করোনায় কেমন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ শিক্ষার্থীদের

নানা কারণে বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ গুলো বর্ণিল হয়ে থাকে। নতুন ক্যাম্পাস নতুন পাঠ্যক্রম আর নতুন সব বন্ধু-বান্ধবের ভিড়ে পাওয়া যায় জীবনের পূর্ণতার স্বাদ। নতুন স্বপ্নে বিভোর হয়ে থাকে সবাই। তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের (কুবি) করোনা কালীনে কিভাবে কেটে গেল, তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার চেষ্টা করছে -আবু জাফর ।

নুসরাত রশিদ, গণিত বিভাগ

“ভার্সিটি লাইফ হচ্ছে নিজের স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষাগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার একটা অন্যতম মাধ্যম। অনেক পরিশ্রম আর চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমরা এই পর্যায়ে উপনীত হই। তেমনি অনেক পরিশ্রম করে স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রূপদানের জন্যই কুবি’র বুকে পদচারণ ঘটেছিল। মাত্র ২ মাস ১৭ দিন ক্লাস করার সুযোগ হয়েছিল। তারপর কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এতো অল্প সময়েও কুবি আমাদেরকে তার মায়ায় জড়িয়ে বুকে টেনে নিয়েছিল। ব্যাচমেট ও সিনিয়রদের সাথেও এই অল্প দিনে কিছুটা ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

সেই মার্চ মাস থেকে এখনো পর্যন্ত আর ভার্সিটির সেই প্রাণোচ্ছল রূপ দেখা হয় নি, বন্ধুদের সাথে হৈ-হুল্লোড় করা আর আড্ডা দেয়া হয় নি। এরপর সবাই অনলাইন নির্ভর হয়ে যাই। অনলাইনে ক্লাস করা শুরু হয়। কিন্তু বন্ধুদের সাথে বসে সরাসরি ক্লাস করার মতো আনন্দটুকু আর পাওয়া যায় নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে হয়তো ভার্সিটি ও বন্ধুদের সাথে আরো অনেক গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠতো। ভার্সিটি লাইফটাকে উপভোগ করে ভালো সময় কাটানো যেতো। খুব মিস করি ভার্সিটি ও বন্ধুদেরকে। ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই সুস্থ পৃথিবীতে সুস্থভাবে আবার দেখা হবে সবার।”

নাঈম, বাংলা বিভাগ

“সেই মাধ্যমিক থেকে দেখে আসা স্বপ্নের বাস্তব রূপলাভ করে গত ডিসেম্বরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির মাধ্যমে! ক্লাস শুরু জানুয়ারির পয়লা তারিখ । নতুন জায়গা কতশত নতুন মুখ! কিন্তু কাউকেই নতুন মনে হচ্ছে না। সিনিয়র, ব্যাচমেটরা এতই আন্তরিক যে প্রথম ক্লাসেও মনে হয়নি তাদের সবার সাথেই আমার প্রথম দেখা। প্রথম দেখাতেই কাউকে কত আপন করা যায় তা ভার্সিটিতে না গেলে বুঝতেই পারতাম না।

ক্লাসের ফাঁকে ক্যাফেটেরিয়া যাওয়া, ক্লাস শেষে একসাথে আড্ডা দেওয়া, কোনো প্রিপ্ল্যান ছাড়াই আসে পাশে ঘুরতে যাওয়া। ম্যানারসহ যাবতীয় নিয়মকানুন শিখিয়ে ইমমেচিউর আমাদেরকে ম্যাচিউর করার কত চেষ্টা সিনিয়রদের। এরপরেও ঠিক মত সালামটাই দিতে পারতাম না । আহা! কত সুন্দর সময়। কিন্তু সেই সময়টা মাত্র কয়েকমাসেই ভোরের স্বপ্নের মত ইতি টেনেছে বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী মহামারি করোনার জন্য!

সবাই সাপ্তাহিক ছুটি কাটানোর মত মনে করে এক কাপরে যে যার মত বাড়ি চলে আসি কিন্ত আজ দীর্ঘ নয় মাস হয়ে গেলো আজও ফিরে যাওয়া হলো না সেই প্রাণের ক্যাম্পাসে। যতই অনলাইনে ক্লাসের মাধ্যমে আমাদের কোর্স কিংবা সেমিস্টার শেষ করা হোক না কেনো আমরা কি আমাদের সেই ইমম্যাচিউর ফার্স্ট ইয়ারটা পাব!? হায় বাস্তবতা, ইমম্যাচিউরিটির সাধ গ্রহণ করার আগেই ম্যাচিউর করে দিচ্ছে!”

জান্নাতুন নিসা , সাংবাদিকতা বিভাগ

“২০২০ সাল আনন্দের সাথে পুরো জানুয়ারি মাসটা কাটিয়ে দেই শিক্ষকবৃন্দ, বন্ধুমহল,বড় ভাই-বোনসহ সকলের সাথে পরিচয় হতে,সকলকে চিনতে,জানতে আর পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখতে দেখতেই। তবুও এর হয়না শেষ। এরই মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে আমাদের ভাগ্যবশে দেখা মিললো কুবির প্রথম কনভোকেশন।এর তৃপ্তিও ভিন্ন সাধের,ভিন্ন আনন্দের। এভাবেই যাচ্ছিলো দিন,কাটছিলো রাত। কিন্তু হায়! আমাদের এই আনন্দের তৃপ্তি বেশিদিন টিকল না।

মার্চের মধ্যভাগেই ঘটে করোনা রোগের আবির্ভাব।যার ফলে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায় অনির্দিষ্টকালের জন্য।ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষ এপ্রিলে খোলার আশ্বাস দিলেও তা আর হলো না।ভয়ংকর এই মহামারীর জন্য হারালাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের মূল্যবান সময়, হারালাম আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত,নতুন পরিবেশে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার সুযোগ, নতুন বন্ধুত্বের ছোঁয়া।শেষ কবে বন্ধুমহল নিয়ে কুবির মুক্তমঞ্চে আড্ডায় মাতোয়ারা হয়েছিলাম কে জানে।বন্ধের অল্প কয়েকদিন পরই তো আমাদের অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস শুরু হয়।

এই ভার্চুয়াল ক্লাস কখনোই পারেনি ক্যাম্পাসের সেই সরাসরি ক্লাসের তৃপ্তির স্বাদ এনে দিতে,পারিনি বন্ধু মহলে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে, তাদেরকে ভালোভাবে জানতে, আমাদের বন্ধুত্বটা আরো দৃঢ় করতে।এছাড়াও অনলাইন নির্ভর জীবনে দৃঢ় হলো না আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বন্ধন,বিভাগের সকল বড় ভাই-আপুদের সাথে আমাদের নতুনদের বন্ধুত্বের বন্ধন।”

শফিকুল ইসলাম, গণিত বিভাগ

“সেই প্রথম–দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত গতানুগতিক পড়ালেখার গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলাম। এতদিন ধারনা ছিল যে বিশ্ববিদ্যালয় এক উন্মুক্ত চিন্তা ধারার স্থান। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তা বুঝতে ও পেরেছি। কিন্তু তা আর বেশিদিন হই নি করোনা মহামারির কারণে বাড়িতে চলে আসতে হয়েছে।যার ফলে নতুন করে বন্ধুদের সাথে পরিচিত হতে পারি নি তাছাড়া পড়ালেখার তো ব্যাঘাত ঘটছেই, যাইহোক অনলাইন ক্লাসের কারণে যদিও ক্লাস করতে পারছি তার পর ও তো যান্ত্রিক ত্রুটি থাকেই। অনলাইনে ক্লাস করেই আমাদের 19–2০ সেশনের সবার প্রথম বর্ষ শেষ হইয়ে গেছো। যা আমাদের জীবনের এক সোনালি অধ্যায় না উপভোগ করেই যেন চলে গেল।”

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন: To Do or Not To Do?

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ জীবন যুদ্ধের বড় অংশ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যুদ্ধ। সবার স্বপ্ন থাকে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবে। আবার অনেকের স্বপ্ন থাকে তার পছন্দের নির্দিষ্ট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার। স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ১০ টি কথা মেনে চলা উচিত।

১) মনে রাখতে হবে বিশ্ববিদ‍্যালয় কেবল ক‍্যারিয়ার গড়ার জায়গা না; জীবনকে উপভোগ করতে শেখার সেরা স্থান। তাই, লক্ষ‍্য রেখ যেন ৪ বছর পর একটা সার্টিফিকেটই তোমার একমাত্র অর্জন না হয়।

২) তুমি যে বিভাগে ভর্তি হয়েছ, সেই বিভাগে পড়ে ভবিষ‍্যতে কি চাকরি করবে তা নিয়ে প্রথম বর্ষে চিন্তা করে ক্যাম্পাস জীবনের আনন্দ মাটি করবে না। একটা কথা আছে- মক্কা বহুত দূর। তাই প্রথম বর্ষে যত পারো চিল করো।

৩) তোমার ক্লাসের একদল সহপাঠী থাকবে যারা সব অজুহাতে পরীক্ষা পেছানোর ধান্দায় থাকবে। তুমি নিজে সেই দলের অংশ হয়ে যেয়ো না। পরীক্ষা কালকে সকালে হোক আর ডিসেম্বর মাসে হোক, তুমি পড়বে সেই আগের রাতেই। তাই, সময়ে সময়ে সেমিস্টারের সব মিডটার্ম দিয়ে দাও।

৪) এবার আসি সিজিপিএ নিয়ে। CGPA এর পেছনে দৌড়ালে জীবনে Excellency আসবে না। তাই, Excellency অর্জনের জন‍্য পরিশ্রম দাও, দৌড়াও। CGPA দেখবে ফ্রিতে চলে আসবে।

৫) বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী সিজিপিএ কে জীবনের সফলতাভাবে। তাছাড়া তারা জীবনের সুখ নামক ব‍্যাপারটাকে সফলতা/ CGPA দিয়ে সংজ্ঞায়িত করে, এই ধারণা মোটেই ঠিক না। তোমার জীবনের সুখ পরিমাপ করবে বিশ্ববিদ‍্যালয় জীবনে কতগুলো স্মৃতি তৈরি করেছো তা দিয়ে।

৬) সিনিয়রদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। টিপসস হলো, কোন সিনিয়রকে রাস্তায় একা পেলে ট্রিট চেয়ে বসবা। তবে, তোমার সাথে যদি আরো ১২-১৫জন থাকে তাইলে কোন লাভ নেই। সর্বোচ্চ ৩-৫ জন খাওয়ানো যায়।

৭) এবার আসি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রেম করবা কিনা? বিশ্ববিদ‍্যালয় জীবনে প্রেম না করলে ফাল্গুন, বৈশাখ, বর্ষাবরণের অনুষ্ঠানের একটা বিশেষ স্বাদ হারাবে। তাই, এখন যৌবন যার, প্রেম করার সময় তার।

৮) বিশ্ববিদ‍্যালয় লাইফে কিছু কাজ করে অর্থ-উপার্জন করতে শিখবে। সেটা যত ছোট উপার্জন হোক না কেন। বাবা-মার কাছ থেকে আর কতদিন হাত খরচ নিবে?

৯) যত-বেশি নিজের ব‍্যক্তিগত যোগাযোগ সৃষ্টি করো। চাকরির বাজারে তোমার CGPA এর চেয়ে এখন পরিচিতি দরকার। সবাই চায় পরিচিত যোগ‍্য মানুষকে নিতে। তাই, বলবো শুধু যোগ‍্য হয়ে লাভ নেই।

১০) তোমার বিভাগের প্রত্যেক অনুষ্ঠানেই আয়োজক / পারফরমারের ভূমিকা পালন করবে। আমাদের বিভাগের সবাই বইয়ের পোক। কেউই আহামরি নাচ-গান-অভিনয় পারে না। সবাই তোমার মত! তাই, লজ্জা না পেয়ে সবাই যা করছে তাতে অংশগ্রহণ করো। বিভাগের প্রতি তাহলে একটা ভালোবাসা তৈরি হবে।

মুক্ত সাংবাদিকতার ৬০ কোটি সেকেন্ড

সোহান সিদ্দিকী


এখন পর্যন্ত ৬৩ কোটি ১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪০০ সেকেন্ডস্ অতিবাহিত হয়েছে। সেকেন্ডের হিসেবে সময়টা বেশ দীর্ঘ মনে হলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) রিপোর্টার্স ইউনিটি আজ তার প্রতিষ্ঠার ৩য় বর্ষে পদার্পণ করেছে। কবিরা বলেন সময়ের স্রোত কখনও ফিরে আসে না, অথচ সময়ের স্রোত যে কতো দ্রুত প্রবাহিত হয় তা তাঁরা বলেন নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর অনেক গুলো সংগঠনের সদস্য পদের জন্য আবেদন করলেও সংকোচবোধ আর হেলায় শেষ পর্যন্ত কোথাও সদস্যপদের ভাইভা তে অংশগ্রহণ করা হয়নি। এছাড়া মেসে থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার এক্টিভিটিও ছিল যথেষ্ট কম। আসতাম ক্লাস করতাম আর চলে যেতাম, আর এভাবেই কাটছিল দিন।

এভাবে চলতে চলতেই একদিন মোস্তাফিজ রাকিব ভাইয়ের সাথে দেখা হয়। ভাই তখন ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যকরী সদস্য, বর্তমানে দপ্তর সম্পাদক। কথায় কথায় লেখালেখির বিষয়ে ভাইয়ের সাথে কথা হয়। এসময় ভাই আমাকে সাংবাদিকতায় করতে আগ্রহী কিনা জিজ্ঞেস করলে আমি এককথায় রাজি হয়ে যাই। এভাবেই ভাইয়ের হাত ধরে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা সম্পর্কে জানার সুযোগ হয় এবং ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটির সংস্পর্শে আসি।

অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের মতো শুধু প্রগতিশীল না, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি এমন একটি সাংবাদিক সংগঠন যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে আমি শিখেছি কিভাবে সত্য সন্ধানে ধৈর্য ধরে লড়াইটা চালিয়ে যেতে হয়, শত চাপ ও প্রতিহিংসার মাঝে টিকে থাকতে হয়। বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রেখে সাংবাদিকতার সংজ্ঞা শিখেছি আমি এখান থেকেই।

ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের আবু সালেহ শামীম রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা এবং তার সাথে অন্যতম প্রধান সহযোগী হিসেবে ছিলেন মুরতুজা হাসান ভাই ও মাহফুজুর রহমান ভাই।

ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রতিষ্ঠার আগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মুক্ত সাংবাদিকতার ক্ষেত্র ছিল অত্যন্ত সংকীর্ণ। বিশেষ মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীর হাতেই ইবির সাংবাদিকতা জিম্মি ছিল। ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটির অন্যতম উদ্দেশ্যই ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্ত সাংবাদিকতার দ্বার উন্মোচন করা এবং নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলের সৃজনশীল লেখনী প্রকাশের সুযোগ করে দেয়া।

অতঃপর সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর ইবিতে রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রগতিশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের ইতিবাচক পরিবর্তনে ব্যাপক অবদান রেখেছে সংগঠনটি। প্রতিষ্ঠার মাত্র বছর খানিক সময়ের মধ্যে এর সফলতায় মুগ্ধ বা অভিভূত না হয়ে উপায় নাই।

রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রতিষ্ঠার আগে ইবিতে মেয়েদের জন্য সাংবাদিকদিকতার কোনো সুযোগ ছিল না। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ বছরের ইতিহাসে রিপোর্টার্স ইউনিটিই সর্বপ্রথম নারী সদস্য গ্রহন করে এবং মেয়েদের জন্যও সাংবাদিকতার দ্বার উন্মোচন করে। ইবিতে উন্নয়ন সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক হলাম আমরাই।
ইচ্ছাশক্তি আর রাগ ক্ষোভ যদি ভালো কাজে লাগানো যায় তাহলে অবশ্যই সফলতা আসবে। যার অন্যত্তম উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোটার্স ইউনিটি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিশীলতা বিশ্বাসী এ সংগঠনটি বেঁচে থাকুক যুগ যুগ ধরে, বেঁচে থাকুক সত্য সন্ধানে মুক্ত কলম সৈনিকরা।

লেখা: সোহান সিদ্দিকী
লেখক ও শিক্ষার্থী
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

টেনশন থেকে মুক্তির ৫টি উপায়

টেনশন থেকে চটপট মুক্তির পাঁচটি উপায় । টেনশন থেকে মুক্তি পেতে যা করবেন । দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় । টেনশন থেকে মুক্তির ৫টি উপায়


জীবনে সমস্যা যেমন আছে , তার সমাধানও নিশ্চই আছে ৷ বেশিরভাগ সময় আমরা দুশ্চিন্তার কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দিয়ে , ক্রমশ টেনশনের শিকার হয়ে পড়ি । যা আমাদের জীবকে এক অন্ধকার কূপের দিকে ঠেলে দেয়৷

সবাই কম বেশি টেনশনে ভোগে। তবে অতিরিক্ত টেনশন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে ব্লাড প্রেসার বেড়ে যাওয়া ছাড়াও দেহের অনেক ক্ষতি হয়। যা মনের শান্তি নষ্ট করে, ক্ষুধামন্দার জন্ম দেয়, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, এমনকি অন্যদের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক অসুন্দর করে।

আমাদের প্রত্যেকের যতদূর সম্ভব টেনশনমুক্ত থাকা উচিত। টেনশনের থেকে মুক্তি পাওয়ার ৫টি টিপস:

১) নিজেকে ব্যস্ত রাখো , ভাবনার বিষয় বদলাও : একটি সমস্যার জন্য তুমি খুব টেনশনে আছো । তোমার কোনো কিছুই ভালো লাগছে না । বারবার সেই সমস্যার কথা মনে পড়ছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে , তুমি কোনো ভালো এবং পছন্দের কাজটিতে ব্যস্ত হয়ে থাক । দেখবে সেই কাজে ব্যস্ত হলে তার মধ্যে তুমি ডুবে যাবে । তোমার মন টেনশন থেকে পুরোপুরি মুক্ত হয়ে কাজের মধ্যে মনোনিবেশ করবে ।

২) প্রাণ খুলে হাসো ও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দাও , শেয়ার করো : টেনশন হচ্ছে একা একা থাকা যাবে, এতে টেনশন আরও বেড়ে যাবে। তাই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে হবে। ধীরে ধীরে দেখবে তোমার আর ওই সমস্যার কথা মনে পড়বে না। নিজেকে ভালো লাগবে।

৩) টেনে টেনে শ্বাস নাও: খুব টেনশন হলে বুকের ভেতরে গভীর শ্বাস টেনে নিন। রক্তে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ঢুকলে মস্তিষ্ক উজ্জীবিত হয়, মাংসপেশি শিথিল হয় এবং মন ঠাণ্ডা হয়।

৪) ধ্যান বা meditation করো : ধ্যান বা meditation হল মনকে নিয়ন্ত্রন করার একটি চর্চা । যা তোমার ভেতরের পর্যবেক্ষণ ও চিন্তা শক্তিকে দৃঢ়ভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম । গভীর শ্বাস টেনে নেয়ার পাশাপাশি মেডিটেশন করুন। মস্তিষ্কে প্রায় ঘুমের সমপর্যায়ের অবস্থা তৈরি হবে। শূন্যে মনোনিবেশ করলে চাপ কমে যায়।

৫) কাছের মানুষের কাছে সমস্যার কথা বলোঃ নিজের ব্যক্তিগত কিছু কথা বিশ্বাসভাজন ব্যক্তির কাছে প্রকাশ করুন, বুঝবেন টেনশন হালকা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রয়োজনবোধে তার সৎ পরামর্শ নিয়ে কাজের জন্য উৎসাহ-উদ্দীপনা ও যৌক্তিকতা খোঁজার চেষ্টা করুন।

এছাড়াও কয়েকটি উপায়

১. আত্মসম্মোহনের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি, বদ অভ্যাস ত্যাগ, কম ব্যথা বা দুঃখ অনুভবের শক্তি বাড়ান।

২. হালকা শরীরচর্চা করুন। রক্ত সঞ্চালনের ফলে হতাশার লেভেল কমে যাবে।

৩. যোগ ব্যায়াম করুন। যোগ ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই টেনশন দূর করার ক্ষেত্রে।

মতিহারের অরণ্য বিলাস

অনেক দিন হল, চারিদিকে চলছে বিরুদ্ধ সময়। কম-বেশি সবাই নানাবিধ ভয়ে ভীত। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে একের সাথে অপরের মানসিক দূরত্ব। একঘেয়েমি ব্যস্ত জীবন আর গুমট ভীতি ছেয়ে ফেলছে সবাইকে। আমরাও তার ব্যতিক্রম নই। একটু প্রশান্তি খোঁজার জন্য তাই ভাবছিলাম, ঘুরে আসি কোথাও থেকে।

কিন্তু হয়ে উঠছিল না কিছুতেই। অবশেষে কোন পরিকল্পনা ছাড়াই আমরা তিন বন্ধু বেড়িয়ে পরলাম প্রাণের টানে প্রিয় মতিহার, প্রিয় ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে। মনে মনে ছাত্রছাত্রীর কোলাহল বিহীন নির্জন একটি ক্যাম্পাসের কল্পচিত্র নিয়েই শুরু করলাম যাত্রা; সাথে সাম্প্রতিক সময়ে প্রিয় ক্যাম্পাস নিয়ে অনলাইনে পাওয়া কিছু বিরূপ সংবাদ।

যেমন কেটে ফেলা হয়েছে পুরনো পাম গাছ; ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ক্যাম্পাসের জীববৈচিত্র্য ইত্যাদি ইত্যাদি। ভেবেছিলাম চারিদিকে বোধয় শুধুই অযত্ন, অবহেলা আর ঘন আগাছার জঙ্গল । কিন্তু ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই ঘোর কাটতে শুরু করলো। অভিভূত হতে থাকলাম বিস্ময়ে।

মতিহারের অরণ্য বিলাসপ্রথমেই চোখে পড়লো কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে থাকা কয়েকটি পাম গাছের মৃত কঙ্কাল। কিন্তু ভালোভাবে তাকাতেই চিরচেনা এই জায়গাটিকে কেমন অচেনা মনে হলো। এতোটা প্রশস্থ সবুজ জায়গা আগে কখনো এখানে দেখেছিলাম কিনা ঠিক মনে করতে পারছিলাম না। সারি সারি তরুণ রয়েল বোতল পাম গাছ যেন মাথা উঁচিয়ে নতুনদের অভিবাদন জানানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই সৌন্দর্যকে আরও পূর্ণতা দিয়েছে রক্ত লাল বিশ্ব সুন্দরি গোলাপ গাছের সারি।

মীর মোস্তাক এলাহী এবং অন্যান্য শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে নির্মিত হয়েছে সুদৃশ্য ফলক। অযত্নে অবহেলায় পরে থাকা শহীদ জোহার সমাধিক্ষেত্রটি এখন নিবিড় পরিচর্যায় ফিরে পেয়েছে এক নতুন রূপ। পূর্ণিমার রাতে মেইন গেট থেকে প্রশাসনিক ভবন কে দেখে বিমোহিত হয়ে গেলাম।

প্যারিস রোডের ভেঙ্গে পড়া গগন শিরিষ (Wild Tamarind) এর পাশে স্থান করে নিচ্ছে বয়সে তরুণ কাঠবাদাম গাছ। প্রতিটি গাছে খুব সুন্দর করে স্থানীয় নাম, ইংরেজি নাম এবং বৈজ্ঞানিক নামের ফলক লাগানো হয়েছে। জিমনেশিয়াম এর পাশে পরিত্যক্ত যায়গায় গড়ে উঠেছে সুবিশাল ঔষধি গাছের বাগান। যেখানে রয়েছে আমলকি, হরিতকী, বহেরা, বেল, জলপাই সহ নানাবিধ গাছ। প্রাতঃভ্রমণে ক্লান্ত পথচারীদের জন্য করা হয়েছে বসার সুব্যবস্থা।

মতিহারের অরণ্য বিলাস

এরপর সুইমিংপুলের পাশে যেতেই আমাদের চোখ আটকে গেলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৭৪ তম জন্মদিনে রোপণ করা শান্তি বৃক্ষের দিকে। সারি সারি গাছ যেন সকলকে শান্তির আহ্বান জানাচ্ছে এবং পাশে নতুন তৈরি ছোট্ট লেকে শোভা পাচ্ছে পদ্মফুল। জোহা হল থেকে বধ্যভূমির দিকে যেতেই নতুন স্থাপিত একটি ফলক যেন আমাদেরকে অন্য এক অরণ্যের দিকে নির্দেশ করছিলো। শতবর্ষে শতপ্রাণ, আম্রকানন, মতিহার উদ্যান, সফেদা বাগান সহ নানাবিধ গাছের সমাহার । ভাবছিলাম এটা কি আমাদের সেই পরিচিত ক্যাম্পাস নাকি অন্য কোনো জায়গা।

বধ্যভূমির রাস্তায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৭৩ তম জন্মদিনে লাগানো ৭৩ টি গাছ যেন ছায়া দিয়ে চলেছে সকল পথচারীদেরকে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে লাগানো হয়েছে ১০০ টি নানান জাতের আমের গাছ, যেটির নাম “শতবর্ষে শতপ্রাণ”। নিজেকে গর্বিত মনে হলো; জাতির পিতার প্রতি এর চেয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা আর কি হতে পারে! এর আগে এত নয়নাভিরাম সফেদার বাগান দেখিনি কখনও। একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে চলছিলাম সুইপার কলোনির দিকে। এগিয়ে যেতেই পুরাতন অনেক স্মৃতি মনে পরছিলো।

মতিহারের অরণ্য বিলাস

গভীর রাতে নির্জন মাঠে শুয়ে শুয়ে চন্দ্রগ্রহণ দেখা, খুব ভোরে উঠে পাখি দেখতে যাওয়া, গভীর জঙ্গলে বনভোজন, একতারা হাতে গান গাওয়া কিংবা পাম্পের পানিতে স্নান করা। এই জায়গাটি ছিলো আমাদের খুব পছন্দের, কারণ এখানে ছাত্রছাত্রীদের পদচারণ প্রায় ছিলোনা বললেই চলে। অনেকটা প্রাইভেট প্রোপার্টির মতো ব্যবহার করতাম আমরা। কিন্তু এখানে আসতেই চোখে পড়লো এক পরিচ্ছন্ন অরণ্যের। মনে হচ্ছিলো এ যেন এক ছায়া সুনিবিড় সুবিশাল এক অক্সিজেন ব্যাংক। নামটাও চমৎকার “মতিহার উদ্যান”।

পুরো ক্যাম্পাস ঘুরতে ঘুরতে আমরা যেন এক মোহময় ভালোলাগায় আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছিলাম। পরিত্যক্ত ডাস্টবিন গুলো হয়ে উঠেছে এক একটি সবুজ বাগান। কোথাও দেখছি মালীরা গাছগুলোতে পানি দিচ্ছেন পরম যত্নে, কোথাও বা আধুনিক যন্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘাস কাটা চলছে। মালীদের কর্ম তৎপরতা ছিলো চোখে পড়ার মতো। এমন কি টিএসসি’র পাশে গাছ ভর্তি আমলকী দেখে যখন লোভ সামলাতে পারছিলাম না তখন পুরাতন অভ্যাসে ভাবলাম কয়েকটা আমলকী পাড়ি; কিন্তু গাছের কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতেই একজন ছুটে এসে বললো ” এখন আমলকী পাড়া নিষেধ!বড় হোক, তারপর খাবেন “।

মতিহারের অরণ্য বিলাস

বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থান এর পাশেও গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল আম্র কানন। সত্যিই এ এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা। আরও একটা বিষয় আমাদের নজর কেড়েছিলো; সেটা হলো কৃষি প্রকল্পের সাইনবোর্ড। এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে চলছে এই মতিহার অরণ্যের নিবিড় পরিচর্যা। মনে হচ্ছিলো কেউ একজন আছেন এর পিছনে যার পরম মমতা, ভালোবাসা, সুনিপুণ দিকনির্দেশনা আর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় বেড়ে উঠছে এই সাজানো অরণ্য।

পরিকল্পিত এই অরণ্যে পাখিরাও জানান দিচ্ছে তাদের আগমন বার্তা। তাদের কলকাকলিতে ক্রমেই ভরে উঠছে মতিহারের প্রাণ প্রকৃতি। এসব দেখতে দেখতে কখন যে আমাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে বুঝতেই পারিনি। শেষ হয়ে গেল আমাদের মতিহারের অরণ্য বিলাস। এই বৈরী সময়েও একরাশ ভালোলাগা নিয়ে ফিরে চললাম সেই কর্মব্যস্ত যান্ত্রিক নগরীর উদ্দেশ্যে। ভালো থাক প্রিয় ক্যাম্পাস, ভালো থাক মতিহার অরণ্য, ভালো থাক অক্সিজেন ব্যাংক…

তপু, সায়েম , হুমায়ন
একটি ত্রিভুজ প্রয়াস
https://www.facebook.com/trivuj2020

হাল্ট-প্রাইজ ও টিম জিরোর যৌথ উদ্যোগে পথশিশুদের খাবার বিতরণ

 

তারেক হাসান

রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম একটি প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে হাল্ট-প্রাইজ ফাউন্ডেশন কতৃক আয়োজিত হাল্ট প্রাইজ অন ক্যাম্পাস ২০২০-২১ বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি।
বর্তমান বিশ্বের যে কোন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে তরূণ নেতৃত্বের মেধাকে কাজে লাগিয়ে সাহায্য করাই সংগঠনটির মূল লক্ষ্য।

এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে দায়িত্ব প্রাপ্ত হাল্ট প্রাইজ কমিটি ও রাজশাহীর অন্যতম একটি সামাজিক সংগঠন টিম জিরো’র যৌথ উদ্যোগে রাজশাহীতে পথশিশুদের হাতে খাবার বিতরণ করা হয়।

গত মঙ্গলবার,রাজশাহীর টি-বাঁধ এলাকায় বিকালের দিকে প্রায় ষাট জন পথশিশুদের নিয়ে এই আয়োজন করা হয়। এই বাচ্চা গুলোকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় বেলুন হাতে বা বাদাম বিক্রি করতে দেখা যাই। খাবারের মেন্যুতে যা রাখা হয়েছিলো
চিকেন বিরিয়ানি,ডিম,সালাদ,একটি জুস।
তাদের জন্য এমন আয়োজন সত্যিই তাদেরকে উৎসাহিত করে, বাচ্চাগুলোর মুখে হাঁসি ফুঁটায়।

প্রোগ্রাম শেষে হাল্ট-প্রাইজ অন ক্যাম্পাস বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ক্যাম্পাস ডিরেক্টর ফাইজাহ সাফওয়াত বলেন,
হাল্ট প্রাইজ ফাউন্ডেশনটি জাতিসংঘের অংশীদারিত্বের কার্যালয়ের সাথে যুক্ত একটি সংস্থা এবং এটি কেবলমাত্র স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থীদের ধারণাগুলি দিয়ে বিশ্বের পরিবর্তনের লক্ষ্যে পরিচালিত হয়।

প্রতি বছর বর্তমানকালের একটি বিশিষ্ট সামাজিক সমস্যাকে বিষয় হিসাবে নির্বাচন করে শিক্ষার্থীদের চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা উক্ত বিষয়ে ভিত্তিতে নিজ নিজ প্রস্তাব উপস্থাপন করে যার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলি মোকাবেলা করার এবং একই সাথে সাধারণ জনগণের জন্য অর্থবহ কর্মক্ষেত্র তৈরি করার উপায় তারা তুলে ধরে।

আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রতিষ্ঠানের অন ক্যাম্পাস পর্ব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে। অংশগ্রহণ করতে শিক্ষার্থীরা Hult prize at Varendra University এর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অথবা তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারে।

এই উদ্দেশ্যে রেশ ধরেই ছোট শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে, তাদের মুখে হাসি আনার জন্য আমাদের আজকের আয়োজন।
কয়েকজন বন্ধু মিলে তৈরি করা রাজশাহীর আরেক সামাজিক সংগঠন টিম জিরো’র পক্ষ হতে ইসতিয়াক আহম্মেদ বলেন,
অসহায় দুস্থ প্রতিটি মানুষের মুখেই হাসি ফোটানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েই যাত্রা টিম জিরোর।

লকডাউনের শুরু থেকেই রাজশাহীর অসহায়, সম্বলহীন মানবেতর জীবনযাপন করা মানুষের পাশে এসে দাড়িঁয়েছে আমাদের এই শূন্যদল। তবে প্রথমবারের মতো আমরা কোলাবোরেশন প্রোগ্রাম করলাম বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের হাল্ট টীমের সাথে ।

খুবই ভালো একটা অভিজ্ঞতা টিম জিরোর জন্যে । সত্যি বলতে কি , ভালো কাজ করতে থাকলে ভালো সংঙ্গের অভাব হয়না । দুই পক্ষেরই যখন প্রধান উদ্দেশ্য যখন এক হয়ে যায় তখন কাজ করে প্রশান্তি পাওয়া যায়।

প্রতিবারই আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ভুলে যায় যখন দেখে সেই খাবার হাতে শিশুদের সেই নির্মল হাসিমুখটা। ইনশা আল্লাহ সামনের দিনগুলোতেও হাতে হাত মিলিয়ে একসাথে রাজশাহী শহরের প্রতিটি দুস্থ মানুষ এবং প্রতিটি শিশুর মুখে হাসি ফোটানোর লড়াই চালিয়ে যাবো আমরা।

জবি শিক্ষার্থী কে বাঁচাতে প্রয়োজন ৫ লক্ষ টাকা, সাহায্যের আহ্বান

 

ফারহান আহমেদ রাফি
জবি প্রতিনিধি

শত বাধা সত্ত্বেও দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে সফলভাবে লেখাপড়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়া ছেলেটির নাম আরব আলী। গাইবান্দা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের অস্বচ্ছল পরিবারের একজন জীবনসংগ্রামী যোদ্ধা।

২০০৮ সালে চাচার সাথে কাজের উদ্দেশ্যে ঢাকায় পাড়ি জমায় । ছোটবেলা থেকেই সে নারিন্দা এলাকায় চাচার সাথে একটা লন্ড্রীর দোকানে কাজ করত । জীবিকার জন্য কাজ করলেও সে পড়ালেখা থেকে ছিটকে যায়নি । কাজের পাশাপাশি কাছাকাছি একটা স্কুলে ভর্তি হয়, তার থাকা-খাওয়া, পড়ালেখা সবই ছিল ঐ দোকানের মধ্যে। বরাবরই রেজাল্ট ভালো হওয়ায় পড়ালেখা ছেড়ে দেয়নি সে ।

আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া আরব আলী SSC পরীক্ষায় গোল্ডেন A+ পেয়ে কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে HSC পরীক্ষা সমাপ্ত করে । পড়ালেখার সমস্ত খরচই নিজ উপার্জনে চালিয়েছে । ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষায় আরব আলী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের জন্য মনোনীত হয় ।

ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চান্স পাবার পরে সামর্থ্যবানরা যখন রিলাক্স মুডে সময় কাটায় তখন আরব আলী উদ্বিগ্ন ছিল কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা ম্যানেজ করতে। বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পরই আরব আলীর জীবনে নেমে আসে ঘোর অমানিশা ।

দীর্ঘসময় ধরে দাঁড়িয়ে থেকে লন্ড্রীর কাজ করার সে তার পায়ে ব্যথা অনুভব করত কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা না করতে পারায় বর্তমানে তা হাড্ডি ক্ষয় হয়ে ‘জয়েন্ট সেল টিউমার ‘ নামক রোগে পরিণত হয়েছে ।

জীবনযুদ্ধে লড়তে থাকা আরব আলী এখন অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালের বেডে জয়েন্ট সেল টিউমারের সাথে লড়ছে। সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিডফোর্ড হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে (৮ম তলা, ইউনিট-১ এক্সট্রা বেড-০২) ভর্তি আছে এখন। ডাক্তাররা বলেছেন এখনই এর অপারেশন না করালে অচিরেই এটা ক্যান্সার এ পরিণত হতে পারে। তার অপারেশনের জন্য ৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন যা তার পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।

আসুন আমরা অদম্য মেধাবী এই ছেলেটির পাশে দাঁড়াই, তার স্বপ্নটাকে বাচিয়ে রাখতে সাহায্য করি, তার বাবা মায়ের মুখে হাসি ফুটাই। আমাদের সবার সহযোগিতা পেলে মেধাবী এই ছেলেটা সুস্থ হয়ে যাবে এবং দেশের সম্পদে পরিণত হবে।

সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ-
সরাসরি আরব আলীর সাথে যোগাযোগ করুন- 01785393395
বিকাশ- 01785393395 (আরব এর সাথে কথা বলে আরবের এই নাম্বারে বিকাশও করতে পারেন এটা ওর বিকাশ নাম্বার ।)

দাম্পত্যজীবনেও খোঁজা হচ্ছে ধর্ষণের গন্ধ, ভাঙনের পথে পারিবারিক বন্ধন

মাজেদুল ইসলাম


স্ত্রীর সম্মতি ছাড়া কোন স্বামী যদি যৌন সম্পর্ক স্হাপন করে, তাহলে সেটাকে বৈবাহিক ধর্ষণ অর্থাৎ ম্যারিটাল রেইপ হিসেবে গণ্য করে আইন সংশোধনে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠিয়েছেন -৭১ টিভির সিনিয়র নিউজরুম এডিটর ওয়াহিদা আফসানার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃজাহিদ চৌধুরী জনি।

পরিবারগুলোর মধ্যে ভাঙন সৃষ্টির জন্য এই এক আইনি নোটিশেই যথেষ্ট। না জানি, এটা পাশ হয়ে যায় কি না! স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যকার বৈধ যৌন মেলামেশাতেও যখন আপনারা ধর্ষণ খুজতেছেন; বাহ, নারীবাদী নামে নারীদের ভোগ্যপন্য করার মতো কুরুচিপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। নিজেরা তো পরিবার খেয়েছেন; বাঙালি পরিবারগুলোতে আপনাদের বিষ ঢুকিয়ে এখন এগুলো ভাঙতে চাচ্ছেন??

একজন বিবাহিত নারী ও পুরুষ হবে পরস্পরের বস্ত্রস্বরুপ।বস্ত্র যেমন যাবতীয় রোদ,বৃষ্টি, ঝড়,দৈন্যতা থেকে মানুষকে রক্ষা করে তেমনি একজন স্বামী তার স্ত্রীকে সর্বাবস্থায় রক্ষা করবে। সঠিক সময়ে বিয়ে না দিয়ে এমনিতেই পশুর মতো অবাধে মেলামেশা করতেছে বর্তমানের যুবসম্প্রদায়। আজকে পার্কগুলোতে কনডমের প্যাকেটের সমাহার,পতিতালয় গড়ে উঠেছে যত্রতত্র, অবৈধ বাচ্চা জন্ম দিয়ে ফেলে দিচ্ছে ডাস্টবিনে।

কিছু বুদ্ধিজীবী ধর্ষণকে ঠেকাতে পতিতালয় তৈরীর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করলেন।কতটা জ্ঞানহীন হলে মানুষ এমনটা বলতে পারে!নারীর অধিকারের কথা বলে যখন পতিতালয় সৃষ্টির কথা বলা হয়, তখন ব্যপারটা বড্ড হাস্যকর মনে হয়।ওইসব পতিতালয়ে কি ওইসব বুদ্ধিজীবির মা- বোন এসে পতিতাবৃত্তি পথ বেছে নিবে? এসব থেকে জাতির কিভাবে উত্তোরণ করা যায় তা নিয়ে মাথাব্যথা নাই,আসছে স্বামী – স্ত্রীর মধ্যকার যৌন মেলামেশায় ধর্ষণের মতো গর্হিত জিনিষ খুঁজতে।

একজন স্বামী ও স্ত্রী অবশ্যই তাদের ভালো থাকা নিয়ে আলোচনা করবে; আর কোন সময় যৌন মেলামেশা করা যাবে কি যাবে না এসব বিষয়ে তারাই অবগত থাকে।পিরিয়ড কালীন বা স্ত্রীর অসুস্থাবস্হায় কোন স্বামীই যৌন মেলামেশায় আগ্রহ দেখাবে না।।

যখন আমরা এসব একান্ত বিষয়ও আইনি নোটিশ করবো,তখন একজন স্বামী সর্বদা ভয়ে থাকবে, না জানি ধর্ষণ হচ্ছে কি না।তখন তাদের মধ্যকার ভলোবাসার মধ্যে ফাটল সৃষ্টি হবে।স্বাভাবিক বিষয়গুলোতে সংকোচবোধ কাজ করবে!!

একটা পুরুষ আজ একটা ভালো চাকরির জন্য বিয়ে করতে পারেনা।প্রায় ২৭-৩০ বছর পর্যন্ত একাকী থাকে যেখানে তার যৌন তাড়না আসে প্রায় ১৬-১৭ বছর বয়সে।আজকে পুরুষের সম্পত্তির সাথে নারীর সৌন্দর্যের বিয়ে হয়।

একজন যুবক- যুবতী কেন বিয়ে করে??সার্বক্ষণিক একজন বৈধ ও নিরাপদ শারীরিক, মানসিক, আত্মিক সঙ্গী পাওয়ার নিমিত্তে। যদি স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে এ রকম সন্দেহের বীজ ঢুকায় দেই তাহলে অনেকে আর কয়েকটা বছরের জন্য বিয়ে করার সাহস হারিয়ে ফেলবে।

সম্পত্তির বিনিময়ে কিন্তু এখন বিয়ে হচ্ছে।একজন ছেলে যখন সম্পদশালী হয়ে যাবে আর বিয়ে করলেও যদি ধর্ষনের মতো ন্যাক্কারজনক বিষয় জড়িত হয় বৈধ যৌন মেলামেশায় তাহলে বিয়ে করার কি দরকার?? পতিতালয় গিয়ে তাদের শারীরিক চাহিদা পূরণ করবে, কোন ঝামেলা নেই।আর সন্তান এখন অনেকভাবেই পাওয়া যায়।

সুতরাং স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যেকার যৌন সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক বিষয় না ঢুকিয়ে আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য বিবাহোত্তর সহনশীলতার শিক্ষা দিয়ে দাম্পত্যজিবন সুন্দর ও আনন্দময় করার ব্যবস্হা করা যেতে পারে।

মুসলিম উম্মাহর প্রাণের স্পন্দনকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র, সারাবিশ্বে তোলপাড়

মাজেদুল ইসলাম


ধর্মনিরপেক্ষতার মোড়কে ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব প্রকাশ করে মুসলিম উম্মাহর প্রাণের স্পন্দন মানবতার মুক্তির দিশারী বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করেছে ফ্রান্স সরকার।

এহেন কর্মকাণ্ডে সারাবিশ্বের মুসলিম উম্মাহ অনলাইন,অফলাইনে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।প্রায় ১৫০ কোটি মুসলিমের বিশ্বাসকে নিয়ে হলি খেলার মতো আস্পর্ধা দেখে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম।

ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো- মত প্রকাশের স্বাধীনতার অংশ হিসেবে মুসলিমদের হৃদয়ের স্পন্দন যার জন্য তাদের জীবন কুরবানি দিতে সেকেন্ডও দেরী করবেনা, তাকে নিয়ে এমন ব্যঙ্গচিত্র অংকন করে পুলিশি হেফাজতে দর্শনের সুযোগ দেওয়ার মতো ধৃষ্টতা দেখিয়ে ধর্মীয় সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে।

যেখানে ইসলাম ধর্মে কোন প্রাণীর চিত্র আঁকাই নিষিদ্ধ, সেখানে মুহম্মদ (সা.) কে নিয়ে এহেন কর্মকাণ্ড মুসলিম উম্মাহ কখনোই বরদাশত করবে না।

ফ্রান্স সরকারের এমন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদস্বরূপ সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ফ্রান্স পণ্য- দ্রব্যাদিকে বয়কটের ডাক দেন বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম।

এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার সহ ওআইসি(অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন) কে এসব বিষয়ে শক্ত জবাব দেওয়ার উদাত্ত আহ্বান করেন বাংলাদেশের মুসলিম আপামর জনতা।এছাড়াও প্রগতিশীল নামধারী ব্যক্তিরা যারা অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে গণমাধ্যমে প্রায়শয়, কিন্তু আজ মুসলিমদের প্রাণভোমরা, মানবজাতির মুক্তির দূত নবীজি মুহম্মদ (সা.) কে নিয়ে এমন হীন কর্মকাণ্ডে তাদের নিশ্চুপ থাকাকে ধিক্কার জ্ঞাপন করে।

গণরুমে কাটানো সময়গুলো নিঃসন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সেরা মুহূর্ত

হাঁটি হাঁটি পা পা করে স্কুল,কলেজ জীবন শেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন নিয়েই বড় হয় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা।আর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম বছর বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর থাকার জায়গা হয় ৩০-১০০ জনের সম্মিলিত গনরুম নামে প্রকাণ্ড এক রুমে।

গণরুমের এক একজন শিক্ষার্থী এক একটা চরিত্র। এখানে যেমন আতেল মার্কা শিক্ষার্থী দেখা যায় তেমনি সারারাত আড্ডাবাজি করে পরীক্ষার আগের রাত কোন রকম সীট পড়ে পাশ করা শিক্ষার্থীরও দেখা মেলে।এখান থেকেই উঠে আসে হাজারও ছাত্রনেতা, রাজনীতিবিদ, সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া কণ্ঠস্বর।

গণরুমেই দেখামিলে -সামান্য কথাতেই যেমন মারামারি তেমনি বন্ধুর সামান্য বিপদেও রাত জেগে শুশ্রূষা করা, একটা বিড়ি ১০-১২ জন মিলে শেয়ার করে খাওয়ার অভিনব দৃশ্য আবার রাত জেগে বেসুরা গলায় সমস্বরে গান বলতে।

গণরুমে কাটানো সোনালী সময় স্মৃতিচারণ করে শিক্ষার্থীদের ভাবনা জানাচ্ছেন- দ্য ক্যাম্পাস টুডে এর শেকৃবি প্রতিনিধি মাজেদুল ইসলাম

মনিকা আশরাফি
কৃষি অনুষদ-৭৭ ব্যাচ
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

স্কুল, কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে গ্রাজুয়েশনের জন্য জায়গা করে নিলাম শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমার থাকার জন্য জায়গা হলো বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল গনরুমে। গণরুম নামটা শুনেছিলাম অনেক আগেই।কিন্তু২০১৮ সালের ২ রা জানুয়ারিতে দেখা মিললো কাঙ্ক্ষিত সেই গণরুমের। প্রায় ৩৪ জন এক রুমে গাদাগাদি করে থাকার নামই নাকি গনরুম।

প্রথমে তো খুবই কান্না পাচ্ছিলো এতসব নতুন নতুন মুখ এবং গণরুমের হযবরল অবস্থা দেখে। গণরুমে শূন্যস্থান বলে কিছু ছিল নাহ।জামা-কাপড় রাখতে হত বেডের সঙ্গে রশি টানিয়ে। নষ্ট ফ্যান দিনের পর দিন ঠিক হত না!!গরমের দিনে পরিস্থিতি অসহ্য হয়ে উঠত।এছাড়া টয়লেট স্বল্পতা,ডাইনিংয়ের নিম্নমানের খাবার এবং জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়ার মত বিড়ম্বনা তো ছিলোই।বিশেষ করে পরীক্ষার সময় পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হত।শীতকালে গাদাগাদি করে থাকা গেলেও গরমের দিনে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠত।

তবে ভার্সিটি লাইফের সবথেকে আনন্দঘন ও সুন্দর মুহূর্ত কাটানোর একমাত্র জায়গা হল “গণরুম”। দীর্ঘ একবছরের ও বেশি সময় ধরে গণরুমে ছিলাম।গণরুমের কথা মনে পড়লেই অনেক স্মৃতিই চোখের সামনে ভেসে আসে। সবাই মিলে রাত জেগে গল্প করা,সকালের ক্লাসের জন্য সবাইকে জাগিয়ে তোলা,বাথরুমের জন্য লাইনে দাঁড়ানো,মাঝরাতে সবাই মিলে মুড়ি মাখা খাওয়া,দলবেঁধে ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি।সবথেকে মজার বিষয় ছিল কেউ রান্না করলে একা খেত না,সবাই মিলে ভাগ করে খেতাম। এখানে কে কাছের,কে দুরের কোনো ভেদাভেদ ছিল নাহ।

কেউ অসুস্থ হলে তার জন্য সবাই মিলে চিন্তিত হওয়া,সবমিলিয়ে অন্য একটা পরিবার খুঁজে পাওয়া। কারো মন খারাপের অপশন ছিল নাহ।কারো মন খারাপ থাকলে তাকে ঘিরে ধরে সবাই মিলে বুঝাতো এবং তাকে হাসানোর চেষ্টা করত। এক্সামের সময় সবাই মিলে একসাথে পড়তে হত,এতে কারো কোনো সমস্যা থাকলে তা সহজেই সমাধান হয়ে যেত।গণরুম আমাকে অনেক কিছুই দিয়েছে।”গণরুম” আসলেই একটা ভালোবাসা।এখন চার জন মিলে এক রুমে থাকি কিন্তু সেই গণরুমের কাটানো মুহূর্তগুলো বড্ড মিস করি।

মোঃসোহেল রানা
১৮-১৯ সেশন
লোকপ্রশাসন বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সবচেয়ে স্মরণীয় ও উপভোগ্য ছিলো গণরুমে থাকাকালীন সময়টা। মাথা গোঁজানোর জন্য একটু জায়গার মধ্যে গাদাগাদি করা,অসংখ্য গল্পে সব বন্ধুর হাসিতে ফেটে পড়া, রাত জেগে সোডিয়াম বাতির নিচে ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে আড্ডায় মেতে ওঠা, নির্ঘুম জেগে থাকা শহরের খুব কাছে ছিলাম প্রথম বর্ষে। গোসল হোক কিংবা ক্যান্টিনে যাওয়া, লম্বা লাইন পেরুতে হতো। আমরা নিশাচর ছিলাম। তখন আমরা সবাই বন্ধনহীন মুক্তজীবন উপভোগ করতাম। এখন আর সেসব করা হয়না। আমি এখন আর গণরুম বাসী নই, তাই।

হৃদয় কুমার শীল
কৃষি অনুষদ- ৭৭ ব্যাচ
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

গণরুম আমার কাছে কোন রুম বা থাকার ঘর না, এটা আমার কাছে ভালবাসার উদ্যান।বিশাল গণরুমের প্রতিটা প্রান্তে হাজারো চরিত্রের হাজারো অভিনয় লুকায়িত আবার কেউ কেউ নীরব দর্শক। যেখানে অসুখ ছিল কিন্তু সুখের অভাব ছিল না। যেখানে কারো কাউকে মন খারাপের সুযোগ নেই। ইচ্ছে হলেই মগ,বালতি হাতে নিয়ে জমতো গানের আসর,উরাধুরা নাচেই কেটে যেত প্রহর। ২ মিনিটের তাড়া দেওয়া গভীর রাতের শিক্ষকেরাই ছিল আমাদের অবুঝ শুরুর রক্ষক। গভীর রাতে মেয়েদের হলের সামনে জোরালো কণ্ঠের গানেই সান্ত্বনা খুঁজে পেত ব্যর্থ মন।

মাঝহারুল ইসলাম রিপন
ফিসারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদ
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

“গনরুম” শব্দটি আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যারা হলে থাকি, কমবেশি সবাই খুব কাছে থেকে উপলব্ধি করেছি। এটা শুধু একটা শব্দ নয়, আমাদের সাবেক গণ রুমবাসী কাছে এটা একটা আবেগ,ভালোবাসার নাম। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গণ রুমবাসী, গনরুম ছাড়ার পর বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবে। এই আসলে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার বেশীর ভাগই আসে গনরুম নামক এই খন্ডকালীন সময় থেকেই।

সকল পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়া, অনেকেই হয়তো এখান থেকেই শেখে।এক কথায় এটা ছিল ক্যাম্পাসের সবচেয়ে সোনালি সময়। কি নেই এখানে!!!!

বিভিন্ন এলাকার, বিভিন্ন মানসিকতার সমবয়সী বন্ধুরা মিলে একসাথে গাদাগাদি হয়ে থাকা। গভীর রাতে ইমিডিয়েট বড়ভাইদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা মোস্ট জুনিয়রদের সেই ঐতিহাসিক মিটিং, যেখান থেকেই আমি আমরা ক্যাম্পাসে সবার সাথে চলার শিষ্টাচার শিখি। বন্ধুর বিপদে একসাথে লড়াই করতে শিখি। মিটিং শেষে গণ রুমবাসী ভাইদের ভালোবাসার বিপরীতে দোকানে ভাইদের পকেট খালি করতে শিখি। গভীররাতে ক্যাম্পাসের ডাব গাছগুলোর কচি ডাব যেন গণ রুমবাসীর তৃষ্ণা নিবারণের একমাত্র পানীয়। ডাব পেরে খাইতে গিয়ে প্রক্টর স্যারের দৌড়ানি।

আমি নিজেই ডাব গাছে উঠতে পারি। একদিন গাছের উপরে থাকা অবস্থায় এক স্যার চলে আসে। যা হওয়ার তাই হলো!!! এভাবেই প্রায় ভোরের দিকে রাতের ডাব মিশন-আড্ডা শেষ করে হলে আসার সময়, মেয়েদের হলের সামনে সেই যে বেসুরা গলার গান!! সবাই যেন শিল্পী। বাবা-মার যে আদরের ছেলেটি রাত দশটা বাজলেই ঘুমোতে যেত, সেও যেন যুবক বয়সের প্রাণ ফিরে পায় এই গনরুমে এসে।

এখন রাত ৩ টা যেন তার কাছে কিছুই না। বন্ধুর বিপদে এই শান্ত ছেলেটিও বন্ধুকে বাঁচাতে রড হাতে দৌড় দিতে ভয় পায়না। সারারাত এভাবে কাটিয়ে মাত্র ২-৩ ঘণ্টা ঘুমানো, এরপর সকালে নাস্তা খেতে খেতে সকাল ৮ টার ক্লাসে দৌড় লাগানো। ঘুম পাগল বন্ধুকে লাথি দিয়ে ঘুম থেকে উঠানো,না উঠলে ভয়ংকর সকল শিক্ষকদের রক্তিম চক্ষু উপেক্ষা করে সেই ঘুম পাগল বন্ধুর জন্য এটেন্ডেন্স দিয়ে দেওয়া।

পরিবারের বাইরে এই গণ-রুমটিই যেন আমাদের দ্বিতীয় পরিবার। এর কোনো সদস্য অসুস্থ হইলে যেন পুরো রুমে এক অদ্ভুত অস্থিরতা নেমে যায়। বন্ধুকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়, চোখ টলটল করে সবার। জানিনা গনরুমের কোন বন্ধুর অসুস্থতায় কেন সবাই এমন অস্থির হয়ে ওঠে৷ কে হয় এরা আমার, কয়দিনেরই বা পরিচয়!!!

কোন ধরনের বন্ধু চান আপনি? এখানে যেমন আছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী বন্ধু, তেমনি আছে শলাকায় টান দিয়ে ধোঁয়া উড়ানো বন্ধু। যেমন আছে সারাক্ষণ বই নিয়ে পরে থাকা আঁতেল বন্ধু, তেমনি আছে পরীক্ষার আগের রাতে সীট ফটোকপি করা, সবার আগে ঘুমিয়ে পরে, সকাল বেলা মাত্র ২-৩ ঘণ্টা পড়ে পরীক্ষা দেওয়া বন্ধু।

পরীক্ষার আগের রাতে সবাই যেন জামায়াত করে রিডিং রুমে পড়তে যায়। হোক না সেটা তীব্র শীতের গভীর রাত বা প্রচণ্ড গরমের গাঁ ঘামানো রাত। নির্ঘুম সেই রাত কাটিয়ে পরীক্ষা শেষে সারাদিন যেন এক প্রশান্তির ঘুম আসে গনরুমে। আবার কেউবা প্রেম পাগল। তেমনি আছে মেয়েদের সাথে কথা বলতে ইতস্তত করা বন্ধু। সবাই যেন এই গনরুমে এসে এক নদীতে গাঁ ভাসায়।

শুধু মাত্র গণ-রুমেরই এই ক্ষমতাটা আছে এরকম বিভিন্ন ধরনের বন্ধুদের এক জায়গায় আনার। সবার মধ্যে এক অদ্ভুত অন্তরঙ্গতা চলে আসে এই গনরুমে।বড্ড মিস করি গণরুমের সোনালী দিনগুলো

মোঃ মেরাজ
সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয়ে সবে মাত্র চান্স পেয়েছি। গনরুম নিয়ে নানা কথা শুনে এক রকম ভয়, আতংক আর উদ্দীপনা কাজ করতে থাকে ভর্তির পর ক্লাস শুরু না হওয়া অব্দি। নিজেকে যাতে মানিয়ে নিতে পারি তাই বড় ভাইদের নিকট গিয়ে তাদের থেকে সাহস নিয়েছি, এক ভাই তো একদিন বলল গনরুম কে এক কথায় বললে তা হল “সার্ভাইভাল অফ দ্যা ফিটেস্ট”। তিনি বুঝাতে চেয়েছিলেন- এখানে কেউ ১ বছর অবস্থান করতে পারলে সে যে কোন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে কোন সমস্যা হবে না তার।

অনেক উৎকন্ঠা আর শঙ্কা একসাথে নিয়ে উঠে পড়লাম গনরুমে। সবই অপরিচিত মুখ কেউ কাউকে চেনে না। একটা বিষয় সবার মধ্যে কমন ছিল তা হল ইমিডিয়েট সিনিয়র ভাইদের নিয়ে শঙ্কা সবাই ইতিমধ্যেই আমার মত পরিচিত বড় ভাইদের থেকে অল্প বিস্তর তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া অঘটন গুলো শুনেছে আর ভাবছে হয়ত এগুলো আমাদের সাথেও হবে।

তাই আমরাও একটু নির্ভাবনায় ছিলাম। হঠাৎ একদিন রাত ১০ টার দিকে গনরুমের দরজায় লাথি আর অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করতে করতে ভিতরে ঢুকলও প্রায় ৩০/৩৫ জন, আমরা এই অপ্রস্তুত অবস্থায় ঘাবড়ে গেলাম গালাগালির মধ্যেই তাদের মধ্যে থেকে কেউ একজন বলে উঠল এই তোরা ৫ মিনিটের মধ্যে ফর্মাল হ। ফর্মাল বলতে প্যান্ট শার্ট পড়ে লাইন ধরে দাড়াতে হবে।

তাই করলাম কি আর করার। ওরা এবার এক এক করে নাম জিজ্ঞেস করতে থাকলো যারা শুধু নাম বলে চুপ ছিল তাদের সামনে নিয়ে এসে মুরগী বানিয়ে রাখলও আর যারা মুরগী হতে পারলো না তাদের জানালার গ্রিলের সাথে ঝুলিয়ে রাখলো এবার ওদের মধ্য থেকে একজন পরিচয় কিভাবে দিতে হবে তা শিখিয়ে দিল। বলল শুধু নাম জিজ্ঞেস করলেও ফুল পরিচয় টা বলতে হবে এটাই নাকি এখান কার ট্রাডিশন। পরে অসংখ্য বার নানা অজুহাতে এই কয়েকটি কথা কতশত বার তাদের শুনাতে হয়েছে একেক জনকে তার কোন হিসাব নেই।

কেউ হয়ত একটু পরিচয় দিতে গিয়ে হেসে ফেলেছে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি তো করবে সাথে নানা ঠুনকো অজুহাতে অনেকের গায়ে হাত পর্যন্ত তুলেছে এই তথাকথিত বড় ভাইয়েরা। তারা নাকি গনরুমে নবীনদের ম্যানার শেখায় এটা তাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। যখন যেখানে তাদের সাথে দেখা হবে সালাম দিতে হবে। কেউ যদি সালাম দিতে ভুলে যেত বা চিনতে না পারার কারনে এড়িয়ে যেত সেদিন গণরুমে তার উপর চলতো নানা ধরনের শারীরিক মানসিক নির্যাতন। বলতো এই তুই বড় ভাইকে গুনিশ না রাস্তায় সালাম দিস নাই কেন! তার সেই অপরাধে সকল কে লাফালাফি করতে হত। লাইট ফু দিয়ে নিভানোর মতো মজাদার দৃশ্য। তবে গনরুমের প্রথমদিকের দৃশ্যটা ভয়ংকর হলেও ধীরে ধীরে ভাইদের সাথে সখ্যতা তৈরি হয়।নির্ভরশীলতার আরেক নাম হলো ইমিডিয়েট সিনিয়র।

গনরুমে থাকাকালীন সবচেয়ে ভালো লাগতো তাবলীগের ভাইরা ইসলামিক দাওয়াত নিয়ে আসতো আর আমরা সম্মিলিতভাবে ভাইদের আলোচনা শুনতাম। বড্ড মিস করি মুহূর্তগুলো। এখন।বন্ধুদের সাথে রাত জেগে আড্ডা ও একাডেমিক বিভিন্ন টপিকস নিয়ে সম্মিলিত আলোচনার সূচনা এই গণরুম থেকেই। সবাই মিলে নীল ডাউন,মুরগী হওয়া,রেলগাড়ি হওয়া সহ এসব ঘটনা এখন মনে করলে হাসি পায়। মিস করি গনরুমে কাটানো মুহূর্তগুলো।

নুর ইসলাম মাহমুদ
কৃষি অনুষদ-৭৭ ব্যাচ
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

সময়টা ২০১৮ এর জানুয়ারির প্রথম দিকে, আরও ৫০ জন ছাত্র এর সাথে আমার আবাসন হইলো একটি বৃহৎ রুমে। সবাই ছিলো অপরিচিত, এক অদৃশ্য ভয় কাজ করছিল আমার মধ্যে। যা হোক সকলের সাথে পরিচিত হয়ে অনেক ভাল লাগছিলো আমার। প্রথম দিন গণরুমের পরিবেশে আমার যে অনেক বিরক্তিকর লেগেছিল সে কথা বলা বাহুল্য। তবে গণরুমের সময় গুলো যে জীবনের সবচেয়ে আনন্দপূর্ণ সময় ছিল সেকথা নিশ্চিত হবে বলা যায়।

সকলের সাথে সবকিছু ভাগাভাগি করে নেওয়া এবং পরমতসহিষ্ণুতা শিক্ষার এক মহানশিক্ষালয় এই গণরুম।সারাদিন কর্মব্যস্ততা শেষে একজন ছাত্র এই মহান শিক্ষাসংবলিত বিনোদন কেন্দ্রে প্রবেশের সাথে সাথে তার সকল ক্লান্তি যেন অদৃশ্য হয়ে যায়। প্রতি দিন রাত ৩ টা অবধিজেগে তাস খেলা যেন এখানে এক অদ্ভুত রুটিনের মত,যদিও আমি আমার স্বভাববিরুদ্ধ আচরণ করে কখনো তাস খেলার সে আনন্দটুকু উপভোগ করতে পারিনি, তথাপি গণরুমে যে সময়গুলো কাটিয়েছিলাম তাহা আমার জীবনের স্মৃতিতে চিরকাল অমলিন হয়ে থাকবে।