন নতুন কৃষি যন্ত্রপাতি, উন্নত বীজ, সার ও কীটনাশক, সর্বোত্তম টেকসই প্রযুক্তি নির্বাচন প্রভৃতি সম্বন্ধে ধারণা লাভ করা যায়।

কৃষি উন্নয়নে কৃষি প্রযুক্তি সরকারের গৃহীত নীতি ও কর্মসূচির সাফল্যঃ

কৃষি উন্নয়নে কৃষি প্রযুক্তি, সরকারের গৃহীত নীতির ও কর্মসূচি ব্যাপক সাফল্যের মুখ দেখেছে। কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত করেছে।উন্নত ফসলের বীজ, সার ও উন্নত টেলিসেবায় কৃষিতে বৃদ্ধি পেয়েছে উৎপাদন। সরকারের গৃহীত নানা কর্মসূচির কারণে ফসলের মোট ১৪৫ টি উদ্ভাবন করা হয়েছে। দেশে বর্তমান সরকারের আমলে ডিজিটাল কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে।গত অর্ধযুগ ধরে কৃষি ক্ষেত্রে বিভিন্ন খাতে যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে তা বর্তমান সরকারের কৃষি ভাবনার এক বাস্তব প্রতিফলন।

দেশের কৃষি ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার আরও যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ

1. বর্তমান সরকারের আমলে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ আরো গতিশীল হয়েছে। তাছাড়া বিএআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত কৃষি যন্ত্রপাতির মোট মূল্যের ৬০%পর্যন্ত ভর্তুকি মূল্যে কৃষকের নিকট সরবরাহ করে যাচ্ছে।

2. কৃষি পণ্যের বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন বর্তমান সরকারের আরেকটি সাফল্য।

3. সরকার অঞ্চল ভিত্তিক ১৭ টি সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।এসব উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকায় উপযোগী ফসলের জাত উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, সেচ অবকাঠামো নির্মাণ করে সেচের আওতায় বৃদ্ধি করা, কৃষিজাত পণ্যের বাজারে সুবিধা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।

এইচএসসি ও আলিম পদার্থবিজ্ঞান এসাইনমেন্ট ২০২২

ইংরেজি ১ম পত্র এসাইনমেন্ট এইচএসসি ২০২২

এইচএসসি ২০২২ এর সকল এসাইনমেন্ট দেখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *